Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Pinarayi Vijayan

Kerala: উপনির্বাচনের ফলে ফের বিতর্ক সিলভারলাইন ঘিরে

এর্নাকুলাম জেলার ত্রিক্কাকারা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ২৫ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ০৫:৫৫
Share: Save:

নতুন নজির গড়ে রাজ্যে টানা দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফেরার বর্ষপূর্তি উদযাপনের মাঝেই একটি উপনির্বাচনে হার। শাসক দল সিপিএমের সেই পরাজয়ই নতুন মাত্রা যোগ করল কেরলে সিলভারলাইন প্রকল্প ঘিরে বিতর্কে।

এর্নাকুলাম জেলার ত্রিক্কাকারা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ২৫ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। খ্রিস্টান-অধ্যুষিত ওই কেন্দ্র দীর্ঘ দিন ধরেই রয়েছে ইউডিএফের দখলে। কেরলে গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে ওই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী পি টি টমাস প্রায় ১৫ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। প্রয়াত টমাসের স্ত্রী উমা টমাস উপনির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়েছেন ১০ হাজার। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রচারে যাওয়ার পরেও উপনির্বাচনে সিপিএমের পরাজয় হওয়ায় বিরোধী দল কংগ্রেস দাবি করতে শুরু করেছে, বাম সরকারের কাজকর্মের প্রতি মানুষের ‘অনাস্থা’ই ভোটের ফলে ধরা পড়েছে। মানুষের ওই মনোভাব মেনে নিয়েই সিলভারলাইন প্রকল্প বাতিল করা উচিত বিজয়ন সরকারের। পক্ষান্তরে সিপিএম নেতৃত্বের যুক্তি, একটি হারা আসন আবার হেরে যাওয়ার ফলে সরকারের কাজে ‘অনাস্থা’ প্রকাশ পায় না। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেলে সিলভারলাইন প্রকল্পও হবে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ‘সতর্কতার সঙ্গে এগোনো’র কথা বলছেন কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন।

মোট ১৪০ আসনের কেরল বিধানসভায় সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফের আসন ছিল ৯৯। ওই সংখ্যাকে একশোয় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ত্রিক্কাকারার উপনির্বাচনে সক্রিয় হয়েছিলেন রাজ্য সরকার ও শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু তার পরেও কংগ্রেসের বড় ব্যবধানে জয়ের পরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশনের দাবি, ‘‘এলডিএফ সরকার গায়ের জোরে সিলভারলাইন প্রকল্প রূপায়ণ করতে চাইছে। মানুষ সরকারের ওই কাজকর্মের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। এখন সরকারের উচিত ওই প্রকল্প বাতিল করা।’’ কেরলের দক্ষিণে তিরুঅনন্তপুরম থেকে উত্তরে কাসারগোড় পর্যন্ত দ্রুতগামী (সেমি-হাইস্পিড) রেল যোগাযোগ তৈরির জন্য সিলভারলাইন বা কে-রেল প্রকল্পের সমীক্ষা চলছে। জমি নেওয়া শুরু হয়নি। নতুন রেল লাইন হলে যে সব জায়গার মানুষকে সরে যেতে হবে, তাঁদের সামনে রেখে বিরোধিতায় নেমেছে কংগ্রেস ও বিজেপি।

সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য এখনই পিছু হটার কারণ দেখছেন না। দলের রাজ্য সম্পাদক বালকৃষ্ণনের মতে, ‘‘এ কথা ঠিক যে, আমরা সাম্প্রতিক কালে যা কাজ করেছি, সেই অনুযায়ী প্রত্যাশা মতো ভোট আমাদের বাড়েনি। কিন্তু নির্বাচনে জয়ই একমাত্র বিষয় নয়, ভোটের হারও গুরুত্বপূর্ণ। বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় উপনির্বাচনে আমাদের ভোট বেড়েছে। ভোট কমে গেলে সরকারের কাজের মূল্যায়ন নিয়ে ভাবার প্রশ্ন আসত।’’ বালকৃষ্ণনদের যুক্তি, বিজেপির ভোট আরও কমে গিয়েছে এবং তার ফায়দা উপনির্বাচনে পেয়েছে কংগ্রেস। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মতে, কংগ্রেস দুর্বল হলেও হারিয়ে তো যায়নি! কিছু আসন জেতার ক্ষমতা তারা রাখে।

তা হলে সিলভারলাইনের কী হবে? বালকৃষ্ণনের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের অনুমোদন পেলে প্রকল্প হবে। উপনির্বাচনের ফল বিশদে পর্যালোচনা করে আমরা দেখব, কোথায় ভুল-ত্রুটি হয়েছে, শুধরে নেব। প্রাথমিক ভাবে মনে হয়, আরও সতর্ক হয়ে কাজ করার জন্য মানুষ একটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।’’ রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ধারণা, সতর্কতা বলতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সিলভারলাইনের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও ভাঙতে না চেয়ে বালকৃষ্ণন বলছেন, তিনি সব ক্ষেত্রেই সতর্ক হওয়ার কথা বলেছেন।

পাশাপাশিই বালকৃষ্ণনেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বেসরকারি কোনও প্রকল্পের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া আর সরকারি রেল প্রকল্প রূপায়ণ করতে চাওয়া এক জিনিস নয়। সেটা না বুঝেই বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Pinarayi Vijayan kerala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE