Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

৮০ বছর ধরে গিরিডিতে বন্ধ জগদীশচন্দ্রের সিন্দুক

একটা তিন ফুট লম্বা, দু’ফুট চওড়া ও দেড় ফুটের মতো লোহার সিন্দুক। ১৯৩৭ সালে মালিকের মৃত্যুর পর থেকে সিন্দুকটি বন্ধ। খোলাই হয়নি।

জগদীশচন্দ্রের মৃত্যুর পর থেকেই বন্ধ এই সিন্দুক।—নিজস্ব চিত্র।

জগদীশচন্দ্রের মৃত্যুর পর থেকেই বন্ধ এই সিন্দুক।—নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
রাঁচি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৪৭
Share: Save:

একটা তিন ফুট লম্বা, দু’ফুট চওড়া ও দেড় ফুটের মতো লোহার সিন্দুক। ১৯৩৭ সালে মালিকের মৃত্যুর পর থেকে সিন্দুকটি বন্ধ। খোলাই হয়নি। খুললে ওই সিন্দুক থেকে হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে কোনও অমূল্য সম্পদ। হয়তো বেরিয়ে আসতে পারে কোনও সমৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক গবেষণা পত্র! কারণ সিন্দুকটির মালিকের নাম যে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু!

গিরিডির জগদীশচন্দ্র বসু সংগ্রহশালায় সিন্দুকটি রাখা আছে সেই ১৯৩৭ সাল থেকেই। জেলাশাসক উমাশঙ্কর সিংহ থেকে শুরু করে জেলার ইনফরমেশন অফিসার শিবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলার সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ এডুকেশন মেহমুদ আলম—সবাই এক কথায় স্বীকার করে নিচ্ছেন, এতদিন ধরে ওই সিন্দুকের মধ্যে কোনও মূল্যবান কাগজপত্র পড়ে থাকলে তা নষ্টও হয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত ওই সিন্দুক খোলা জরুরি। কিন্তু প্রশ্ন, কে খুলবে ওই সিন্দুক?

শিবকুমারবাবুর কথায়, ‘‘বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীর ওই ঐতিহাসিক সিন্দুক যে কেউ খুলে ফেলুক, তা আমরা চাইনি। তাই ঠিক করেছিলাম, ওই সিন্দুকটি খুলবেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম। তাঁকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছিল। তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণও করেছিলেন। কিন্তু কার্যকারণে তা আর হয়ে ওঠেনি।’’ জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, ২০০২ সালের জুন মাসে আব্দুল কালাম বোকারোয় আসেন। তখন ঠিক হয় বোকারোর অনুষ্ঠানের পরে তিনি গিরিডি যাবেন ওই সিন্দুকটি খুলতে। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে গিরিডির উদ্দেশে আর কালামের হেলিকপ্টার ওড়েনি। তার পরেও জগদীশচন্দ্রের সিন্দুক খুলতে ও সংগ্রহশালাটি ঘুরে দেখতে আসার কথা ছিল কালামের। কিন্তু কোনও কারণে সেই অনুষ্ঠানও বাতিল হয়ে যায়। সম্প্রতি মারা গিয়েছেন কালাম। প্রশ্ন উঠেছে তা হলে কি সিন্দুক খোলার পরিকল্পনা আরও পিছিয়ে গেল? জেলাশাসক উমাশঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘কালাম যদি ওই সিন্দুকটি খুলতেন তা হলে খুবই ভাল হত। তবে উনি যখন আর নেই তখন অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। ওই সংগ্রহশালার দায়িত্বে আছেন জেলার সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ এডুকেশন, মেহমুদ আলম। তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন।’’

যদিও মেহমুদ সাহেব বলেন, ‘‘দু’বার তো চেষ্টা হল। এ বার নতুন করে ফের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।’’ শিবকুমারবাবু জানান, ‘‘কালাম সাহেবকে দিয়ে সিন্দুক খোলার পরিকল্পনা দু’দুবার ভেস্তে যাওয়ার পর আমরা কলকাতার বোস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আসতে রাজি ছিলেন। কিন্তু বিষয়টি এগোয়নি।’’

১৯৩৭ সালে গিরিডির শান্তি নিবাসেই মারা যান জগদীশচন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE