রোদচশমা পরে জিষ্ণুর সেই পোস্টার। (ডান দিকে) জিষ্ণু।
পাড়া-প্রতিবেশী থেকে আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব, এমনকি নিজের পরিবার— সকলেই তাকে উপহাস করে বলতেন, ‘তোর দ্বারা কিস্যু হবে না! বোর্ডের পরীক্ষা তো দূর অস্ত! পাশ করতে পারবি না!’ এই অপমানই যেন একটু একটু করে জিষ্ণুর জেদকে বাড়িয়ে দিয়েছিল। অভিনব কায়দায় সেই অপমানেরই ‘বদলা’ নিল সে।
দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় সবাই যখন ভাল ফল করে আনন্দে মেতেছে তখন জিষ্ণুও পিছিয়ে ছিল না। যাঁরা তাঁকে ‘পরীক্ষায় ফেল করবি’ বলে এত দিন ধরে কটাক্ষ করে এসেছে, বোর্ডের পরীক্ষায় পাশ করে সেই সব নিন্দকের মুখে সপাটে জবাব দিতে পেরে যারপরনাই খুশি সে। শুধু জবাব দেওয়াই নয়, নিজের কৃতিত্ব জাহির করতে জিষ্ণু আরও এক ধাপ এগিয়ে যে কাজ করেছে, তা দেখে এলাকাবাসী স্তম্ভিত।
জিষ্ণু নিজের ছবি দিয়ে ফ্লেক্স তৈরি করে এলাকায় রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে টাঙিয়ে দিয়েছিল। রোদচশমা পরে, একটু কেত মেরে বসে ছবিটা তুলেছে সে। আর সেই ছবির নীচে সে ক্যাপশন দিয়েছে, ‘কিছু মানুষ ইতিহাস সৃষ্টি করে। আমিও করেছি। ২০২২-এর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনের জন্য নিজেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এখান থেকেই কাহিনির শুরু। কুঞ্জাক্কু ভার্সন ৩.০।’
জিষ্ণুর এই অভিনব কায়দা চোখ এড়ায়নি কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবানকুট্টির। তিনি বলেন, ‘‘কুঞ্জাক্কু নিজেই বলেছে যে, কিছু মানুষ ইতিহাস সৃষ্টি করে। আমি চাই এই ছেলেটিও ইতিহাস সৃষ্টি করুক। ও আরও সফল হোক।’’
সংবাদ সংস্থা মনোরমার প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিষ্ণুদের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। বাবা-মা দিনমজুরের কাজ করেন। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জিষ্ণু এবং তার বোন কুপির আলোতে পড়াশোনা করেন। জিষ্ণুর কথায়, ‘‘সবাই যখন বলত তুই পাশ করতে পারবি না, কথাগুলি খুব আঘাত করত। আমি চেয়েছিলাম পাশ করে সেই সব মানুষের মুখ বন্ধ করে দেব। তাঁদের উচিত জবাব দেব। আর সেটাই করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy