E-Paper

তৃণমূলের কর্মসূচির জের, বুকিং-ই বন্ধ দুই বঙ্গ ভবনে

আগামী ১, ২ ও ৩ অক্টোবর রাজ্যের শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতাদের দিল্লিতে থাকার জন্য যে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে, তা সামলাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:২২
বঙ্গভবন।

বঙ্গভবন। ছবি: সংগৃহীত।

তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কর্মসূচির জন্য দিল্লির বঙ্গভবনে সাধারণের ‘বুকিং’ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৪ অক্টোবর, পাঁচ দিন অন্য কারও জন্য কোনও ‘বুকিং’ নেওয়া হবে না বলে সরকারি সূত্রের খবর। আগামী ১, ২ ও ৩ অক্টোবর রাজ্যের শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক ও নেতাদের দিল্লিতে থাকার জন্য যে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে, তা সামলাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা।

কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আদায়ে আগামী ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে বিশেষ কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। আগামী ২ তারিখ মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মদিনে রাজঘাটে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং পর দিন ৩ তারিখ আর্থিক দাবিতে যন্তর মন্তর থেকে কৃষি ভবন পর্যন্ত মিছিল করার কথা রয়েছে তৃণমূলের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দুই কর্মসূচিতেই থাকার কথা। সেই সঙ্গে দলের সব সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদেরও ওই কর্মসূচিতে থাকতে বলা হয়েছে। দিল্লিতে এক সঙ্গে রাজ্যের এত জনের যাওয়া ও থাকার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তার জেরেই রাজধানীর নতুন ও পুরনো দুই বঙ্গভবনেই থাকার বন্দোবস্ত নিয়ে চাপ তৈরি হয়েছে। এখন যে মন্ত্রী বা বিধায়কেরা নিজের মতো বঙ্গভবনে যোগাযোগ করছেন, তাঁদেরও তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তৃণমূল অবশ্য বঙ্গভবনে অন্যদের ‘বুকিং’ বন্ধের সিদ্ধান্তে ‘অস্বাভাবিক’ কিছু দেখছে না। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘রাজ্য থেকে যাঁরা যাবেন, তাঁরাই বঙ্গভবনে থাকতে পারেন। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি বলে সেই সুযোগ পাওয়া যাবে না, এমন তো হতে পারে না!’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের ৫০ লক্ষ মানুষের সই নিয়ে তাঁদের প্রাপ্য আদায়ে দল এই কর্মসূচি নিয়েছে। এখানে তৃণমূলের আলাদা কোনও লক্ষ্য নেই।’’ দলীয় কর্মসূচিতে থাকার কথা বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেন, ‘‘এটা দলের বিষয় নয়। রাজ্যের মানুষের দাবিকে সমর্থন করে ওই কর্মসূচিতে থাকব। তা ছাড়া, স্পিকার হওয়ার আগে আমি এক জন বিধায়ক।’’

আটকে থাকা ১০০ দিনের কাজের টাকা এবং আবাস যোজনার টাকার দাবিতে গত ২১ জুলাই দলীয় সভা থেকে ‘দিল্লি চলো’র কর্মসূচি ঘোষণা করেন অভিষেক। এবং পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনমত তৈরি করতে সেই দাবি নিয়েই রাজ্যব্যাপী প্রচার চালিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আটকে থাকা টাকার দাবিতে সাধারণ মানুষের সই সংগ্রহ করেছে তৃণমূল। এই গোটা প্রক্রিয়াকে লোকসভা ভোটের আগে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিতে দিল্লিতে এই কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। দলের ২১৭ জন বিধায়ক, ৩৫ জন সাংসদ ও পঞ্চায়েতের দুই স্তর মিলিয়ে প্রায় ৩০০ পদাধিকারীকে রাজধানীতে নিয়ে গিয়ে আর্থিক দাবিকে আগামী ভোটে দলের প্রধান অস্ত্র হিসেবে পেতে চাইছে তৃণমূল।

মমতা ও অভিষেক থাকবেন বলে দলের তরফে জানানোয় কর্মসূচিতে যেতে দলের অন্দরেও বাড়তি উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তাই কলকাতা ও একাধিক জেলা থেকে দলের অন্য স্তরের নেতা, পুর প্রতিনিধিরাও যেতে চাইছেন। সব মিলিয়ে থাকার ব্যবস্থার পাশাপাশি যাতায়াতের টিকিট নিয়েও টানাটানি পড়ে গিয়েছে। মন্ত্রী-বিধায়কদের একটা বড় অংশ বিমানের টিকিট কেটেছেন। অনেকে ট্রেনের টিকিটের চেষ্টা করছেন। কর্মসূচি ২ ও ৩ তারিখ হলেও দলের তরফে ১ তারিখ দুপুরের মধ্যেই সকলকে দিল্লি পৌঁছতে বলা হয়েছে।

দিল্লির এই কর্মসূচির পাশাপাশি ২ অক্টোবর রাজ্যেও প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে গান্ধীজি’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে বলা হয়েছে দলের তরফে। পর দিন সেখানে বড় পর্দায় দিল্লির কর্মসূচি সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Abhishek Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy