গত লোকসভা ভোটে প্রস্তুতির সূত্র মেনেই আসন্ন লোকসভা ভোটে জয় নিশ্চিত করতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
২০১৯ সালের লোকসভায় দেশের প্রায় ১৪৪টি আসনে অল্পের জন্য দ্বিতীয় হয়েছিল বিজেপি। সেই আসনগুলিতে কী ভাবে জেতা যায় তা নিশ্চিত করতে গত কাল দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন অমিত শাহ ও জেপি নড্ডারা। বৈঠকে ওই আসনগুলিতে জেতার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপানোর উপরে জোর দেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, ২০১৪ সালের লোকসভার পরে একই ধরনের অনুশীলন করেছিল দল। ২০১৪ সালে ১১৪টি আসনে অল্পের জন্য দ্বিতীয় হন বিজেপি প্রার্থীরা। সেই আসনগুলি ২০১৯ সালে জেতার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি নেয় দল। ২০১৯ সালের ভোটে ওই ১১৪টি আসনের ৭০ শতাংশ জিতেছিল তারা। সেই সমীকরণ ফের প্রয়োগের পথে দল। পরিকল্পনা হল, আগামী বছরের শুরু থেকেই ওই আসনগুলিতে প্রচারের ঝড় তোলা।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের আট বছরের শাসনে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া কম-বেশি সব রাজ্যেই। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার উদ্যোগী হয়েছেন বিরোধী শিবিরকে একজোট করতে। তা ছাড়া বিহারে নীতীশ জোট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ায় দল যে গত লোকসভার মতো ভাল ফল করতে পারবে না, তা নিয়ে অনেকাংশেই নিশ্চিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গে গত বার আশাতীত ভাল ফল করেছিল বিজেপি। এ বার তার এক-চতুর্থাংশ আসন জেতা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজ্য বিজেপিতেই। সেই কারণে হারা আসনগুলিতে জনভিত্তি মজবুত করার লক্ষ্য নিয়েছে দল।
বিজেপি সূত্রের দাবি, পাঁচ রাজ্যে ওই হারা আসনগুলির পরিস্থিতি বুঝতে তিন মাস আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের প্রাথমিক রিপোর্ট নিয়ে নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলির বর্তমান পরিস্থিতি কেমন, তা জানতে বুথ পর্যায় থেকে রিপোর্ট চাওয়া হবে। বুথ কর্মীরা তাদের বুথের শক্তি, দুর্বলতা, জেতার সম্ভাবনা কতটা রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবেন ওই কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়কের কাছে। যদি বিজেপি বিধায়ক না থাকেন, সে ক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ওই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
রাজ্য নেতৃত্ব এর পর প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের শক্তি-দুর্বলতা বিচার করে, সংশ্লিষ্ট লোকসভা কেন্দ্রের জনসংখ্যার জাতিবিন্যাস, ভোটারদের ধর্মীয় পরিচয়, আর্থিক পরিস্থিতি, ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, ভোটারেরা কোন দলের মূলত সমর্থক এবং ভোট পেতে কী কৌশল নেওয়া উচিত, তা নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে। তিনি সুপারিশ-সহ চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। যার ভিত্তিতে প্রতিটি আসনের জন্য পরিকল্পনা করবে দল। উৎসবের মরসুম শেষ হওয়ার পরেই গোটা প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়ার পক্ষপাতী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এ বছরের শেষের মধ্যে ১৪৪টি আসনের চূড়ান্ত রিপোর্ট যাতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে যায়, আপাতত সেই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে দল।