—ছবি পিটিআই।
নাগরিকত্ব সংশোধনী ও তিন তালাক বিল— মোদী জমানায় এই দু’টি বিল নিয়েই সবচেয়ে বেশি বিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। আজ ১৬তম লোকসভার শেষ দিনেও বিল দু’টি পাশ হল না রাজ্যসভায়। চলতি লোকসভার মেয়াদের মধ্যে উভয় কক্ষে পাশ না হলে নিম্নকক্ষে পেশ হওয়া বিল বাতিল হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দু’টি বিলই লোকসভায় পেশ ও পাশ হয়েছিল। তিন তালাক বিল রাজ্যসভাতেও পেশ হয়েছিল। কিন্তু পাশ হয়নি। ফলে দু’টি বিলই বাতিলের খাতায় চলে গেল। ৩ জুন বর্তমান লোকসভার মেয়াদ শেষ হবে। তার সঙ্গে শেষ হবে তিন তালাক নিয়ে অধ্যাদেশের মেয়াদও।
রাজ্যসভায় এ দিন বেশ ক’টি বিল পাশ করানোর চেষ্টা করে সরকার। বিরোধীদের হট্টগোলে তা সম্ভব হয়নি। এমনকি রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার উপরে ধন্যবাদ জানানোর প্রস্তাব ও অন্তর্বর্তী বাজেটও আলোচনা ছাড়াই পাশ করাতে হয়।
নাগরিকত্ব সংশোধনী পাশ না হওয়াটা অসমের মানুষের কাছে বড় ধাক্কা বলে মন্তব্য করেছেন সে রাজ্যের মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। অগপ নেতা প্রফুল্ল কুমার মোহন্ত অবশ্য খুশি। এই বিলের বিরোধিতা করেই তাঁরা অসমে বিজেপি জোটের সরকার থেকে বেরিয়ে এসেছেন। অসম বাদে উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে বিলটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিলটি আজ আটকে যাওয়ায় এক ঢিলে দুই পাখি মারা সম্ভব হল বলেই মনে করছে শাসক শিবিরের একাংশ। এক, উত্তর-পূর্বের বিল-বিরোধী ভাবাবেগের চাপ থেকে রেহাই মিলল ভোটের মুখে। আবার সরকার যে বিলটি আনতে আন্তরিক, এবং কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের মিলিত বাধাতেই সেটি আটকে গেল— সেই বার্তা দেওয়া গেল। এ থেকে রাজ্যে রাজ্যে ফায়দা মিলতে পারে ভোটে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে সমর্থন মিলতে পারে মতুয়াদের। একই লক্ষ্যে বিজেপির কিছু নেতা চাইছেন, এ নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করুক সরকার।
এক বিষয়ে সর্বোচ্চ তিন বার আধ্যাদেশ আনা যায়। তিন তালাক এ নিয়ে আগেই দু’টি অধ্যাদেশ এনেছে সরকার। কিন্তু দু’বারই সেটিকে সংসদের অনুমোদন নিয়ে আইনে পরিণত করতে ব্যর্থ হল। তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘জুন মাসে ফের সংসদ বসবে। তারই মধ্যে পুরনো অধ্যাদেশ সংসদের উভয় কক্ষে পাশ করাতে হবে নতুন সরকারকে। অথবা লোকসভা নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মেয়াদ শেষ হলে আইন বাঁচিয়ে রাখতে নতুন করে অধ্যাদেশ আনতে হবে সরকারকে।’’
তিন তালাক বিলটি পক্ষপাতমূলক ও ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। তা বাতিল হয়ে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস-সহ গোটা বিরোধী শিবির। যদিও বিজেপির নেতারা বলছেন, দেশের কয়েক কোটি মহিলার সুরক্ষার স্বার্থে তৈরি হয়েছিল এই বিল। মহিলাদের স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে বিরোধী শিবির কী রকম নেতিবাচক মনোভাব নিয়েছে আগামী দিনে তা প্রচারে তুলে ধরা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy