Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Amar Jawan Jyoti

Amar Jawan Jyoti: নিভছে, কিন্তু ‘নিভছে না’! ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতি নিয়ে মোদী সরকারের ব্যাখ্যা

কেন্দ্রের যুক্তি, সাত দশক পেরোলেও স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে আত্মবলিদান দেওয়া সেনার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কেন উৎসাহ দেখাল না বিগত সরকার?

ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২২ ১২:৩১
Share: Save:

রাজধানী দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের সামনে অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখাকে নিকটবর্তী জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের (ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল) শিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শেষ প্রহরে গর্জে উঠেছেন বিরোধীরা। এ বার সেই বিতর্কের প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। জানাল, অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখা নিভছে না। তাকে কেবল জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে প্রজ্জ্বলিত শিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাখ্যার পরও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখাও কি তা হলে একই সঙ্গে জ্বলবে?

১৯৭২ সাল। ঠিক তার আগের বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রয়াত সেনাদের স্মৃতিতে ইন্ডিয়া গেটের কাছে অমর জওয়ান জ্যোতির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। তখন থেকে জ্বলছে অনির্বাণ শিখা। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, ৪০০ মিটার দূরে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের অনির্বাণ শিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে অমর জওয়ান জ্যোতির সেই অনির্বাণ শিখা। এখানেই বিরোধীদের প্রশ্ন, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মোদী সরকার? এটা কি শহিদদের আত্মবলিদানের অমর্যাদা নয়?

সকাল থেকে শিখা স্থানান্তরের খবর জানাজানি হতেই তোলপাড় পড়ে যায়। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আসে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা। কেন্দ্রীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখা বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মবলিদান দেওয়া সেনার উদ্দেশে হলেও, সেখানে কোথাও আত্মত্যাগী সেনাদের নাম নেই। ইন্ডিয়া গেটে খোদাই করা ৯০ হাজার সেনার কেউই এই যুদ্ধে অংশ নেননি। তাঁদের প্রত্যেকেরই ১৯১৪ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে ফ্রান্স, ফ্লন্ডার্স, মেসোপটেমিয়া, পারস্য, পূর্ব আফ্রিকা, গাল্লিপোলিতে এবং তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে। বিরোধীদের কাছে কেন্দ্রের প্রশ্ন, তা হলে কী করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা এবং ভারতীয় সেনার তৎপরবর্তী যুদ্ধ বা অভিযানে আত্মবলিদান দেওয়া সেনাদের স্মৃতির উদ্দেশে অমর জওয়ান জ্যোতির মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করা যায়?

মূলত স্বাধীনতা-পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় সেনার আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানাতে ২০১৯-এর ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করেন জাতীয় যুদ্ধ স্মারক। সেখানে পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে যুদ্ধ অথবা সশস্ত্র সংঘর্ষে শহিদ সেনাদের পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় ‘অপারেশন পবন’-সহ স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতে প্রতিটি যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে প্রয়াত ভারতীয় সেনাদের নাম গ্রানাইট পাথরের উপর স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করা আছে। সেখানে স্থান পেয়েছে ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহিদ হওয়া ভারতীয় সেনাদের নামও। এই প্রেক্ষিতেই বিরোধীদের আক্রমণ করে কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তি, স্বাধীনতার সাত দশক পেরিয়ে গেলেও স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে আত্মবলিদান দেওয়া সেনানীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কেন কোনও উৎসাহ দেখাল না বিগত দিনের সরকার?

এই প্রেক্ষিতেই পাল্টা প্রশ্ন বিরোধীদের, শুধুমাত্র নাম খোদাই করা আছে বলেই কি এত বছরের অনির্বাণ শিখার স্থান পরিবর্তন করতে হবে? সব মিলিয়ে অমর জওয়ান জ্যোতি বিতর্ক কমার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা তাতে ঘৃতাহুতি দিল কি না, প্রশ্ন উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE