সেই শিশু। রাহুল গাঁধী মিলি।
দোরে দোরে ঘুরে কংগ্রেসের হয়ে ভোট-ভিক্ষা করেছেন ‘রাহুল গাঁধী’-র মা!
বহু পুরুষ রাজত্ব চালানোর পরে, গ্রামবাসীর কাছে নতজানু হয়ে রাজা মেনে নিয়েছেন, আসল রাজা জনতা।
হাল ফেরাতে চান স্বদেশের। আমেরিকার চাকরি ছেড়ে গ্রামবাসীর কাছে জনসেবার অনুমতি চেয়ে ঘুরেছেন প্রাক্তন কলেজ-শিক্ষিকা।
অসমে ১৬টি জেলায় কাল পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ নির্বাচন। তার প্রচারে এমনই কয়েক জন প্রার্থী নজর কেড়েছেন বেশি। প্রথম দফায় কাল ভোট হবে কামরূপ থেকে শুরু করে যোরহাট, শিবসাগর, তিনসুকিয়া, লখিমপুর পর্যন্ত, মধ্য অসম ও ব্রহ্মপুত্রের উত্তর পারে বিশ্বনাথ, শোণিতপুরে।
তার প্রচারে প্রার্থী না হয়েও অনেকের নয়নমণি হয়ে উঠেছে লখিমপুরের ‘রাহুল গাঁধী’। ঘুনাসূঁতি গ্রামে ওয়ার্ড সদস্য হিসেবে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন পুষ্পলতা টাইড মিলি। টিকিট মেলার পরে পুষ্পলতার ছেলে জন্মায়। মা-বাবা ও কংগ্রেস সমর্থকেরা মিলে নাম রাখেন রাহুল গাঁধী মিলি। রাহুলকে কোলে নিয়েই ভোট চেয়ে বেরিয়েছেন পুষ্পলতা।
টিওয়া উপজাতির শাসনভার বরাবর গোভা রাজাদের হাতে। বর্তমান গোভা রাজা সুরেন্দ্রনাথ কোঁয়র দিন কাটান সরকারি সাহায্যে। অনুদানের জন্য হাত পাততে হয় পঞ্চায়েত সভাপতির কাছে। নাম-কে-ওয়াস্তে রাজা হয়ে থাকার মায়া ত্যাগ করে অসম গণ পরিষদের হয়ে আমসৈ পঞ্চায়েতের সভাপতি পদে লড়তে নেমেছেন সুরেন্দ্র। বলছেন, ‘‘রাজপাট গিয়েছে। গণতন্ত্রের যুগে জনতাই আসল রাজা। আমি প্রজামাত্র। করজোড়ে জনতার কাছে সেবা করার অনুমতি চাইছি।’’
বাইহাটা চারিয়ালির রিনা পাটোয়ারি দেশে ও বিদেশে পড়াশোনা করে আমেরিকায় চাকরি শুরু করেন। বাবা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ছিলেন। স্বামীও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র। রাজনীতি বরাবরই প্রিয় রিনার। পছন্দ জনসেবা। বছর তিন আমেরিকায় থাকার পরে ২০১২-তে গ্রামে ফিরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়েন মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তুলতে। কমলপুরে কাছারিমহল জেলা পরিষদে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেছে। ছোট মেয়ে আর সংসার সামলে নিয়ম করে প্রচারে বেরিয়েছেন ‘বিদেশ ফেরত’ প্রার্থী। রিনার কথায়, ‘‘টাকা চাই না। তা চাইলে আমেরিকাতেই থেকে যেতাম। এখানেও অধ্যাপনা করেছি। এখন গ্রামের মানুষদের নিজের পায়ে দাঁড় করাতে চাই। তাঁদের চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনতে চাই।’’
বিধানসভার মতো পঞ্চায়েতের ভোটেও বিজেপি জোর দিয়েছে অভিনব প্রচার ও ‘থিম সং’-এ। দু’টি ‘থিম সং’ তৈরি করে গ্রামে গ্রামে বাজানো হয়েছে। ডিমৌতে বিজেপি প্রার্থীরা ভোট চাইতে গিয়ে টাকা নয়, বিলিয়েছেন লজেন্স। শুধু বাচ্চাদের নয়, বড়দেরও। ঢকুয়াখানায় ‘মিসিং’ বা ‘মিরি’ জনজাতির পরিচালক-অভিনেতা চন্দনকুমার পেগু পঞ্চায়েতের প্রার্থী। তিনি প্রচার সেরেছেন নাচ-গান-অভিনয়ে। নুমলিগড়ে সুজিত বরা, লামডিংয়ের মিন্টু বরাদেরও প্রচারের হাতিয়ার ছিল গান। আগামিকাল এঁদের সকলের পরীক্ষা। দ্বিতীয় দফায় ১০ জেলায় ভোট হবে ৯ ডিসেম্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy