Advertisement
E-Paper

খুঁজতে হবে নতুন ‘দরজা’, চিন্তায় দিল্লি

নর্থ ব্লকের অর্থ মন্ত্রকের সব সচিবের ঘরেই বৃহস্পতিবার একই ছবি। টিভির পর্দায় শুধুই ‘ব্রেক্সিট’।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৯:৪৯

নর্থ ব্লকের অর্থ মন্ত্রকের সব সচিবের ঘরেই বৃহস্পতিবার একই ছবি। টিভির পর্দায় শুধুই ‘ব্রেক্সিট’।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেন আর থাকবে, না বেরিয়ে যাবে, তা নিয়ে ভোটাভুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। চিন্তা বেড়েছে অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদেরও। শেয়ার বাজারের স্নায়ুর চাপ কমাতে সাতসকালেই অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস ট্যুইট করেন, ‘‘ব্রেক্সিট ঘটলেও আমরা তৈরি। ব্রিটেনের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। ভারত ভালভাবেই তৈরি রয়েছে।’’ শুধু টুইট নয়, শেয়ার বাজারের ওঠানামা যাতে বিপদসীমার বাইরে না

চলে যায়, তা দেখার জন্যও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সেবিকে বার্তা পাঠানো হয়েছে।

তাতেও অবশ্য নিশ্চিন্ত থাকা যাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা প্রতি মুহূর্তে বাণিজ্য মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে শিল্পমহলের সঙ্গেও। বণিকসভার কর্তারাও মনে করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে গেলে এ দেশের শিল্পমহলে প্রবল অনিশ্চয়তা তৈরি হতে পারে। তার কারণ, ব্রিটেনে অন্য দেশ থেকে যে পরিমাণ লগ্নি হয়, তার হিসেবে ভারত তৃতীয় বৃহত্তম। ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যের পরিমাণও কিছু কম নয়। এমনিতেই গত ১৮ মাস ধরে ভারতের রফতানি পড়ছে। এর মধ্যে ব্রিটেনের অর্থনীতি ধাক্কা খেলে ফের রফতানি ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা।

অর্থসচিব অশোক লাভাসার মতে, বিশ্বায়নের যুগে এখন এক দেশে কিছু ঘটে অন্য দেশে তার ধাক্কা লাগবেই। যে সব ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা নেওয়া হচ্ছে। অপ্রয়োজনে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, প্রাথমিক সমীক্ষায় ব্রেক্সিট-এর বিরুদ্ধেই ভোট বেশি পড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। কিন্তু সমস্যা হল, ব্রেক্সিটের পক্ষে ও বিপক্ষের ভোটের ফারাক তেমন বেশি নয়। সেই অনিশ্চয়তার ফলেই বিশ্ব জুড়ে শেয়ার বাজারে ওঠানামা দেখা যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। ব্রিটিশ সংস্থাগুলো ভারতে বিপুল লগ্নি করলেও গত ক’বছরে লগ্নি খুবই কম। গত অর্থবর্ষে যার পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি ডলার। দেশে ৩৬ হাজার কোটি ডলারের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার রয়েছে। টাকার দামে পতন হলে তার মোকাবিলা করতে সমস্যা হবে না। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতিও ১.১ শতাংশে নেমে এসেছে।

ব্রিটেনে রফতানি নিয়ে অবশ্য চিন্তা রয়েছে। কারণ গত অর্থবর্ষে ভারত থেকে ব্রিটেনে ৮৮০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছিল। ব্রিটেন থেকে আমদানি করা পণ্যের মূল্য ছিল ৫২০ কোটি ডলার। সামগ্রিক ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতিও চিন্তার কারণ। ভারতের রফতানির ১৫ শতাংশই ওই দেশগুলোতে হয়। বণিকসভাগুলোর আশঙ্কা, ব্রিটেনে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে লগ্নিকারীরা সোনার মতো কম ঝুঁকিপূর্ণ লগ্নির দিকে ঝুঁকবেন। ফলে শেয়ার বাজারে ধাক্কা লাগতে পারে।

এ দেশের যে সব সংস্থা ব্রিটেনে লগ্নি করেছে, তাদের নিয়েও বণিকসভাগুলোতে আলোচনা চলছে। ব্রিটেনে লগ্নি করে গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবাধ ব্যবসার দিকে চোখ রেখেই এই সংস্থাগুলো লগ্নি করেছিল। এখন ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকেই বেরিয়ে এলে ওই সংস্থাগুলো নতুন নিয়মকানুন, বিধিনিষেধের মুখে পড়তে হবে। প্রয়োজনে অন্য কোথাও দফতর সরাতে হবে বা ব্রিটেনেই থাকলে হলে উৎপাদন কমাতে হতে পারে। এতদিন ব্রিটেনকেই ইউরোপের দরজা হিসেবে দেখছিল ভারত। এখন ফ্রান্স, জার্মানি বা নেদারল্যান্ডসের মতো নতুন কোনও দেশ খুঁজতে হবে।

brexit government
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy