কত হল?
দেখা হলেই বিজেপি নেতারা প্রশ্ন করছেন একে অন্যকে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের চার বছর। অমিত শাহের নির্দেশ, বিজেপির সব নেতাকে যেতে হবে ২৫ জন বিশিষ্ট জনের কাছে। তাঁদের হাতে তুলে দিতে হবে চার বছরে সরকারের সাফল্যের পুস্তিকা। সভাপতি হিসেবে অমিত শাহ নিজেও এই কাজ করছেন। কপিল দেব, মাধুরী দীক্ষিত, রতন টাটাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। গোটা কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সম্পর্ক ফর সমর্থন’।
কিন্তু বিজেপির অন্য নেতাদের যন্ত্রণা— নেতা বেশি, বিশিষ্ট জন কম। অনেকে আবার দেখা করতেই চাইছেন না। আবার দেখা করলেও কেউ কেউ মোদী সরকারের সমালোচনা করে বসছেন। যেমন ক’দিন আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজয় গোয়েল দেখা করতে গিয়েছিলেন জামা মসজিদের শাহি ইমামের সঙ্গে। তিনি সংখ্যালঘুদের প্রতি মোদী সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মন্ত্রীমশাইয়ের কাছে।
বিপত্তি এখানেই শেষ নয়। একই বিশিষ্টকে একাধিক নেতা ফোন করে বসছেন। ফোন করলেই শুনছেন, ইতিমধ্যেই অন্য নেতা আসার কথা জানিয়ে রেখেছেন। যেমন দিল্লিতে মুকুল রায় বলে গিয়েছিলেন, ‘‘কলকাতায় গিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করব।’’ আজ রাহুল সিংহ তাঁর সঙ্গে দেখা করে ফেলেছেন। একই ছবি দিল্লিতেও। নেতারা এখন বিশিষ্ট জনের তালিকা গোপন রাখছেন। কার কার সঙ্গে দেখা করার কথা ভেবে রেখেছেন, কাউকে বলছেন না। মাসের শেষে হিসেব নেবেন বলেছেন সভাপতি অমিত শাহ। দেখা হলেই বিজেপি নেতারা তাই একে অন্যকে জিজ্ঞেস করছেন— ‘‘কত হল?’’
অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য বললেন, এটাই তো চ্যালেঞ্জ! বিশিষ্ট জনের খামতি নেই দেশে। কিন্তু যাঁরা দেখা করতে কুণ্ঠিত বা যাঁরা মোদী সরকারের সমালোচনা করেন, তাঁদের কাছে পৌঁছে যাওয়াটাই লক্ষ্য। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তো কাউকে বিজেপিতে যোগ দিতে বলা হচ্ছে না। শুধু বিশিষ্ট জনের কাছে সরকারের সাফল্য মেলে ধরা হচ্ছে। তাঁদের যদি কোনও অসন্তোষ থাকে, সেটিও শোনা হচ্ছে। যাতে তাঁদের মতামত জেনে দলও ‘কোনও ভুল থাকলে’ ভোটের আগে তা শুধরে নিতে পারে।