Advertisement
E-Paper

বাড়াবাড়ি না-করে নতুন সেবি, সতর্কবাণী তৃণমূলের

সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বেআইনি কাজকারবার রুখতে সেবি-কে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করছে তৃণমূল। তবে সেই সঙ্গে তাদের সাবধান বাণী, বাড়তি ক্ষমতাপ্রাপ্ত সেবি বাড়াবাড়ি না করে। সিবিআই-এর মতো এই সংস্থাও রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়ে ওঠে! অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অবশ্য জবাবে বলেছেন, সেবি নিজেই শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না। তবে সেবি-র কাজ নিয়ে কারও সন্দেহ থাকলে আইন মেনে সেবি-র বিরুদ্ধে তিনি আবেদন করতে পারেন। তার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যাপেলেট ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) রয়েছে। সেখানেও সন্তুষ্ট না হলে আদালত রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৪ ০২:৩৯

সারদার মতো অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বেআইনি কাজকারবার রুখতে সেবি-কে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করছে তৃণমূল। তবে সেই সঙ্গে তাদের সাবধান বাণী, বাড়তি ক্ষমতাপ্রাপ্ত সেবি বাড়াবাড়ি না করে। সিবিআই-এর মতো এই সংস্থাও রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়ে ওঠে!

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি অবশ্য জবাবে বলেছেন, সেবি নিজেই শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করে না। তবে সেবি-র কাজ নিয়ে কারও সন্দেহ থাকলে আইন মেনে সেবি-র বিরুদ্ধে তিনি আবেদন করতে পারেন। তার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যাপেলেট ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) রয়েছে। সেখানেও সন্তুষ্ট না হলে আদালত রয়েছে।

আজ লোকসভায় সেবি আইন সংশোধনী বিল পাশ হয়েছে। সেবি আইনে সংশোধন করে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সারদার মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে আরও ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। সেই বিল নিয়ে আলোচনার সময়ই আজ লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগের সুরে জানান, এখন সিবিআইয়ের ঘাড়ে সব কিছু ঠেলে দেওয়া একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সিবিআই ৮টি মামলা হাতে নিয়েছে। কিন্তু কোনওটিতে শুনানির পর্বই শেষ করতে পারেনি।

সারদার ক্ষেত্রেও সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সারদা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সিবিআই তদন্তের উল্লেখ অবশ্য করেননি কল্যাণ। তাঁর বক্তব্য, “সেবি-র সম্পূর্ণ স্বশাসন প্রয়োজন। এর যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না থাকে। এটি যেন আর একটি সিবিআই না হয়ে ওঠে। কয়েক দশক ধরে আমরা দেখছি, সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হয়েছে। তাই সেবি-র চেয়ারম্যানের নিরপেক্ষতা নিয়ে যেন প্রশ্ন না ওঠে।”

অর্থমন্ত্রী জেটলি জবাবি বক্তৃতায় বলেন, সেবি-কে যেমন তল্লাশি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তেমনই তার যেন অপব্যবহার না হয়, তারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তল্লাশি চালাতে সেবি-কে আগে নির্দিষ্ট অনুমতি নিতে হবে। জেটলির যুক্তি যেখানেই অর্থ থাকবে, সেখানেই কিছু হাঙর এসে জড়ো হবে। কিছু লোক বেআইনি কাজের সুযোগ খুঁজবে। এ জন্য কড়া নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রয়োজন হবে। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কে নিয়ন্ত্রণ করবে, এই প্রশ্নের কোনও সহজ উত্তর হয় না।

কল্যাণ ও জেটলি দু’জনেই আইনজীবী। আজ বক্তৃতার শুরুতেই তাই কল্যাণকে বলতে শোনা যায়, “অর্থমন্ত্রীকে আইন নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার মতো জ্ঞান আমার নেই। তা করছিও না। ওঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। নব্বইয়ের দশকে কয়েকটি মামলায় ওঁর সহকারী আইনজীবী হিসেবে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম।”

পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কাজকর্মের দায় আজ পরোক্ষ ভাবে বামফ্রন্ট সরকারের উপরেই চাপিয়েছে তৃণমূল। কল্যাণ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে ১৯৮৪ সাল থেকে বহু অর্থলগ্নি সংস্থা কাজ শুরু করেছে। এরা সেবি-র খাতায় নথিভুক্ত নয়। তিন দশক ধরে তারা ইচ্ছেমতো কাজ করে চলেছে। কেউ তাদের ছোঁয়নি। আশা করি, নতুন অর্থমন্ত্রীর তদারকিতে নতুন আইনের ধারাগুলি দ্রুত কার্যকর হবে।” কল্যাণের দাবি, এ বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উদ্যোগী হলেও মনমোহন সরকারের সাহায্য মেলেনি। তিনি বলেন, “এই আইনের মতোই একটি আইন পশ্চিমবঙ্গ সরকার তৈরি করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের জমানায় সেই আইনে রাষ্ট্রপতির সিলমোহর বসেনি। আশা করব, মোদী সরকার দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মতো আচরণ করবে না।”

আজ বিল পাশের সময় জেটলি আশা প্রকাশ করেন, ব্যাঙ্কের পরিষেবা বাড়লে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার দৌরাত্ম্যও কমবে। অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বেআইনি পথে আয় করা মুনাফার অঙ্ক সেবি বাজেয়াপ্ত করবে। সেই অর্থ দিয়ে লগ্নিকারীদের সুরক্ষা ও সচেতনতা তৈরির জন্য একটি তহবিল তৈরি করবে। আইন পাশের জন্য অপেক্ষা না করে অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে সেবি-কে যে বাড়তি ক্ষমতা দেওয়া হয়, তা কাজে লাগিয়েই সেবি ইতিমধ্যে ওই তহবিলের জন্য ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে।

central government introduce sebi act amendment bill
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy