হঠাৎ বন্ধ। আবার তিন দিন পরেই চালু হয়ে গেল মুদ্রা উৎপাদন। কেন বন্ধ আর কেনই বা ফের মুদ্রা তৈরির কাজ শুরু, সেই ধাঁধা রয়েই গেল।
কেন্দ্রের নির্দেশে শুক্রবার ফের মুদ্রা তৈরি চালু হয়েছে কলকাতা-সহ দেশের চারটি টাঁকশালেই। আলিপুর টাঁকশালের পদস্থ কর্তা এবং কর্মী ইউনিয়নের নেতারা জানাচ্ছেন, আপাতত একটি শিফ্টেই কর্মীরা টাঁকশালে কাজ করবেন। তবে কবে পুরোদমে কবে চালু হবে, সেই বিষয়ে কেউ কোনও আশ্বাস দিতে পারেননি।
কিন্তু আচমকাই মুদ্রা তৈরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিন দিন কাটতে না-কাটতেই উৎপাদন চালু করে দেওয়া হল কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। তা হলে কি কর্মী ইউনিয়নগুলির চাপেই কর্তৃপক্ষ পিছু হটতে বাধ্য হলেন? সরকারি স্তরের কেউ এর স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি।
তবে সর্বভারতীয় টাঁকশাল এবং ছাপাখানা ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সভাপতি বিশ্বনাথ সিকদার বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবং অর্থসচিবের সঙ্গে দেখা করে আমরা টাঁকশালগুলির সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। তার পরেই রাতে উৎপাদন চালু করে দেওয়ার নির্দেশ চলে আসে। কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি বা কোনও আমলার একক সিদ্ধান্তেই এমনটি হয়েছিল বলেই আমাদের মনে হচ্ছে।’’
সিকিওরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার নির্দেশে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে সাময়িক ভাবে দেশের চারটি টাঁকশালে মুদ্রা তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। দেশের টাঁকশালগুলিতে প্রচুর পরিমাণে খুচরো মুদ্রা জমে যাওয়ায় কেন্দ্রের নির্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। বৃহস্পতিবার চারটি টাঁকশালের ইউনিয়নের নেতারা দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জেটলির সঙ্গে দেখা করে কর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং সেই সঙ্গে আশঙ্কার কথা জানান। তার পরে, শুক্রবার থেকে আবার মুদ্রা তৈরি চালু করার নির্দেশ আসে বলে কর্মী সংগঠন সূত্রের খবর।
ক্যালকাটা মিন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সহ-সভাপতি বিজন দে জানান, এ দিন আলিপুরে মূলত পাঁচ টাকার মুদ্রাই তৈরি হয়েছে। আলিপুর টাঁকশালের এক পদস্থ কর্তা জানান, সকাল থেকে একটি শিফ্টেই কাজ হয়েছে। সোমবার থেকে টাঁকশালের সব কর্মী একটি শিফ্টেই কাজ করবেন। কবে সব শিফ্টে উৎপাদন শুরু হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
কলকাতা, মুম্বই, নয়ডা ও হায়দরাবাদের টাঁকশালে ২৫০ কোটি মুদ্রা জমে রয়েছে অর্থনৈতিক সূত্রের খবর। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এখনও সেই মুদ্রা নিয়ে যায়নি। মূলত বাজারে খুচরোর চাহিদা না-থাকায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কও খুচরো মুদ্রা তুলে নিয়ে গিয়ে নিজেদের ভল্টে ফেলে রাখতে পারছে না বলেই জানাচ্ছে ব্যাঙ্ক শিল্প মহল। ব্যাঙ্কগুলিও গ্রাহকদের কাছ থেকে খুচরো নিচ্ছে না। দোকান-বাজারেও খুচরোয় জিনিস কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন অনেকে।
এই পরিস্থিতিতে খুচরো কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy