Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চান না সর্বানন্দ, ধীরে চলো নাগরিকত্ব বিলে 

যাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল গত কাল। আপাতত ধীরে চলো নীতি নিয়েছে ওই কমিটিও।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। —ফাইল চিত্র।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। —ফাইল চিত্র।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ নিয়ে বেঁকে বসেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালই। নিজের দলের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ওই বিরোধিতা পেয়ে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। কিন্তু রাজ্যে সরকার পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে খারাপ ফলের ভয়ও রয়েছে। তাই আসন্ন লোকসভা ভোট পর্যন্ত বিলটি ঠান্ডাঘরে রাখতে রাজি হয়েছে কেন্দ্র। বিল নিয়ে আলোচনা চলছিল যৌথ সংসদীয় কমিটিতেও। যাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল গত কাল। আপাতত ধীরে চলো নীতি নিয়েছে ওই কমিটিও।

পড়শি দেশ থেকে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘু যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব বিলে সংশোধনী এনেছিল কেন্দ্র। ২০১৬ সালে ওই স‌ংশোধনী পেশ হয় লোকসভায়। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই একজোট ছিল বিরোধীরা। আলোচনার জন্য বিলটি যায় যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।

প্রায় একই সঙ্গে অসমে বিলটি ঘিরে শুরু হয় বিরোধিতা। বিলটি পাশ হলে অসমে অসমিয়ারাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়তে পারেন— এই আশঙ্কায় পথে নামে একাধিক সংগঠন। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজন ওই স‌ংশোধনীর জোরে নাগরিক হয়ে ভূমিপুত্রদের একঘরে করে দেবে। সংগঠনগুলির যুক্তি, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশ করে অসমিয়াদের দীর্ঘ দিনের দাবি মিটিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু বহু সংখ্যক মানুষের নাম বাদ পড়ায় সেই পদক্ষেপকে মোটেই ভাল ভাবে নেননি বরাক-নমনি অসমের বাঙালিরা। রাজ্যের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ বাঙালি সমাজকে আশ্বস্ত করতেই আনা হচ্ছিল বিলটি।

প্রতিবাদে জোট বাঁধে অসমের প্রায় ৭০টি সংগঠন। সক্রিয় হয়ে ওঠে জঙ্গি সংগঠন আলফা। ঘটে যায় তিনসুকিয়ায় বাঙালি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও। এ দিকে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে ওই বিল পাশ হলে সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় শরিক দল অসম গণ পরিষদ (অগপ)। এই পরিস্থিতিতে গত মাসের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়াল। তিনি রাজনাথকে বলেন, অগপ শুরু থেকেই ওই সংশোধনীর বিপক্ষে। তারা বেরিয়ে গেলে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে সরকার। পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনেও দলের ফল খারাপ হতে পারে। লোকসভাতেও ভরাডুবি হওয়ার আশঙ্কা! মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ধীরে চলার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। একই বার্তা দেওয়া হয় যৌথ সংসদীয় কমিটিকেও। সব মিলিয়ে লোকসভার আগে বিলটির আলো দেখা মুশকিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sarbananda Sonowal Narendra Modi NRC Assam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE