একটি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন। তাতে মুখ্য অতিথি এক লেখিকা। তাঁর হাত ধরেই অনুষ্ঠানের সূচনা হবে বলে ঘোষণা করেছে কর্নাটক সরকার। সেই নিয়ে কার্যত হুলস্থুল বেধেছে কংগ্রেসশাসিত রাজ্যে। কংগ্রেসকে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে দেগে প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। পাল্টা বিজেপিকে ‘সঙ্কীর্ণ’ দল বলে আক্রমণ শানাচ্ছে কংগ্রেস।
কর্নাটক সরকারের আমন্ত্রণে মাইসুরুতে দশেরা উৎসবের সূচনা করবেন বুকার পুরস্কার বিজয়ী লেখক বানু মুশতাক। সেই নিয়ে কন্নড়ভূমিতে তরজা চলছে। শুরু হয়েছে কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডি শিবকুমার বনাম কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভা করন্দলাজের বাগ্যুদ্ধ। লেখক তথা সমাজকর্মী বানুকে দশেরা উৎসবের আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই তাঁর পাশে দাঁড়ান শিবকুমার। তিনি জানান, হিন্দুদের ধর্মস্থানে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিরা আসতে পারেন। হিন্দুরাও মসজিদ, গির্জায় যেতে পারেন। যার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভার দাবি, জেনেবুঝে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন শিবকুমার ও তাঁর দল।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মন্দির কোনও ধর্মনিরপেক্ষ জায়গা নয়।’’ বুধবার সমাজমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাতে লেখা, ‘‘যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা প্রচার করে চলেছেন, তাঁদের বুঝতে হবে মন্দির ‘ধর্মনিরপেক্ষ স্থান’ নয়। সেগুলো পবিত্র প্রতিষ্ঠান এবং ন্যায়সঙ্গত ভাবে হিন্দুদের সম্পত্তি।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির অভিযোগ, বানুকে আমন্ত্রণ করে হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত করার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। পাল্টা শিবকুমার জানিয়েছেন, লেখিকা এবং সমাজকর্মী বানুকে আমন্ত্রণ জানানো সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ আমরা বানুকে আমন্ত্রণ করেছিলাম। দশেরা সমাজের সকলের উৎসব। চামুণ্ডী পাহাড় এবং দেবী চামুণ্ডেশ্বরী সকলের, তিনি কেবল হিন্দুদের সম্পত্তি নয়।’’ তার আবার পাল্টা বিজেপি বলছে, দশেরা শুধুমাত্র হিন্দুদের উৎসব, সকলের নয়।
উল্লেখ্য, ছোট গল্প সংকলনের জন্য চলতি বছরেই আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পান বানু। তাঁর লেখা ‘হার্ট ল্যাম্প’ অনুদিত হয়েছে বেশ কয়েকটি ভাষায়। তবে তিনি শুধু লেখকই নন, কৃষক সংগঠন, কন্নড় আন্দোলন এবং অন্যান্য প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। একদা সাংবাদিকতা করেছেন বানু। ‘লঙ্কেশ ’পত্রিকায় কাজ করেছেন দীর্ঘ দিন। তাঁকে দশেরায় আমন্ত্রণ করা নিয়ে বিজেপির জোরালো আক্রমণের মধ্যেও কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও ভুল করেননি।