হায়দরাবাদের বাসিন্দা জনৈক শিব কুমার সাইবার প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন গত এপ্রিল মাসে। তাঁর ১৮ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
হায়দরাবাদে কাজ করছে চিনা নেটওয়ার্ক। তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের অনুমান, লেবাননের হিজবুল্লা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট চিনা ‘বিনিয়োগকারীরা’। এরা অনলাইনে বিনিয়োগ এবং পার্ট টাইম চাকরি দেওয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তছরুপ করছিল বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। এই প্রতারণাচক্রের সঙ্গে যুক্তদের খোঁজে দেশ জুড়ে তল্লাশি চলছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জনকে। হায়দরাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মহম্মদ মুনাওয়ার, অরুল দাস, সমীর খান, শাহ সুমের প্রমুখদের পাকড়াও করা হয়েছে। এঁদের কারও বাড়ি মুম্বইয়ে, কারও বাড়ি হায়দরাবাদে।
তদন্তে নেমে হায়দরাবাদ পুলিশ জানতে পেরেছে, গত এক বছর ধরে দেশের হাজার হাজার মানুষকে প্রতারণা করছে ওই সংস্থা। দালালের মাধ্যমে অনলাইনে কাজের টোপ দেওয়া হত। গুগল রিভিউতে লেখালেখি, ইউটিউব ভিডিয়োয় লাইক দেওয়ার মতো ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে প্রচুর টাকা রোজগারের সন্ধান দেওয়া হত। এই ভাবে বছরভর ওই ব্যক্তিদের প্রতারণা হত। ওই অর্থ জোগান দেওয়া হত জঙ্গি সংগঠনে। হায়দরাবাদের পুলিশ কমিশনার সিভি আনন্দ বলেন, ‘‘হায়দরাবাদের বাসিন্দা জনৈক শিব কুমার সাইবার প্রতারণার অভিযোগ করেছিলেন গত এপ্রিল মাসে। তাঁর ১৮ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু করি আমরা। কোথায় কোথায় ওই টাকা লেনদেন হয়েছে, তার খোঁজ করতে গিয়ে অনেকগুলো ভুয়ো সংস্থার সন্ধান মেলে। ওই সংস্থাগুলির যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, কোনওটাতেই টাকা ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে প্রায় ৫৮৪ কোটি টাকা ঢোকে সেখানে।’’ এখান থেকেই প্রতারণাচক্রের সন্ধান পায় পুলিশ। এবং তার যোগসূত্র খুঁজতে গিয়ে ভিন্দেশের জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান মেলে।
তদন্তকারীরা জানান, ভুয়ো কোম্পানির নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কয়েক জন দালাল কাজ করতেন। তাঁদের ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়। এই ভাবে অন্তত ৩৩টি ভুয়ো কোম্পানির নামে ৬১টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া যায়। এক একটি অ্যাকাউন্টে প্রচুর টাকা রাখা হত। সেখান থেকে এর পর অন্যত্র সরানো হত। এই কাজ করত চিনা নেটওয়ার্ক। জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ওই নেটওয়ার্ক ভারতীয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা অনলাইনে লেনদেনে বদলে নিত। ক্রিপ্টো ওয়ালেটের মাধ্যমে ওই অর্থ চলে যেত হিজবুল্লা জঙ্গি সংগঠনের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনার আরও তদন্ত চলছে। বড় চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy