Advertisement
E-Paper

বালাকোটে ফের সক্রিয়তা, সীমান্তে অপেক্ষা করছে ৫০০ জঙ্গি, বললেন সেনাপ্রধান

২৬ ফেব্রুয়ারি পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। সেখানে অবস্থিত একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে তারা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৪:০০
বালাকোটে জঙ্গি সক্রিয়তা নিয়ে সতর্ক করলেন সেনাপ্রধান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

বালাকোটে জঙ্গি সক্রিয়তা নিয়ে সতর্ক করলেন সেনাপ্রধান। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি, জানালেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। তাঁর দাবি, কমপক্ষে ৫০০ জঙ্গি ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। রাওয়ত জানিয়েছেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বোমাবর্ষণ করে ওই জঙ্গি ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। কিন্তু সম্প্রতি ফের সেগুলিতে ফের তৎপরতা বেড়েছে।

বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে রবিবারই গোয়েন্দাদের একটি রিপোর্ট সামনে এসেছিল, যা নিয়ে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারিও দেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। তার পরই সোমবার সকালে চেন্নাইয়ে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিপিন রাওয়ত। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের মদতেই সম্প্রতি বালাকোটে ফের জঙ্গি সক্রিয়তা দেখা দিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, ভারতীয় বায়ুসেনা বালাকোটে যে সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ করেছিল, তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল সেখানে। সেইসময় কোনওরকমে প্রাণে বেঁচেছিল যারা, তাদেরই ফিরিয়ে আনা হয়েছে।’’

উৎসবের মরসুমে এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন অংশে প্রস্তুতি তুঙ্গে। তবে নিরাপত্তায় কোনও খামতি নেই বলে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, যে কোনও সময়, যে কোনও পরিস্থিতিতে হামলাকারীদের কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত ভারতীয় বাহিনী। তবে জঙ্গিদের রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এখনই তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি সেনাপ্রধান। তাঁর দাবি, নিরাপত্তা নিয়ে মুখ খুললে শত্রুপক্ষ সতর্ক হয়ে যাবে। তার চেয়ে কাজে করে দেখানো ভাল। তবে বালাকোটের পুনরাবৃত্তি না ঘটিয়ে, তার চেয়েও বড় কিছু করা যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সন্ত্রাসবাদ নিয়ে রবিবারই পাকিস্তানকে একহাত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমেরিকার হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেকে পাশে নিয়ে বলেন, ‘‘৯/১১ হোক ২৬/১১, ষড়যন্ত্রকারীরদের ঠিকানা কী? আসলে কারা সন্ত্রাসে মদত দেয়, তা গোটা বিশ্বই জানে।’’ আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় মুখোমুখি হতে চলেছেন মোদী ও ইমরান খান। সেখানেও সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানকে তুলোধনা করতে বধ্যপরিকর ভারত। ওই মঞ্চেই বক্তৃতা করার কথা ইমরানের। তা নিয়ে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। আর সেই পরিস্থিতিতেই বালাকোটে নতুন করে জঙ্গি সক্রিয়তার কথা জানালেন সেনাপ্রধান রাওয়ত।

এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা। তাতে ৪০ জওয়ান প্রাণ হারান। সেই হামলার জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে অভিযান চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। সেখানে অবস্থিত একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে তারা। তাতে জইশ-ই-মহম্মদের একাধিক নেতা, কমান্ডার, জিহাদি এবং নব্য জঙ্গি-সহ কয়েক’শ জনের মৃত্যু হয় বলে সেইসময় দাবি ওঠে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বা বায়ুসেনার তরফে নির্দিষ্ট করে কিছু না বলা হলেও, বালাকোট অভিযানে ২৫০-৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

এই ধরনের জঙ্গিঘাঁটি-ই গুঁড়িয়ে দিয়েছিল বায়ুসেনা। —ফাইল চিত্র।

আরও পড়ুন: বালাকোটে ফের জঙ্গি তৎপরতা, হুঁশিয়ারি রাজনাথের​

তখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্বাচিত না হলেও, শাহের এই মন্তব্য নিয়ে বিস্তর কাটাছেঁড়া শুরু হয়। হামলায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, শুধু কিছু গাছ উপড়েছে বলে পাল্টা দাবি করে পাকিস্তান এবং কিছু বিদেশি সংবাদমাধ্যম। তবে এ দিনও আগের দাবিতেই অনড় ছিলেন বিপিন রাওয়ত। বালাকোটে নিহত জঙ্গির সংখ্যা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও, সাফ জানিয়ে দেন, বায়ুসেনার অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বালাকোটে। সেইসময় যারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে এনেই নতুন করে নাশকতামূলক কাজে মদত দিচ্ছে পাকিস্তান।

আরও পড়ুন: আল কায়দা জঙ্গি ধৃত টাটানগরে​

এর আগে, চলতি মাসের শুরুতেও পাক জঙ্গি হামলার সতর্কবার্তা দিয়েছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে গুজরাত উপকূল হয়ে বহু পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গি ভারতে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সেইসময় জানানো হয়। সতর্কতা জারি হয় গুজরাত-সহ দক্ষিণের একাধিক রাজ্যে। আর তার পরেই বালাকোটে জঙ্গি সক্রিয়তার অভিযোগ তুললেন সেনাপ্রধান। এতে নতুন করে বিপাকে পড়তে পারে পাকিস্তান। কারণ সন্ত্রাস দমনে উপযুক্ত পদক্ষেপ না করায় ইতিমধ্যেই তাদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক আর্থিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)। অক্টোবরের মধ্যে সন্ত্রাস দমনের সমস্ত শর্ত পূরণ করতে না পারলে পাকাপাকি ভাবে ওই তালিকাতেই ঠাঁই হতে পারে তাদের। এর ফলে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের তালিকায় অবনমন ঘটতে পারে পাকিস্তানের। যার ফলে নেমে আসতে পারে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও।

Balakot Bipin Rawat Pakistan JeM Pulwama Attack Jammu And Kashmir BJP Amit Shah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy