দিল্লির বিজ্ঞান ভবে মুখ্যমন্ত্রী এবং বিচারপতিদের সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রীর সামনেই ভেঙে পড়লেন দেশের প্রধান বিচারপতি!
নিজেদের অসহায়তার কথা বলতে গিয়ে চোখে জল এসে গেল তাঁর। মুখ থেকে বেরিয়ে গেল তাঁর বহু কষ্টের উপলব্ধির কথা।
আর তা দেখে বসে থাকতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রীও। প্রধান বিচারপতিকে আশ্বস্ত করতে চেয়ার ছেড়ে বলতে উঠতে হল প্রধানমন্ত্রীকে, তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা না থাকলেও।
নজরকাড়া এই ঘটনাটা ঘটল রবিবার, দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে। দেশের সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিদের যৌথ সম্মেলনে।
কেন ভেঙে পড়লেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর?
মামলার সংখ্যার তুলনায় দেশের আদালতগুলোয় বিচারপতিদের অপ্রতুলতার জন্য। বিচারপতি ঠাকুরের ভাষণের ছত্রে ছত্রে ফুটে বেরল তাঁর অসহায়তার কথা। আবেগঘন ভাষণে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এ দিন বলেছেন, ‘‘মামলার পাহাড় জমে যাচ্ছে দেশের আদালতগুলোয়। আর রোজই সেই পাহাড়ের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। তা নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা পেরে উঠছি না। সত্যি-সত্যিই আর পেরে উঠছি না। আমাদের অসম্ভব চাপের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে। অত শত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটাতে গিয়ে আমাদের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। ভুলের সম্ভাবনা বাড়ছে। একশো জনের কাজ এক জনকে করতে হচ্ছে। এক লাফে সংখ্যাটা (বিচারপতির) কম করে দশ গুণ বাড়ানো উচিত। কোনও সরকারই এ ব্যাপারে কিছু করছে না।’’
মানে, ‘কোয়ান্টাম জাম্প’। এক পা, দু’ পা করে এগোনো নয়। এলেনা ইসিনবায়েভা বা সের্গেই বুবকার দেওয়া পোল ভল্টের ‘লাফ’-এর মতো দেশের আদালতগুলোয় বিচারপতিদের দ্রুত সংখ্যা-বৃদ্ধিটা যে খুব জরুরি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এ দিনের ভাষণের সেটাই ছিল মূল উপজীব্য।
আরও পড়ুন- মাল্যর পাসপোর্ট বাতিল করল সরকার, প্রত্যর্পনের তোড়জোড় শুরু
বিচারপতি ঠাকুর এও বলেছেন, ‘‘সারা দেশে সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য সব রকমের চেষ্টা চলছে। কিন্তু ওই কর্মসূচিকে সফল করে তোলার পথে একের পর এক মামলার পাহাড় ডিঙোতে হবে। আর তার জন্য দ্রুত বাড়ানো উচিত বিচারপতিদের সংখ্যা।’’
বিচারপতি ঠাকুরের ওই ভাষণ শেষ হওয়ার পর কিছু ক্ষণ থমথমে হয়ে পড়ে বিজ্ঞান ভবনের পরিবেশ। চলতে থাকে মুখ চাওয়াচায়ি।
একেবারে সামনের সারিতেই বসে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, এই সম্মেলনে তো তাঁর তেমন বিশেষ কিছু বলার নেই। এসেছেন উদ্বোধন করতে। বলার কথাও ছিল না। কিন্তু, তোপটা যখন সরাসরি সরকারের দিকেই, তখন তো তাঁকে কিছু বলতেই হয়।
তাই বলতে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। খুব তড়িঘড়ি এ ব্যাপারে যা করণীয়, তা করবেন বলে আশ্বস্ত করলেন দেশের প্রধান বিচারপতিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy