Advertisement
E-Paper

আদিবাসী লাল দুর্গে গেরুয়া আঁচড়ের ছক

বিজেপি-র সাফ কথা, শহরাঞ্চলে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার মনোভাব কাজে লাগিয়ে এর আগে কংগ্রেস বা তৃণমূল চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেনি।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:২১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বধ যদি করতে হয় আকিলিসকে, তির বেঁধাতে হবে গোড়ালিতে। সেই গ্রিক পুরাণ থেকে চলে আসা শিক্ষার উল্টোটাই হচ্ছে ত্রিপুরায়!

যুদ্ধে নেমে প্রতিপক্ষের দুর্বল জায়গায় আঘাত করার যে চিরকালীন কৌশল, এখানে অন্তত তার উল্টো পথে আছে বিজেপি। টানা ২৫ বছরের বাম জমানার পরিবর্তন ঘটানোর লড়াইয়ে তারা বিশেষ নজর দিয়েছে উপজাতি এলাকায়। যে উপজাতি এলাকা সিপিএমের দুর্ভেদ্য ভোটব্যাঙ্ক! সংরক্ষিত ২০টি বিধানসভা আসনই বাম দখলে। স্বশাসিত জেলা পরিষদের(এডিসি)সর্বশেষ নির্বাচনেও সেখানে দাঁত ফোটাতে পারেনি অন্য কেউ। অথচ আসন্ন বিধানসভা ভোটে সেখানেই কামড় বসানোর চেষ্টায় আছে গেরুয়া শিবির।

বিজেপি-র সাফ কথা, শহরাঞ্চলে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার মনোভাব কাজে লাগিয়ে এর আগে কংগ্রেস বা তৃণমূল চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেনি। এখন কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চলে আসছেন বিজেপি-তে। সেই সঙ্গে যে উপজাতি এলাকায় অন্য বিরোধীরা ভোটের সময়ে প্রার্থী দেওয়া ছাড়া তেমন কোনও সক্রিয়তাই দেখায়নি, সেখানে চেষ্টা করে দেখা যাক বাম দুর্গে ফাটল ধরানো যায় কি না!

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেবের যুক্তি, ‘‘আমাদের লড়াই উন্নয়ন ও আর্থিক স্বাধীনতার জন্য। উত্তরপ্রদেশে তো দলিত-সহ সব ধরনের মানুষের সমর্থন বিজেপি পেয়েছে। এখানেও আদিবাসীরা এখন আমাদের দিকে আসছেন।’’ বিজেপি-র অভিযোগ, এডিসি-র আলাদা তহবিল থাকলেও গ্রাম পরিষদ (ভিলেজ কাউন্সিল) স্তরে টাকা খরচের কোনও অধিকার নেই। টাকা যায় বিডিও-র কাছে। অথচ অন্য এলাকায় গ্রাম পঞ্চায়েত সরাসরি প্রকল্পের টাকা পায়। গ্রাম পরিষদ স্তরে আর্থিক স্বাধীনতার দাবি এবং পরিষেবার করুণ হালের কথা প্রচার করেই আদিবাসী মন জয়ের চেষ্টায় নেমেছে বিজেপি।

ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকায় আরএসএসের কার্যকলাপ অবশ্য বহু দিনের। এখন সেই সক্রিয়তা আরও বাড়িয়েছে তারা। বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব পালন হচ্ছে ধুমধাম করে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সঙ্ঘের তৈরি করা জমি থেকে রাজনৈতিক ফসল তোলার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিজেপি।

শাসক সিপিএম অবশ্য বলছে, জনজাতির মধ্যে অন্তত ১৯টি গোষ্ঠী রয়েছে ত্রিপুরায়। তাদের মধ্যে বিভাজন ও রেষারেষির বীজ পুঁতে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। গত সেপ্টেম্বরে সিপিএমের গণমুক্তি পরিষদের ডাকে জমায়েতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে ১৯টা গাড়ি ভেঙে গণ্ডগোল পাকিয়েছিল বিজেপি-ই। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশের কথায়, ‘‘আদিবাসীদের মধ্যে আমাদের ভিত এক দিনে তৈরি হয়নি। বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে শান্তি এবং স্বশাসন পর্যন্ত অনেকটা পথ পেরোনো হয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি করে এটা শেষ করা যাবে না।’’ বিপ্লববাবুর আবার পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি-র দিকে ঝোঁকার প্রবণতা বাড়ছে বলেই একের পর এক জনজাতিভুক্ত মানুষ খুন হচ্ছেন বা আক্রান্ত হচ্ছেন।

লাল এবং গেরুয়া, দু’দিক থেকেই আপাতত বাড়তি মনোযোগের কেন্দ্রে আছেন আদিবাসীরা!

BJP Tripura Left
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy