Advertisement
E-Paper

তোলপাড় রাজধানী, ‘চিফ’ কিন্তু মেজাজেই

‘চিফ’ খোশমেজাজেই রয়েছেন দেখে সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর এজলাসের পরিবেশও মুহূর্তে হালকা।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২২
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।

দিলীপ কুমারের ‘দেবদাস’ দেখে কোনও প্রেমিক মদের নেশায় ডুবে যাননি!

বলেই ঠোঁট চেপে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মুচকি হাসলেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।

‘চিফ’ খোশমেজাজেই রয়েছেন দেখে সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর এজলাসের পরিবেশও মুহূর্তে হালকা।

সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের কাজ শুরুর আগেই প্রধান বিচারপতিকে স্বস্তি দিয়ে তাঁকে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব খারিজ করেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। এর পর শুধু প্রধান বিচারপতিকে দেখতেই ভিড় জমেছিল এজলাসে।

ঘড়ির কাঁটা ১০টা ৩০ মিনিট ছাড়ালেও আদালত বসেনি। সব এজলাসেই বিচারপতিরা গরহাজির। যা সুপ্রিম কোর্টে একেবারেই অস্বাভাবিক। প্রায় ২০ মিনিট পরে এজলাসে ঢুকলেন প্রধান বিচারপতি। জানা গেল, বিচারপতিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন। এমনিতে কাজ শুরুর আগে এক বার বিচারপতিরা একসঙ্গে বসেন। কিন্তু তার মেয়াদ কয়েক মিনিট। আজ সেটাই ২০ মিনিটে গড়ায়। আলোচনার বিষয় কেউই জানাননি। কিন্তু সেখানে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠেনি, এমনটা কেউ বিশ্বাস করছেন না।

প্রধান বিচারপতির আরও কয়েক মিনিট পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রবীণতম বিচারপতি জে চেলমেশ্বর ও রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চেও কাজ শুরু হল। আইনজীবীরা যেন নিশ্চিন্ত হলেন। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’-এ এই দু’জনই মূলত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি জে চেলামেশ্বর এ-ও বলেছিলেন, ‘‘ইমপিচমেন্ট সব কিছুর উত্তর হতে পারে না।’’ রাজ্যসভার সচিবালয় সূত্রের খবর, বেঙ্কাইয়ার সিদ্ধান্তে বিচারপতি চেলমেশ্বরের ওই মন্তব্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।

প্রধান বিচারপতি অবশ্য ছিলেন নিজের মেজাজেই। স্বামী অগ্নিবেশ ‘পদ্মাবত’ ছবি থেকে জহরব্রতর দৃশ্য বাদ দেওয়ার আর্জি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। যুক্তি ছিল, এতে সতীদাহ প্রথাকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘মনে হয় না কেউ সিনেমা দেখে সতীদাহের পথে হাঁটবে। মহিলাদের ক্ষমতায়ন হয়েছে। সকলেই বাঁচতে চায়। দিলীপ কুমারের ‘দেবদাস’ দেখে কোনও প্রেমিক মদের নেশায় ডুবে যাননি।’’

সে সময় মুখ দেখে বোঝা যায়নি, গত ৭২ ঘন্টায় তাঁকে নিয়ে দিল্লির রাজনীতি উত্তাল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকায় প্রথমেই ছিল, উত্তরপ্রদেশের মেডিক্যাল কলেজের দুর্নীতির মামলায় তাঁর ভূমিকা। যে দুর্নীতিতে প্রধান বিচারপতি নিজে জড়িত কিনা, সেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। প্রধান বিচারপতির ইমপিচমেন্টের দাবিতেও রোজ জোরালো সওয়াল করছেন তিনি। সেই প্রশান্ত ভূষণও আজ প্রধান বিচারপতির সামনে একটি মামলায় সওয়াল করেছেন। ভাবলেশহীন মুখে তাঁর যুক্তি শুনেছেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।

ইমপিচমেন্ট নিয়ে সংবাদমাধ্যমে আলোচনার ফলে আদালতের গরিমা নষ্ট হচ্ছে বলে গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ জমা পড়েছিল। আজ আর একটি মামলায় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আদালতের কখনও সংবাদমাধ্যমের মুখ বন্ধ করা উচিত নয়।’’

CJI Dipak Mishra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy