সোমবার সকাল থেকে পাঁচটি বুলডোজ়ার দিয়ে মন্দিরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হয়। ছবি: সংগৃহীত।
ইনদওরের বেলেশ্বর মন্দিরে ৩৬ জন পুণ্যার্থী মৃত্যুর ঘটনার আবহে মন্দিরে অবৈধ ভাবে হওয়া নির্মাণ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। সোমবার সকাল থেকে পাঁচটি বুলডোজ়ার দিয়ে মন্দিরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। যাতে কোনও ঝুটঝামেলা ছাড়াই এই কাজ সম্পন্ন হয়, তার জন্য ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে পুরসভা এবং পুলিশ আধিকারিকদের বিশাল দল। এলাকার বাসিন্দারা এসে যাতে প্রশাসনের কাজে বাধা সৃষ্টি না করেন, তার জন্য চারটি থানার পুলিশ আধিকারিকেরা মন্দিরের চারপাশে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছেন। উপস্থিত রয়েছেন জেলাশাসকও।
রবিবার, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান সব জেলার জেলাশাসকদের প্রাচীন কুয়োগুলি চিহ্নিত করে একটি তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভরাট না করেই মুখ ঢেকে রাখা কুয়োগুলোর বিষয়েও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশও তিনি দেন। আর তার এক দিন পরই বেলেশ্বর মন্দিরের অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করল প্রশাসন।
মন্দিরে পুণ্যার্থীদের মৃত্যুর মর্মান্তিক ঘটনার জন্য প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে স্বজনহারা পরিবারগুলি। তাদের দাবি, অনেক আগেই এই কুয়ো নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। কুয়োর উপরের ছাউনি বদলে ফেলার আবেদনও জানানো হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক কর্তারা বিষয়টিতে আমল দেননি। আর সেই কারণেই এই বিপর্যয়। কুয়োটির ছাউনির নির্মাণ সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে হয়েছিল বলে দাবি স্থানীয়দের।
অন্য দিকে পুরসভার দাবি, বেলেশ্বরের মন্দিরের ভেঙে পড়া জায়গায় নির্মাণ অবৈধ। গত বছরই পুরসভার তরফে এই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানতে পারে বলে মন্দির ট্রাস্ট সতর্ক করার পর পুরসভা পিছু হটে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মন্দিরের ভিতরের কুয়োর ছাউনি বহু বছর আগে তৈরি। চারটি লোহার জালি এবং কংক্রিটের পাতলা স্তর দিয়ে তৈরি ওই ছাউনি যথেষ্ট শক্তপোক্ত ছিল না। আরতি দেখার জন্য মন্দিরে জড়ো হওয়া পুণ্যার্থীরা এ-ও জানতেন না যে, তাঁদের পায়ের নীচে একটি আস্ত গভীর কূপ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রামনবমী উপলক্ষে বেলেশ্বর মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন কয়েকশো পুণ্যার্থী। পুজো চলাকালীন দর্শনের জন্য ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মন্দিরের ভিতরের ওই কুয়োর ছাদে উঠে পড়েন। কিন্তু ছাউনি যথেষ্ট শক্তপোক্ত না হওয়ায় তা ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটে। কুয়োর মধ্যে হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান পুণ্যার্থীরা। কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় অনেকের। সেই ঘটনায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৫ জনেরও বেশি পুণ্যার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy