কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অটওয়ালে। —ফাইল চিত্র
করোনাভাইরাস তাড়াতে স্লোগান তুলেছিলেন ‘গো করোনা গো’। আর গলওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের পর সেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামদাস অটওয়ালের দাওয়াই ‘চিনের খাদ্য বয়কট’। সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ভারতের যে সব রেস্তরাঁয় চাইনিজ ডিশ পাওয়া যায়, সেগুলিকেও বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রের সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের ঝড়। কার্যত ট্রোলড মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, সার্চ ইঞ্জিনগুলিতেও চিনা খাবারের উৎস সন্ধানের হিড়িক পড়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে ভারতের ১৯ সেনা জওয়ান ও এক কর্নেলের মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই চিনা পণ্য বর্জনের দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংকে নিয়ে বহু কার্টুন, মিম ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই আবহেই বৃহস্পতিবার মন্ত্রী রামদাস অটওয়ালে বলেন, চিনা খাবার বয়কট করতে হবে। ভারতে চাইনিজ রেস্তরাঁগুলি বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও তোলেন তিনি।
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, চাইনিজ খাবার হিসেবে যেগুলি পরিচিত, তার অধিকাংশই এখন ভারতীয় খাবারের তালিকাতেই ঢুকে পড়েছে। চাউমিন, মাঞ্চুরিয়ানের মতো খাবার শুধু রেস্তরাঁতে তৈরি বা ডিশ হিসেবে দেওয়া হয় এমন নয়, সেগুলির প্রায় সব উপকরণই তৈরি হয় দেশে। এই ধরনের রেস্তরাঁ, স্ট্রিট ফুডের উপর অনেকের জীবন-জীবিকাও নির্ভরশীল। করোনাভাইরাসের জেরে এমনিতেই কোটি কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। তার উপর মন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
Strategic thought at its subtlest:
— Praveen Swami (@praveenswami) June 18, 2020
By boycotting Gobi Manchurian and chilly noodles, made with food grown by Indian farmers, processed in Indian factories, and cooked by Indian workers, we can ruin our own country and thus deny the Chinese no targets to attack https://t.co/f9WP6y8uLO
আরও পড়ুন: পাঠানো হল যুদ্ধবিমান, চূড়ান্ত সতর্কবার্তা বায়ুসেনাকে
সোশ্যাল মিডিয়ায় আবার মন্ত্রীকে নিয়ে নানা রকম ব্যঙ্গ, রসিকতাও ছড়িয়ে পড়েছে। ‘গো করোনা গো’ স্লোগানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মিম, ভিডিয়ো, ছবির মাধ্যমে মন্ত্রীকে খোঁচা দিয়েছেন নেটিজেনদের একটা বড় অংশ। এর সঙ্গে অনেকে আবার চাইনিজ ডিশ বলে পরিচিত এই সব খাবারের উৎস সন্ধানেও নেমে পড়েছেন। গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনে ‘অরিজিন অব নুডল্স’ বা ‘অরিজিন অব মাঞ্চুরিয়ান’-এর মতো শব্দবন্ধ বিপুল হারে সার্চ করা হয়েছে। তার সঙ্গে রামদাস অটওয়ালের নামও সার্চ ইঞ্জিনগুলিতে সামনের সারিতে উঠে এসেছে।
#BoycottChina
— Kriti (@chal_chal_away) June 18, 2020
Me When someone says
1:- Boycott chinese products
2:- Boycott Chinese food (momos) pic.twitter.com/Kuubaz94MI
আরও পড়ুন: কেন গেল ২০ প্রাণ? বিরোধীদের প্রশ্নের মুখেই মোদী সর্বদল বৈঠকে
নুডল্স বা মাঞ্চুরিয়নের ব্যুৎপত্তি যে চিন থেকেই এমন কোনও নিশ্চিত প্রমাণ কিন্তু নেই। ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক-এর মতে, ‘হতেও পারে’, আবার ‘না-ও হতে পারে’। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, চিনে ‘ইস্ট হান’-এর শাসনকালে একটি বইতে নুডল্স-এর উল্লেখ পাওয়া যায়, যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে প্রাচীন বলে ধরা হয়। আবার ২০০৫ সালে চিনেরই লাজিয়া পূরাতত্ব ক্ষেত্রে একটি নুডল্স-এর বাটি পাওয়া যায়, যা প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো। অন্য দিকে এমন বহু তত্ত্ব আছে, যাতে বলা হয়েছে, নুডল্সের উৎপত্তি মধ্যপ্রাচ্যে। ইটালীয়রা এই খাবার বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করেছিল, গবেষণায় এমন তথ্যও উঠে এসেছে।
Ministers should refrain from giving such statements. There are many Chinese restaurants across India run by people from North East. Who's responsible if fringe elements attack them and their property. https://t.co/CiJT3Y5te8
— Mohammed Zubair (@zoo_bear) June 18, 2020
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy