উত্তরপ্রদেশের কানপুর দেহাত মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে এক রোগীর মৃত্যুকে ঘিরে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যুর পর হাসপাতালের ওয়ার্ডেই অন্য রোগীদের মাঝে ১১ ঘণ্টা ধরে পড়ে রইল সেই দেহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই ভূমিকা অন্য রোগীর আত্মীয়েরা প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দেখান। খবরটি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পৌঁছোতেই তদন্তে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত রোগীর নাম সুন্দর। কয়েক জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি বছর পঁচিশের ওই যুবককে হাসপাতালের ভর্তি করান। ওই যুবক প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় ছিল। অনবরত বমি করছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। কানপুর হ্যালেট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই যুবককে যাঁরা ভর্তি করিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের কোনও খবর পাওয়া বা ঠিকানা পাওয়া যায়নি। যুবকের কোনও আত্মীয়ও তাঁর সঙ্গে ছিল না। হাসপাতালের কর্মীরা তখন পুলিশে খবর দেন। হাসপাতাল থেকে অনুরোধ করা হয় পুলিশের সহযোগিতায় ওই যুবককে কানপুর হ্যালেট হাসপাতালে যেন নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
কিন্তু পুলিশের তরফে কেউ আসেননি বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কয়েক ঘণ্টা এই ভাবেই কেটে যায়। সুন্দরের অবস্থা আরও অবনতি হতে শুরু করে। তার পরই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, যুবকের মৃত্যুর পর হাসপাতালের কর্মীরা তাঁর দেহ ওয়ার্ডেই অন্য রোগীদের মাঝে ফেলে রাখেন। রাতভর সেই দেহ পড়ে থাকে। দেহ থেকে গন্ধ ছাড়তে শুরু করে। তার পরেও সেই দেহ সরানো হয়নি বলে অভিযোগ। ১১ ঘণ্টা দেহ পড়ে থাকার পর হুলস্থুল পড়ে যায় হাসপাতালে। তার পরই দেহ সরানো হয়।
কানপুর দেহাতের জেলাশাসক এই ঘটনার কথা জানতে পেরেই হাসপাতালে যান। গোটা বিষয়টি শোনার পর তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। কেন এই ঘটনা ঘটল, কেন মৃত্যুর পরেও দেহ সরানো হল না, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন জেলাশাসক। মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল সজ্জনলাল বর্মা জানিয়েছেন, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তার অন্তর্তদন্ত হবে। মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক একে সিংহ এই ঘটনার নিন্দা করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।