Advertisement
০২ মে ২০২৪
Chandrayaan-3

চাঁদের মাটিতে অশোকস্তম্ভ এঁকে দেবে চন্দ্রযানের রোভার ‘প্রজ্ঞান’, সঙ্গে ইসরোর প্রতীকও

চাঁদের মাটিতে শুধু বৈজ্ঞানীক তথ্য অনুসন্ধান আর মাটি-পাথর সংগ্রহ নয়, ভারতের ‘উপস্থিতি’ প্রমাণ করবে রোভার প্রজ্ঞানে পাঠানো ‘অশোক স্তম্ভ’ এবং ইসরোর প্রতীকের ছাপ।

Chandrayaan-3 rover Pragyan to leave imprints of Ashoka Pillar, the National Emblem and ISRO emblem on Moon

তৃতীয় চন্দ্রযান থেকে চাঁদের মাটিতে নামবে এমনই রোভার। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ ১৪:৫০
Share: Save:

চন্দ্রযানে যদি পাঁচটি জিনিস পাঠাতে হয়, তা কী কী হতে পারে? ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের আহে টুইটারে মজা করে জানতে চেয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। তার জবাবেই টুইটারে উঠে এসেছিল দীর্ঘ তালিকা। গঙ্গাজল থেকে ব্যাকটিরিয়া, দেশের মাটি থেকে প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালামের ছবি পর্যন্ত অনেক কিছুই ছিল সেই তালিকায়।

ইসরোর তৃতীয় চন্দ্রাভিযানে এ বার ঠাঁই পেয়েছে সেই তালিকার দুই জিনিস— অশোক স্তম্ভ এব‌ং ইসরোর প্রতীক। চাঁদের মাটিতে শুধু বৈজ্ঞানিক তথ্য অনুসন্ধান আর মাটি-পাথর সংগ্রহ নয়, ভারতের ‘উপস্থিতি’ প্রমাণ করবে রোভার প্রজ্ঞানে পাঠানো ‘অশোক স্তম্ভ’ এবং ইসরোর প্রতীকের ছাপ। যার মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে এঁকে দেওয়া হবে মৌর্য সম্রাট অশোক নির্মিত সারনাথের সেই তিন সিংহ। যা এখন ভারতের জাতীয় প্রতীক। পাশাপাশি, আঁকা হবে ইসরোর প্রতীকও।

ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে প্রায় ৪০ দিন পরে, আগামী ২৩ বা ২৪ অগস্টের মধ্যে চাঁদের মাটিতে নামতে পারে চন্দ্রযান-৩-এর সৌরচালিত ল্যান্ডার বিক্রম। সেখান থেকে সৌরচালিত রোভার প্রজ্ঞান বেরিয়ে চাঁদের মাটি ছোঁবে। চাঁদের মাটির চরিত্র, বিভিন্ন খনিজ পদার্থের উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে। পাশাপাশি, যে অঞ্চল দিয়ে প্রজ্ঞান চলাচল করবে সেখানকার চাঁদের জমিতে অশোকস্তম্ভ এবং ইসরোর প্রতীক আঁকা হবে।

শুক্রবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে চন্দ্রযান-৩-এর। কিন্তু চূড়ান্ত সাফল্যের জন্য পাড়ি দিতে হবে আরও অনেকটা পথ। যদি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ থেকে ল্যান্ডার বিক্রম সফল ভাবে চাঁদের মাটি ছুঁতে পারে এবং তার পরে রোভার প্রজ্ঞানকে সঠিক ভাবে অবতরণ করাতে পারে, তবে ভারতীয় মহাকাশ অভিযানের ইতিহাস নতুন মাত্রা পাবে। সে ক্ষেত্রে গত এক দশকে চিনের পর আরও কোনও দেশের মহাকাশযান সফল ভাবে চাঁদে অবতরণের নজির গড়বে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পরে চতুর্থ দেশ হিসাবে তালিকায় ঠাঁই পাবে ভারত।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৭ জুলাই চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ‘সিমপেলিয়াস এন’ এবং ‘ম্যানজিনাস সি’ নামে দু’টি গহ্বরের মাঝখানে চন্দ্রযান ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণের চেষ্টা করেছিল (এ বারও অবতরণ হবে দক্ষিণ মেরু অঞ্চলেই)। কিন্তু তা সফল হয়নি। পেটের মধ্যে রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে অবতরণের তিন মিনিট আগে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বিক্রম। মাস তিনেক ধরে বিক্রমের ধ্বংসাবশেষের অনবরত খোঁজ চালিয়েছিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। কিন্তু কোনও ভাবেই তা চিহ্নিত করতে পারেনি তারা। শেষমেশ ‘লুনার রিকনাইস্যান্স অরবিটার’ (এলআরও)-এর তোলা একটি ছবি শেয়ার করে বিশ্ববাসীর কাছে সাহায্য চায় নাসা। সেই ছবি দেখে চেন্নাইয়ের এক জন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিক্রমের ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandrayaan-3 ISRO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE