Advertisement
০৪ মে ২০২৪
TMC-BJP Conflicts

বিজেপি নেতাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে, আমারও! অভিষেক-মমতার ‘ঘেরাও’ ডাক নিয়ে থানায় শুভেন্দু

শুভেন্দু অধিকারী তাঁর লিখিত অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতার অংশ তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, এই বক্তৃতার পর থেকেই বিজেপি নেতারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

An image of Mamata Banerjee, Suvendu Adhikari and Abhishek Banerjee

(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ ০২:৫২
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় শনিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে ঘোষিত বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির বিরুদ্ধেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিরোধী দলনেতা। অভিযোগপত্রে শুভেন্দু দাবি করেছেন, তৃণমূলের ওই কর্মসূচিতে বিজেপি নেতাদের প্রাণ সংশয় হতে পারে। এমনকি, তাঁরও। অভিযোগপত্রের সঙ্গে তিনি মমতা এবং অভিষেকের বক্তৃতার নির্বাচিত অংশ তুলে ধরে ‘ঘৃণাভাষণ’-এর অভিযোগও তুলেছেন।

২১ জুলাইয়ের সমাবেশ থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে সরব হন। এর পর তিনি দিল্লি অভিযানের কথা ঘোষণা করেন। আগামী ২ অক্টোবর দিল্লি অভিযানের কর্মসূচি। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, আগামী ৫ অগস্ট বিজেপি নেতাদের বাড়ি গণঘেরাও করার কথা। ওই কর্মসূচির নকশাও মঞ্চ থেকে বাতলান অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখবেন! একদম গণঘেরাও! বাড়ির কেউ বয়স্ক থাকলে তাঁকে ছেড়ে দেবেন। আর কাউকে ঢুকতেও দেবেন না, বেরোতেও দেবেন না।’’ এর পরেই বক্তৃতা করতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা ওই কর্মসূচিতে বদলের কথা ঘোষণা করেন। কর্মীদের নির্দেশ দেন, বুথে নয়, প্রতি ব্লকে বিজেপি নেতাদের বাড়ি থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে এই কর্মসূচি পালন করতে হবে। তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে ‘উস্কানিমূলক’ দাবি করে অভিযোগপত্রে শুভেন্দু আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এতে হিংসা ছড়াতে পারে। তৈরি হতে পারে অশান্তির বাতাবরণ। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু তাঁর লিখিত অভিযোগে মমতা এবং অভিষেকের বক্তৃতার অংশ তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, এই বক্তৃতার পর থেকেই বিজেপি নেতারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। শুভেন্দুর আশঙ্কা, এই কর্মসূচিতে বিজেপির নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হতে পারেন। পুলিশের কাছে তিনি মমতা এবং অভিষেকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন।

ঘটনাচক্রে, সোমবার দ‌লীয় বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যেতে পারেন শুভেন্দু এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও শুভেন্দুর দেখা হতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।

এর আগে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করার কর্মসূচি ‘প্ররোচনামূলক’ দাবি করে থানায় অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা রাজর্ষি লাহিড়ি। এই কর্মসূচিকে ‘বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করে বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস এবং সিপিএমও। সুকান্ত জানান, এই ধরনের কর্মসূচি হলে মানবাধিকার এবং শিশু অধিকার লঙ্ঘিত হবে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তৃণমূল, মুখ্যমন্ত্রী দায়ী থাকবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও এই কর্মসূচি নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “বাড়ি ঘেরাওয়ের রাজনীতি শুরু হলে তৃণমূলও ছাড় পাবে না।” শুক্রবারই এই কর্মসূচির বিরোধিতা করেছিল সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, “বিরোধীদের বাড়ি ঘেরাও করা রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়।” এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাংলায় প্রথম মমতাই আমদানি করেছিলেন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। শনিবার মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে হিটলারের জার্মানির সঙ্গে তুলনা করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE