সব রাজ্যকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। প্রতীকী ছবি
১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। এ বার থেকে এই কাজে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় সরকারি অ্যাপে বায়োমেট্রিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হল। এই অ্যাপে বায়োমেট্রিক উপস্থিতি থাকলে তবেই পারিশ্রমিক পাওয়া যাবে। সোমবার থেকে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। সব রাজ্যকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সেই মতো বিডিও অফিসগুলিতে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল মোবাইল মনিটরিং সিস্টেম’ অ্যাপের মাধ্যমেই বায়োমেট্রিক উপস্থিতি দিতে হবে। খাতায় লিখে হাজিরা দিলে তা আর গণ্য করা হবে না। সম্প্রতি ১০০ দিনের কাজের খাতে রাজ্যের পাওনাগণ্ডা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই সরকারের এমন সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের একাংশের আধিকারিক। যদিও মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দেওয়ার পরেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ এনে পাল্টা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে প্রশাসনিক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখতে চান রাজ্য সরকারের বেশির ভাগ আধিকারিক।
রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘হয়তো কাকতালীয় ভাবে মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা প্রধানমন্ত্রীকে যে সময় চিঠি দিয়েছেন, সেই সময় এই পদ্ধতি কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ আছে বলে আমরা মনে করি না। কারণ, ২০২১ সালের ২১ মে থেকে এই অ্যাপের মাধ্যমে হাজিরা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।’’ সেই সময় সরকারি আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের হাজিরার বিষয়টি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে অনেক রাজ্য আপত্তি করলে বিষয়টি আটকে যায়। তবে এই প্রকল্প নিয়ে নানা সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। তাই গত মার্চ মাসে এই অ্যাপ নিয়ে বৈঠক হয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। সেখানেই ঠিক হয়, যে সব জায়গায় ২০ বা তার বেশি শ্রমিক ১০০ দিনের কাজে যুক্ত রয়েছেন, সেখানে এই অ্যাপের মাধ্যমেই হাজিরা নথিভুক্ত করতে হবে।
তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পর্যন্ত বায়োমেট্রিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে চাপ দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। বরং বিষয়টিকে ঐচ্ছিক রাখা হয়েছিল। কিন্তু এ বার আর ওই বিষয়টিকে ঐচ্ছিক করে রাখতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ, কেন্দ্রীয় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে প্রচুর অভিযোগ আসছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কোথাও ভুয়ো জব কার্ড তৈরি, কোথাও শ্রমিকদের বেতন থেকে কাটমানি নেওয়া, কোথাও উপস্থিতি না দিয়েই শ্রমিকদের বেতন পাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কোথাও আবার একই কাজ দেখিয়ে বার বার করে বেতন নেওয়ার মতো অভিযোগও জমা পড়েছে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। তাই আর দেরি করতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে সোমবার থেকেই ১০০ দিনের কাজে বায়োমেট্রিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy