বৃহস্পতিবার জনস্বার্থ মামলার শুনানি করবেন গগৈ। —ফাইল চিত্র।
ধর্ষণের অভিযোগ আনায় প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছিলেন বিজেপি নেতা ও তাঁর সহযোগীরা। দিন পনেরো আগেই তা নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। কিন্তু সেই চিঠি তাঁর হাতে পৌঁছয়নি বলে জানিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। বুধবার সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আজ সকালে কাগজে চিঠির কথা পড়লাম। গতকালই বিষয়টি কানে এসেছিল। দুর্ভাগ্যবশত ওই চিঠি এখনও দিনের আলো দেখেনি। কাগজ পড়ে মনে হচ্ছে, আমি হয়ত চিঠিটা চেপে গিয়েছি। কিন্তু আদতে তা নয়। ওই চিঠি হাতেই পাইনি আমি। ধ্বংসাত্মক এবং বিভ্রান্তিকর পরিবেশেই গঠনমূলক কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি আমরা। সে ক্ষেত্রে মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা ঘটে।’’
চিঠি কেন তাঁর হাতে পৌঁছয়নি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন গগৈ। হিন্দিতে ওই চিঠি লেখা হয়েছিল বলে শীর্ষ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। চিঠিতে লেখা বক্তব্যের উপর একটি নোট তৈরি করে জমা দিতে বলেছেন আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলকে। সেই সঙ্গে উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে সম্প্রতি যে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল, যাতে মামলা গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল, বৃহস্পতিবার সেই মামলার স্বতঃপ্রণোদিত শুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গগৈ। সেখানে নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের রিপোর্টও পড়ে দেখা হবে।
প্রায় একবছর আগে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন নির্যাতিতা ওই কিশোরী। সেই থেকে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কুলদীপ সেঙ্গার নিজে জেল থেকে ফোন করে তাঁদের হুমকি দেন, পুলিশের তরফেও মামলা তুলে নেওয়ার চাপ দেওয়া হয় বলে দাবি তাঁর পরিবারের। সেই নিয়ে গত ১২ জুলাই প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। চিঠি দেন ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং উত্তরপ্রদেশ সরকারকেও। রাজ্যের আদালতে ন্যায্য বিচার পাওয়ার আশা নেই, তাই মামলা দিল্লিতে সরিয়ে যাওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আলাদা করে চিঠি দেন তাঁর মা-ও।
আরও পড়ুন: শাসাচ্ছে বিধায়কের দল, আদালতকে আগেই জানিয়েছিল উন্নাও-নির্যাতিতার পরিবার
আরও পড়ুন: সংসদে হইচই উন্নাও নিয়ে
কিন্তু সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করার আগেই রবিবার পথ ‘দুর্ঘটনা’র কবলে পড়েন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। তাতে দু’জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি নির্যাতিতা ও তাঁদের পারিবারিক আইনজীবী। দু’জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। তবে এই ঘটনাকে নিছক দুর্ঘটনা বলে মানতে নারাজ নির্যাতিতার পরিবার। কুলদীপ সেঙ্গারই চক্রান্ত করে ‘দুর্ঘটনা’ ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের। আর তাতেই মামলা অন্য দিকে মোড় নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিঠি হাতে পেয়েও প্রধান বিচারপতি কেন ব্যবস্থা নিলেন না, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করে। তার পরই এ দিন নিজের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি গগৈ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy