Advertisement
E-Paper

সাত প্রতিবেশীকে ছাতার তলায় এনে মহাকাশে আরও প্রভাবশালী ভারত

এ বার মহাকাশ কূটনীতির পথে ভারত। ৭টি প্রতিবেশী দেশকে নিখরচায় কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বা যোগাযোগ উপগ্রহ উপহার দিচ্ছে নয়াদিল্লি। ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করে মহাকাশে ‘সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট’ পাঠাচ্ছে ভারত।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ১৬:০৮
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

এ বার মহাকাশ কূটনীতির পথে ভারত। ৭টি প্রতিবেশী দেশকে নিখরচায় কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বা যোগাযোগ উপগ্রহ উপহার দিচ্ছে নয়াদিল্লি। ৪৫০ কোটি টাকা খরচ করে মহাকাশে ‘সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট’ পাঠাচ্ছে ভারত। ৫ মে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র জিও-সিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল (জিএসএলভি-৯) অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে ‘সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট’কে নিয়ে উড়ে যাবে মহাকাশে। প্রতিবেশী দেশগুলিকে আগামী ১২ বছর নিখরচায় যোগাযোগ পরিষেবা দেবে এই উপগ্রহটি।

এই ধরনের কূটনীতি নয়াদিল্লির তরফে এই প্রথম। গোটা দক্ষিণ এশিয়াতেও এই ধরনের কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রথম। এক দেশ নিজেদের উপগ্রহ অন্য একটি দেশকে ব্যবহার করতে দিচ্ছে, এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু একটি দেশ সম্পূর্ণ নিজের খরচে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠাচ্ছে এবং তাকে পৃথিবীর একটি বৃহৎ অঞ্চলের জন্য উৎসর্গ করছে, এমনটা বিরল। ‘সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট’কে মহাকাশে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গেই তাই আরও একটি ইতিহাস গড়ে ফেলবে ভারত। এর আগে একই সঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহকে মহাকাশে পাঠিয়ে নজির গড়েছে ইসরো।

ফেব্রুয়ারিতে ১০৪টি উপগ্রহ একসঙ্গে মহাকাশে পাঠিয়ে ইতিহাস গড়েছিল ভারত। ৫ মে সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট মহাকাশে গেলে প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য তা হবে ভারতের অমূল্য উপহার। ছবি: টুইটার।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৪ সালেই ইসরোর বিজ্ঞানীদের সামনে প্রস্তাব রেখেছিলেন— এমন কোনও মহাকাশ কর্মসূচি নিক ভারত, যা ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিরও উপকারে লাগবে। মোদীর মতে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে দারিদ্র দূর করার মূল অস্ত্র হল শিক্ষার প্রসার। আর শিক্ষার দ্রুত প্রসার ঘটাতে ইন্টারনেট পরিষেবাই সবচেয়ে কার্যকরী হবে বলে তিনি মনে করেন। ইন্টারনেটকে দক্ষিণ এশিয়ার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতেই মহাকাশে সার্ক দেশগুলির জন্য একটি উপগ্রহ পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোদী। ইসরোর বিজ্ঞানীদের ওই প্রস্তাব দেওয়ার পর ২০১৪-র শেষাশেষি সার্কের বৈঠকেও মোদী একই প্রস্তাব দেন। সার্ক-ভুক্ত সব দেশ ভারতের প্রস্তাবে প্রথমে রাজি হয়েছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে পাকিস্তান জানিয়ে দেয়, ভারতের পাঠানো উপগ্রহের সহায়তা তাদের দরকার নেই। কারণ, তাদের নিজস্ব মহাকাশ কর্মসূচি রয়েছে।

আরও পড়ুন: মে’র প্রথম সপ্তাহেই তীব্র তাপপ্রবাহ দেশ জুড়ে? শঙ্কা বিজ্ঞানীদের

ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং মলদ্বীপ যাতে উপগ্রহটিকে ব্যবহার করতে পারে, সে কথা মাথায় রেখেই প্রথমে কাজ শুরু করেছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ২০১৬ সালেই উপগ্রহটিকে মহাকাশে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু মাঝ পথে পাকিস্তান এই উপগ্রহের সুবিধা নিতে না চাওয়ায় কাজ কিছুটা পিছিয়ে যায়। কারণ, উপগ্রহটির ফ্রিকোয়েন্সি কো-অর্ডিনেশনে আবার রদবদল ঘটাতে হয় বিজ্ঞানীদের।

পাকিস্তান প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করার পর উপগ্রহটির নাম বদলে দিয়েছে ভারত। একে আর সার্ক স্যাটেলাইট নামে ডাকা হচ্ছে না। এখন নয়াদিল্লি একে ‘সাউথ এশিয়ান স্যাটেলাইট’ বলছে। নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ ইতিমধ্যেই এই উপগ্রহ ব্যবহার করতে চেয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছে। আফগানিস্তানের সঙ্গেও কয়েক দিনের মধ্যেই চুক্তি হয়ে যাবে। ৫ মে মহাকাশে পৌঁছনোর পর থেকে ধীরে ধীরে সার্ক দেশগুলিতে বিপ্লব নিয়ে আসবে এই উপগ্রহ— বলছে নয়াদিল্লি।

GSLV ISRO South Asian Satellite SAARC Pakistan India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy