Advertisement
E-Paper

সঙ্ঘকে কাঁটামুক্ত করতে চাইছেন মোহন ভাগবত

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় আরএসএসেও পথের কাঁটা দূর করার কাজে নামলেন মোহন ভাগবত। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি যখন বিরোধী আসনে ছিল, সেই সময় দল ও সঙ্ঘের মধ্যে ছোট-বড় নানা আকারের বিদ্রোহ প্রায়শই মাথাচাড়া দিয়ে উঠত। এক বিজেপির মধ্যে যেমন হরেক বিজেপি ছিল, তেমনই আরএসএসের মধ্যেও অনেকগুলি আরএসএস ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৮

নরেন্দ্র মোদীর জমানায় আরএসএসেও পথের কাঁটা দূর করার কাজে নামলেন মোহন ভাগবত।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি যখন বিরোধী আসনে ছিল, সেই সময় দল ও সঙ্ঘের মধ্যে ছোট-বড় নানা আকারের বিদ্রোহ প্রায়শই মাথাচাড়া দিয়ে উঠত। এক বিজেপির মধ্যে যেমন হরেক বিজেপি ছিল, তেমনই আরএসএসের মধ্যেও অনেকগুলি আরএসএস ছিল। সবসময় তা প্রচারের আলোয় না আসলেও সঙ্ঘের মধ্যেও তীব্র মতবিরোধ ছিল। এখন নরেন্দ্র মোদীর জমানাতে বিজেপির অন্য সুরগুলি প্রকাশ্যে আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কারও অসন্তোষ থাকলেও প্রকাশ্যে আর বিদ্রোহ করেন না। এই পরিস্থিতিতে সঙ্ঘের মধ্যে কাঁটাগুলি দূর করে আরএসএসকে আরও সংগঠিত করার কাজে নেমেছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এই লক্ষ্যে প্রথম বড় পদক্ষেপ করা হয়েছে বিজেপি ও সঙ্ঘের যোগসূত্রকারী আরএসএস নেতা সুরেশ সোনিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে। সে জায়গায় আনা হয়েছে সঙ্ঘের আর এক নেতা কৃষ্ণগোপালকে। লখনউতে এখন সঙ্ঘের বৈঠক চলছে। সেখানে সঙ্ঘের সব শীর্ষ নেতাই উপস্থিত রয়েছেন। মোহন ভাগবত, সুরেশ সোনি, ভাইয়াজি জোশী, কৃষ্ণগোপাল, মনমোহন বৈদ্যের মতো নেতারা পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে। গতকাল উত্তরপ্রদেশের রাজভবনে রাজ্যপাল রাম নাইকের সঙ্গেও নৈশভোজ করেছেন ভাগবত। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও সঙ্ঘের বৈঠকে উপস্থিত হয়েছেন আজ। সঙ্ঘ সূত্রের মতে, এই বৈঠকে আগামী এক বছরের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। তেমনই সঙ্ঘের বিভিন্ন পদেও রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। সুরেশ সোনিকে সরানোর পর বিজেপিতে সঙ্ঘের প্রতিনিধি রামলালকে সরিয়ে শিব প্রকাশকেও সেই জায়গায় আনার প্রস্তাব রয়েছে।

সঙ্ঘের এক নেতা জানান, সুরেশ সোনিকে সরিয়ে আসলে সঙ্ঘে শুদ্ধিকরণের বার্তা দিতে চেয়েছেন মোহন ভাগবত। গত বছর নরেন্দ্র মোদীকে যখন প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী করা হয়, সেই সময় প্রতিবাদে দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। মোহন ভাগবত সেই ইস্তফা প্রত্যাহারের ব্যাপারে উদ্যোগী হন। তখন আডবাণীর পক্ষ থেকে যে দাবিগুলি পেশ করা হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল সুরেশ সোনির অপসারণ। সোনির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে তৎকালীন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ যে ভাবে দল চালাচ্ছিলেন, তাতে খুশি ছিলেন না আডবাণী। নরেন্দ্র মোদী-রাজনাথ সিংহ ও সুরেশ সোনির অক্ষের বিরুদ্ধেই মূল ক্ষোভ ছিল আডবাণীর। তার উপরে সোনির বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশে দুর্নীতির বড়সড় অভিযোগও উঠেছে।

তখন থেকেই সোনি ও তাঁর অনুগামীদের সরাতে চেয়েছিলেন ভাগবত। কিন্তু পারেননি। তবে সোনির ডানা ছেঁটে দিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় সোনির সঙ্গে ভাইয়াজি জোশী, কৃষ্ণগোপাল ও দত্তাত্রেয় হোসাবোলেকেও জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাগবত এখন জানেন, সঙ্ঘের সাহায্য ছাড়া একের পর এক রাজ্যে নির্বাচন জয়ও নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের পক্ষে সম্ভব নয়। লোকসভায় গোটা সঙ্ঘ শিবির ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এ বারে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনেও সঙ্ঘ সমান ভাবে সক্রিয় হয়েছে। সরকার ও দল পরিচালনার জন্য নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকে পূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছে সঙ্ঘ। আবার ভাগবতও আরএসএসকে আরও সংগঠিত করতে চাইছেন। তবে সেটি বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদের পথে গিয়ে নয়।

সোনিকে সরিয়ে যে কৃষ্ণগোপালকে দায়িত্বে আনা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে অমিত শাহের সম্পর্ক ভাল। লোকসভা নির্বাচনে তাঁরা একসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের ভোট পরিচালনা করেছেন। সঙ্ঘের এক নেতা জানাচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদীর লক্ষ্য দলের শক্তি বাড়ানো। তা আরএসএস জানে। বিজেপি ক্ষমতাশালী হলে গোটা দেশে আরএসএসের প্রভাব বাড়বে। সঙ্ঘ ও বিজেপিকে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে হবে। অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে যে ভাবে নিত্যদিন সঙ্ঘের সঙ্গে বিবাদ বাধত, মোদী কোনও ভাবেই সে পথে হাঁটতে চাইছেন না। বরং সঙ্ঘের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই ভারসাম্যের খেলাটি খেলতে চাইছেন।

mohan bhagwat RSS narendra modi obstruction free BJP government RSS chief national news online national news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy