পঞ্চাশ শতাংশ হারে ঘুষের অভিযোগ বনাম একচল্লিশটি এফআইআর। কর্নাটকের পরে বিজেপি-শাসিত মধ্যপ্রদেশে ভোটের আগে রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের তোলা দুর্নীতির অভিযোগ নতুন মোড় নিল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’। তিনি ঘুষ খাবেন না, কাউকে খেতেও দেবেন না। কিন্তু হালফিলে কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের সবথেকে বড় অস্ত্র ছিল ‘৪০ শতাংশ কমিশন’ নেওয়ার অভিযোগ। এ বার মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সে রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ‘৫০ শতাংশ কমিশন’ নেওয়ার অভিযোগ হাতিয়ার হিসেবে পেয়ে গেল কংগ্রেস।
দু’দিন আগে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা টুইটারে অভিযোগ তুলেছিলেন, মধ্যপ্রদেশের ঠিকাদারদের সংগঠন মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখে অভিযোগ তুলেছেন, রাজ্য সরকারের কাজ করলে পাওনার ৫০ শতাংশ অর্থ কমিশন বা ঘুষ দিলে তবেই টাকা মেলে। এই অভিযোগের পরে প্রিয়ঙ্কা, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এবং কংগ্রেস নেতা অরুণ যাদবের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট যাঁরা দেখভাল করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রথমে ইন্দোরে পুলিশ এফআইআর দায়ের করে। তার পরে রাজ্য জুড়ে মোট ৪১টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বিজেপির স্থানীয় নেতা নিমেষ পাঠকের অভিযোগের ভিত্তিতে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। প্রতারণা, অসততা, মানহানির লক্ষ্যে জালিয়াতির অভিযোগে এই সব এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ঠিকাদারদের ওই চিঠি জাল বলেও পুলিশের অভিযোগ।
কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছে, এতে আখেরে তাঁদের লাভই হল। মধ্যপ্রদেশে শিবরাজ সিংহ চৌহানের সরকার এ নিয়ে হইচই করে আরও ৫০ শতাংশ কমিশন নেওয়ার অভিযোগ প্রচারের আলোয় নিয়ে এল। কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে ৪১টি এফআইআর দায়ের করা নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “বিজেপির কাজই হল ভয় দেখানো। আর আমরা বলি, ভয় পেয়ো না।”
পুলিশের এফআইআর নিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার দুর্নীতির মামলা। কতগুলো ক্ষেত্রে বিজেপি এফআইআর দায়ের করবে? কংগ্রেস নেতৃত্ব ওই অভিযোগ তোলার পরেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান রাজ্যের গোয়েন্দা দফতরকে এর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার পরে তিনি দাবি করেন, ঠিকাদারদের লেখা ওই চিঠিটি জাল। চিঠির লেখক, সংগঠনের ঠিকানার কোনও অস্তিত্ব নেই। কমল নাথের পাল্টা যুক্তি, ওই চিঠি জাল হোক বা সত্যি, রাস্তায় মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই জানা যাবে, এমন ১০০ থেকে ২০০ চিঠি রয়েছে। কংগ্রেস নেতা অরুণ যাদবের বক্তব্য, এ সব এফআইআর দায়ের করে কংগ্রেসকে ভয় পাওয়ানো যাবে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)