ডিমা হাসাও জেলার একমাত্র আসন হাফলং। বড়াইল পাহাড়ের কোলে প্রাকৃতিক সুষমায় ভরপুর এই এলাকা। এই আসন সব সময়েই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বিজেপি এ পর্যন্ত একবারও এখানে জিততে পারেনি। স্বাধীনতার পর একবারই কংগ্রেস এখানে পরাজিত হয়। ১৯৯৬ সালে। সে বার জিতেছিল অটোনমাস স্টেট ডিমান্ড কমিটি (এএসডিসি)-র সমরজিৎ হাফলংবার।
কিন্তু ওই একবারই। গতবারও ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিধায়ক নির্বাচিত হন কংগ্রেসের গোবিন্দচন্দ্র লাংথাসা। বয়সের দরুন গোবিন্দবাবু এ বার নিজেই ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে পারিবারিক অধিকার ছাড়েননি। সে জায়গায় প্রার্থী হয়েছেন গোবিন্দবাবুরই ছেলে, নির্মল লাংথাসা। বিজেপি প্রার্থী করেছে অবসরপ্রাপ্ত আইএএস বীরভদ্র হাগজারকে। হিল স্টেট ডিমান্ড কমিটির (এইচএসডিসি) টিকিটে লড়ছেন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম অধিকর্তা মায়া সিংহ দাওলাগাপু। ইউডিএফের প্রার্থী নিকোল হাওলাই চাংসন।
নির্মলবাবু কাউকে খাটো করে দেখতে নারাজ। শুধু বিজেপি বা এইচএসডিসি নয়, ইউডিএফ-ও যে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাবে, তা মানছেন কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। এক সময় জেলার রাজনীতিতে শেষ কথা ছিলেন গোবিন্দ চন্দ্র লাংথাসা। ছ’বার তিনি বিধায়ক হন। তবে ১৯৯৬ সালে পুরো হিসেব পালটে দিয়েছিল এএসডিসি। অভিযোগ, পৃথক রাজ্যের স্লোগান তুলে সে বার সমরজিৎ হাফলংবার জিতলেও দাবিপূরণে সচেষ্ট হননি। ফলে ২০০১ সালের নির্বাচনে গোবিন্দবাবু ফের বিপুল ভোটে জয়ী হন।
এবারের পরিস্থিতি অন্য রকম। বিজেপি প্রার্থী বীরভদ্র হাগজার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী প্রয়াত জয়ভদ্র হাগজারের ছেলে। নিজে উচ্চশিক্ষিত। তার আবার একটা নেতিবাচক দিকও রয়েছে। প্রশাসনের উঁচুপদে থাকার দরুন সাধারণ পাহাড়ি মানুষদের সঙ্গে তাঁর একটা স্বাভাবিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। একথা অবশ্য মানতে নারাজ তাঁর দল। তাঁদের যুক্তি, হাগজার আচমকা সচিবালয় থেকে হাফলঙে ভোট লড়তে আসেননি। ছিলেন বন বিভাগের কমিশনার। ২০১১ সালে এমন চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে জনসংযোগ গড়ে তোলেন।
যে কথা বিজেপি নেতৃত্বের মুখে অনুচ্চারিত থেকে যায়, তা হল তিনি বিজেপির জন্য চাকরি ছাড়েননি। ছেড়েছিলেন রাজনীতির জন্যই। প্রথমে যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেসে। টিকিট পাওয়ার ইঙ্গিতে চাকরি ছাড়লেও কংগ্রেস গোবিন্দবাবুকেই ফের প্রার্থী করে। এর পরই গেরুয়াবাহিনীতে নাম লেখান হাগজার।
অন্য দিকে, পৃথক রাজ্যের দাবি ক’বছর থেকেই নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। এই ইস্যু সামনে রেখে প্রচারে ঝাঁপিয়েছেন মায়া সিংহ দাওলাগাপু। তাই হাফলং আসনে এ বার ত্রিমুখী শক্ত লড়াইয়ের মুখে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy