লোকসভা নির্বাচন মেটার পাঁচ মাসের মাথায় আবার ভোট হরিয়ানায়। এ বার বিধানসভায়। শনিবার এক দফাতেই উত্তর ভারতের ওই রাজ্যের ৯০টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় শেষ হল প্রচারপর্ব। গণনা আগামী মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর), জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গেই।
প্রচারের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের ‘বিজয় সঙ্কল্প যাত্রা’র সমাপ্তি কর্মসূচিতে অংশ নেন রাহুল গান্ধী। নুহ্তে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে সভা করেন তিনি। মহেন্দ্রগড় এলাকাতেও কংগ্রেসের জনসভায় লোকসভার বিরোধী দলনেতা বক্তৃতা করেন। অন্য দিকে, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিংহ সাইনিকে নিয়ে সঙ্গে নিয়ে কুরুক্ষেত্র এলাকায় প্রচারসভা করেন বিজেপির অভিনেত্রী-সাংসদ হেমা মালিনী।
আরও পড়ুন:
প্রচারের শেষবেলাতেও হরিয়ানায় দেখা গিয়েছে দলবদল-পর্ব। মহেন্দ্রগড়ে রাহুলের উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দেন প্রাক্তন সাংসদ অশোক তানওয়ার। একদা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে ছিলেন এই দলিত নেতা। পরে আম আদমি পার্টি (আপ), তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নিলোখেরি বিধানসভা কেন্দ্রের আপ প্রার্থী অমর সিংহ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় সমঝোতা করেছিল কংগ্রেস এবং আপ। কিন্তু এ বার তারা আলাদা লড়ছে। লোকসভায় সে রাজ্যের ১০টি আসনের মধ্যে একটি অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দলকে ছেড়ে ন’টিতে লড়েছিল রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দল। তার মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছিলেন ‘হাত’ প্রতীকের প্রার্থীরা। বাকি পাঁচটি যায় ‘পদ্মে’র ঝুলিতে। তার আগে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ১০টি আসনেই জিতেছিল বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিরোধী ভোটের বিভাজন এড়াতে কংগ্রেস নেতা রাহুল আপের সঙ্গে সমঝোতার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সূত্রের খবর, আপ নেতৃত্ব বিধানসভা পিছু একটি আসনের (অর্থাৎ মোট ১০টি) দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা ভেস্তে যায়। কংগ্রেসের এক দশকের শাসনে ইতি টেনে ২০১৪ সালে হরিয়ানায় ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি। ইতিহাস বলছে গত পাঁচ দশকে কোনও দল পর পর তিনটি বিধানসভা ভোটে জেতেনি সে রাজ্যে।
আরও পড়ুন:
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বার হরিয়ানায় কংগ্রেস এবং বিজেপি দু’দলের ইস্তাহারেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের ছায়া। ভোটে জিতলে মহিলাদের মাসে দু’হাজার টাকা করে অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে রাহুল গান্ধীর দলের ইস্তাহারে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, হরিয়ানায় কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে রাজ্য জুড়ে হবে জাতগণনা। অন্য দিকে, বিজেপির ইস্তাহারে মহিলাদের ‘লাডো লক্ষ্মী যোজনা’য় মাসে ২১০০ টাকা অর্থসাহায্যের অঙ্গীকার রয়েছে। রয়েছে, বছরে দু’লক্ষ সরকারি চাকরি এবং রাজ্যের অগ্নিবীরদের জন্য সরকারি চাকরির নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি।
আরও পড়ুন:
দু’দলের ইস্তাহারেই রয়েছে ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি। বিতর্কিত কৃষি বিলের অভিঘাতে লোকসভার ভোটে গ্রামীণ হরিয়ানায় খারাপ ফল করেছিল বিজেপি। সে দিকে নজর দিয়ে ২৪টি কৃষিপণ্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) ভিত্তিতে কেনার কথা ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের দল। কংগ্রেসের ইস্তাহারে এমএসপি-কে আইনি রক্ষাকবচ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া ভোটদাতারা শেষ পর্যন্ত কোন প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখেন, তা জানা যাবে আগামী মঙ্গলে।