Advertisement
E-Paper

সেলিব্রিটিরাও আম আদমি, বুঝিয়ে দিল কোর্ট

খবরটা শোনার পরেই ফোন করেছিলাম সেলিম সাবকে। বহু বহু দিন ধরে চিনি মানুষটাকে। এবং যাঁরা সেলিম খানকে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা জানেন, সব সময়ই হয় মানুষটা মজা করেন! না-হয় ধোনির ক্রিকেট থেকে শুরু করে নেপালের ভূমিকম্প— অজস্র বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আজ সেলিম সাবের যে গলাটা আমি শুনলাম, গত তিরিশ বছরে তা শুনিনি। আমাকে শুধু বললেন, ‘‘মহেশ, গত তিন দিন ধরে খারাপ কিছুর জন্যই মনটা তৈরি করছিলাম। কিন্তু মানুষ তো! ভাবছিলাম ভগবান যদি সদয় হন, তা হলে রায় সলমনের পক্ষে যাবে। কিন্তু বাস্তবটা বড় কঠিন।’’

মহেশ ভট্ট

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৪:৫০

খবরটা শোনার পরেই ফোন করেছিলাম সেলিম সাবকে।

বহু বহু দিন ধরে চিনি মানুষটাকে। এবং যাঁরা সেলিম খানকে কাছ থেকে দেখেছেন, তাঁরা জানেন, সব সময়ই হয় মানুষটা মজা করেন! না-হয় ধোনির ক্রিকেট থেকে শুরু করে নেপালের ভূমিকম্প— অজস্র বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেন।

কিন্তু বিশ্বাস করুন, আজ সেলিম সাবের যে গলাটা আমি শুনলাম, গত তিরিশ বছরে তা শুনিনি। আমাকে শুধু বললেন, ‘‘মহেশ, গত তিন দিন ধরে খারাপ কিছুর জন্যই মনটা তৈরি করছিলাম। কিন্তু মানুষ তো! ভাবছিলাম ভগবান যদি সদয় হন, তা হলে রায় সলমনের পক্ষে যাবে। কিন্তু বাস্তবটা বড় কঠিন।’’

এর পরে আর কথা বাড়াইনি।

একা সলমনের বাবা নন, গোটা বলিউড আজকে শোকে মূহ্যমান। আমাকে অনেকেই জিজ্ঞেস করছেন, ‘‘আপনার প্রথম প্রতিক্রিয়া কী?’’ আমি তাঁদের একটাই কথা বলছি, এটা বলিউডের ‘বডি ব্লো’।’

চুলবুল পাণ্ডে একা দশ জনকে মারছে, সানগ্লাস পরে ডায়লগবাজি করছে— এ সব ঠিক আছে। কিন্তু আমরা যারা ভার্চুয়াল ওয়র্ল্ড নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করি, তাদের ওই পৃথিবীতে থাকতে থাকতে একটা ধারণা হয় যে, আমরা আইনের ঊর্ধ্বে। মনে হতে থাকে— আমাদের এত অসংখ্য ভক্ত! আমাদের দেখতে এত মানুষ রাত বারোটার সময় বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকেন! আমাদের কে ধরবে?

আজকের দিনটা কিন্তু প্রমাণ করে দিল, তুমি যত বড় সুপারস্টারই হও না কেন, আইনের সামনে সলমন খান আর সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই।

তবে একটু তফাৎ বোধহয় আছে। এবং এখানে আমি সেটা নিয়েই কিছু প্রশ্ন তুলতে চাই। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই মাফ হয়ে যায়, যেটা সলমন কিংবা অন্য সেলিব্রিটিদের ক্ষেত্রে হয় না। অ্যালিস্টার পেরেরাকে মনে আছে আপনাদের? সাত-সাত জন মানুষকে চাপা দিয়েছিল অ্যালিস্টার। তার ক্ষেত্রে কিন্তু আদালত তিন বছরের সাজা দিয়েছিল। সেখানে সলমনের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হল।

দ্বিতীয়ত, সকাল থেকে শুনছি এটা নাকি ‘হিট অ্যান্ড রান’ কেস। আমার প্রশ্ন, ‘হিট অ্যান্ড রান’ মানে তো মেরে পালিয়ে যাওয়া। সলমন তো পালিয়ে যায়নি। এমনকী যেখানে ঘটনাটা ঘটেছে, সেখান থেকে সলমনের বাড়ির দূরত্ব ২০০ মিটারেরও কম। তা হলে ‘হিট অ্যান্ড রান’ কেন বলছে মিডিয়া? আমি অন্তত বুঝছি না!

আজকের দিনটার সঙ্গে আর একটা দিনের খুব মিল পাচ্ছি। যে দিন আমার অত্যন্ত প্রিয় সঞ্জুর (সঞ্জয় দত্ত) বিরুদ্ধে রায় দিয়েছিল আদালত। সলমন আর স়ঞ্জয় দত্তের মধ্যে কোথায় মিল, কোথায় অমিল, মিডিয়ার সেই খেলায় আমি যাচ্ছি না। আমি শুধু একটা কথাই বলব, আমাদের দেশে সব সেলিব্রিটিরই সলমন আর সঞ্জয়কে দেখে শিক্ষা নেওয়া উচিত। সেলিব্রিটি হলে যে মাইক্রোস্কোপ সব সময় যে আপনার উপর থাকবে, এ বার অন্তত বুঝুক সেলিব্রিটিরা।

ফ্যান ক্লাব, টুইটারের ফলোয়ার— সব ঠিক আছে। কিন্তু অসম্ভব ক্ষমতাবান মানুষেরাও যে দেশের আইনের সামনে অত্যন্ত তুচ্ছ, আজকের দিনটা তার সব চেয়ে বড় প্রমাণ।

abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy