Advertisement
E-Paper

কফিন নয়, কার্ডবোর্ডের বাক্সে মৃত সেনাদের দেহ, ত্রুটি মানল বাহিনী

কপ্টার দুর্ঘটনায় বায়ুসেনা ও সেনার যে কর্মীদের মৃত্যু হয়েছিল, তাঁদের দেহ রাখা হল কার্ডবোর্ডের বাক্সে। কফিন মেলেনি। তা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে সেনা কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৭ ১৭:০০
কার্ডবোর্ডে মোড়া মৃতদেহ। এই ছবি টুইট করেই অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা। ছবি: টুইটার।

কার্ডবোর্ডে মোড়া মৃতদেহ। এই ছবি টুইট করেই অসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা। ছবি: টুইটার।

তাওয়াং-এ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সেনা ও বায়ুসেনার মোট সাত কর্মীর মৃত্যুর তিন দিন পর মাথাচাড়া দিল নতুন বিতর্ক। অভিযোগ, মৃত সেনাকর্মীদের উপযুক্ত সম্মান দেখাতে পারেনি বাহিনী। বডিব্যাগ এবং কফিনের বদলে কার্ডবোর্ডের বাক্সে ভরে সৈনিকদের দেহ পাঠানো হয়েছে। টুইটারে সেই ছবি প্রকাশ করেছেন অবসরপ্রাপ্ত এক লেফটেন্যান্ট জেনারেল। তার পরেই প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছে সেনা ও বায়ুসেনা কর্তৃপক্ষের। প্রতিবাদ শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সেনার তরফে অবশ্য সাফাই দেওয়ার চেষ্টা হয়নি। কার্ডবোর্ডের বাক্সে করে দেহ নিয়ে যাওয়া একটি ‘বিচ্যূতি’ বলে সেনার এক মুখপাত্র টুইটারে জানিয়েছেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এইচ এস পনাগ কার্ডবোর্ডের বাক্সে মৃতদেহ রাখার ছবি সম্বলিত টুইটটি করেছেন। ভারতীয় সেনার নর্দার্ন কম্যান্ডের প্রধান ছিলেন পনাগ। রবিবার তিনি টুইটটি করেন। তিনি লেখেন, ‘‘সাত তরুণ গতকাল রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশে বেরিয়েছিলেন মাতৃভূমি ভারতের সেবায়। এই ভাবে তাঁরা ঘরে ফিরেছেন।’’ টুইটে অসন্তোষের ছাপ ছিল স্পষ্ট। ফলে সেনা কর্তৃপক্ষের সমালোচনা শুরু হয় বিভিন্ন শিবির থেকে।

আরও পড়ুন: চিনা সেনাকে পড়া ধরার ঢঙে আলাপ জমালেন নির্মলা, দেখুন ভিডিও

বাহিনীর তরফে এই বিতর্ককে অবজ্ঞা করা হয়নি। সেনার অতিরিক্ত মহানির্দেশক-জনসংযোগ-এর তরফে টুইট করা হয়। সেখানে বলা হয়, ‘‘শহিদ সৈনিকদের সর্বদাই পূর্ণ সামরিক মর্যাদা দেওয়া হয়। মৃতদেহ বহনের জন্য বডিব্যাগ, কাঠের বাক্স এবং কফিনের বন্দোবস্ত নিশ্চিত করা হবে।’’ কার্ডবোর্ডের বাক্সে দেহ রাখার যে ঘটনা ঘটেছে, তা একটি ‘বিচ্যূতি’ বলেও সেনার তরফে জানানো হয়।

সেনাবাহিনীর ফোর কোরের তরফে অবশ্য বলা হয়, দুর্ঘটনাস্থল অত্যন্ত দুর্গম। সেখানে চার ঘণ্টা হেঁটে পৌঁছাতে হয়। যৎসামান্য উপকরণের সাহায্যে চালাতে হয় উদ্ধারকাজ। পাহাড়ের খাঁজে, জঙ্গলে হেলিকপ্টার নামানোও সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে দেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে কফিন নিয়ে পৌঁছানো অসম্ভব ব্যাপার। এ বছর মে মাসে অরুণাচলেরই পশ্চিম কামেং জেলায় ভেঙে পড়েছিল সুখোই-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমান। জুলাইতে সাগালির কাছে ভেঙে পড়েছিল ধ্রুব হেলিকপ্টার। দুটি ক্ষেত্রেই পাহাড়-জঙ্গলের মধ্যে বিস্তর তল্লাশি চালানোর পরে ধ্বংসাবশেষ ও দগ্ধ দেহগুলি মিলেছিল। সেনার বক্তব্য, সব ক্ষেত্রেই প্রথম লক্ষ্য থাকে দেহগুলি দ্রুত উদ্ধার করা। দুর্ঘটনাস্থল এমনই দুর্গম হয়, সেখানে কফিন নেওয়া যায় না। হাতের কাছে থাকা হালকা ও সহজলভ্য আচ্ছাদন দিয়েই দেহগুলি মুড়িয়ে নিয়ে যেতে হয়। দেহ নিয়ে সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছনোর পরে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় তা কফিনে রেখে হেলিকপ্টারে বা বিমানে তোলা হয়। এই অঞ্চল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা থাকা সকলেই এই পদ্ধতি জানেন বলে বাহিনীর একাংশের দাবি। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ বিবৃতি দিয়ে জানান, গুয়াহাটি সেনা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ময়না তদন্তের পরে পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় দেহগুলি বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: উত্তরের তীব্র হুঙ্কারের মাঝেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়ায় ভারত

শুক্রবার অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং এলাকায় ভেঙে পড়েছিল এমআই-১৭ ভি৫ কপ্টার। দুর্ঘটনায় বায়ুসেনার পাঁচ জন এবং সেনার দুই কর্মীর মৃত্যু হয়।

Tawang Arunachal Pradesh Indian Army Indian Air Force Coffins
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy