E-Paper

ভর্তুকির গ্যাসে আধারের তথ্য যাচাই ঘিরে জটিলতা

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বিশেষত শহরাঞ্চলের বহু গ্রাহক বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ, চোখের মণির স্ক্যান কিংবা মুখাবয়বের ছবি) তথ্য ‘চুরি’ যাওয়ার ভয়ে সুরক্ষাকবচের খোঁজ নিতে বিক্রেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২০
An image of LPG Gas

—প্রতীকী চিত্র।

উজ্জ্বলা যোজনা-সহ ভর্তুকিযোগ্য রান্নার গ্যাসের (এলপিজি) সব গ্রাহকের আধার যাচাই করতে তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রের দেওয়া নির্দেশকে ঘিরে আশঙ্কা ছিলই। সোমবার থেকে তা নিয়ে গ্রাহক ও গ্যাস বিক্রেতাদের (ডিস্ট্রিবিউটর) মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বিশেষত শহরাঞ্চলের বহু গ্রাহক বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ, চোখের মণির স্ক্যান কিংবা মুখাবয়বের ছবি) তথ্য ‘চুরি’ যাওয়ার ভয়ে সুরক্ষাকবচের খোঁজ নিতে বিক্রেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আবার বহু প্রবীণ গ্রাহকের আঙুলের ছাপ আবছা হয়ে যাওয়ায় সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। তেল সংস্থাগুলিকে এই সব সমস্যার কথা জানিয়েছেন ডিস্ট্রিবিউটরেরা। তবে এ দিন সরকারি ছুটি থাকায় তাদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

গত ১৮ অক্টোবর তেল ও গ্যাস মন্ত্রক ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম ও হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামের কর্ণধারদের চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশের কথা জানায়। যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভর্তুকিযোগ্য সব ১৪.২ কেজি সিলিন্ডারের গ্রাহকদের বায়োমেট্রিক তথ্যের মাধ্যমে আধার যাচাই করার কথা বলা হয়। তেল সংস্থাগুলি বিক্রেতাদের জন্য ৩১ ডিসেম্বরের সময়সীমা বেঁধে দিলেও, গ্রাহকদের সরাসরি তারা কিছু না জানানোয় বিভ্রান্তি বাড়ে। কেন্দ্রের তরফেও নির্দেশিকা জারি হয়নি। ক্রেতারা যা খবর পেয়েছেন, তা হয় ডিস্ট্রিবিউটরদের থেকে বা অন্য কোনও ভাবে। ফলে তাঁদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, বায়োমেট্রিক তথ্য না মিললে কি কিছু জায়গায় সামান্য যেটুকু ভর্তুকি (সরকারি ভাবে যাকে বাড়তি পরিবহণ খরচ দেখানো হয়) মেলে, সেটাও বন্ধ হবে? তেল মন্ত্রক বা সংস্থাগুলির নির্দেশে অবশ্য এমন কিছু বলা হয়নি।

তার উপরে এত অল্প সময়ে বিপুল গ্রাহকের তথ্য যাচাই শেষ করা নিয়ে আগেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা। সোমবার ইন্ডেন এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (পশ্চিমবঙ্গ) প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিজনবিহারী বিশ্বাস ও ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (এইচপি গ্যাস) এলপিজি ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক
সঞ্জয় আগরওয়াল জানান, সম্প্রতি বায়োমেট্রিক তথ্য ‘হাতিয়ে’ আর্থিক প্রতারণা হয়েছে। ফলে বহু গ্রাহক জানতে চাইছেন, গ্যাসের ক্ষেত্রে এই তথ্য দিলে কী সুরক্ষকবচ থাকবে? সেটা নিশ্চিত না হলে কী ভাবে দেবেন, তা নিয়েও সংশয়ী তাঁরা।

অল ইন্ডিয়া ভারত গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (পূর্বাঞ্চল) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুকোমল সেন জানান, যাঁরা এর পরেও বায়োমেট্রিক দিতে আসছেন, তাঁদের মধ্যে বহু প্রবীণেরই আঙুলের ছাপ মিলছে না। ফলে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। আপাতত বিক্রেতারা আঙুলের ছাপ নেওয়ার যন্ত্র নিজেদের টাকা দিয়ে কিনছেন। চোখের মণির স্ক্যান করার যন্ত্র আরও দামি। পরে তা কিনলে ওই প্রবীণদের (যাঁদের বায়োমেট্রিক সংগ্রহ হচ্ছে না) তথ্য যাচাই হবে। তখন যোগাযোগ করতে মোবাইল নম্বর ইত্যাদি নিয়ে রাখছেন।

সূত্রের দাবি, তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু গ্রাহকের উদ্যোগের অভাবেও সমস্যা হচ্ছে। অনেকেরই বাবা-মায়ের নামে গ্যাসের সংযোগ। অথচ তাঁদের কেউ মারা গেলেও নাম পাল্টানো হয় না। তেল সংস্থা ও বিক্রেতামহলের খবর, প্রয়াত ব্যক্তির নামে সংযোগ চালানো বেআইনি। এতে সিলিন্ডার থেকে দুর্ঘটনা ঘটলে আইনমাফিক বিমার সুবিধাও মেলে না। এ নিয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও অধিকাংশই তাতে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ। তাঁরা বলছেন, এখন আধার তথ্য যাচাইয়ের সময়ে সংযোগ রাখতে চাইলে নাম বদলাতে হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

LPG Gas LPG Subsidy aadhaar card

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy