Advertisement
E-Paper

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সামনেই হেনস্থা যুবকের

স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মন্ত্রীর সামনেই কংগ্রেস কর্মীদের হেনস্থার মুখে পড়লেন বাহারউদ্দিন নামে ওই যুবক। আজ এমনই ঘটনা ঘটে করিমগঞ্জে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরের পর আজই প্রথম করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে পৌঁছন অসমের স্বাস্থ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী নজরুল ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৫ ০৩:০০
বাহারউদ্দিনের সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রী অজিত সিংহ।— নিজস্ব চিত্র।

বাহারউদ্দিনের সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রী অজিত সিংহ।— নিজস্ব চিত্র।

স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নালিশ জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মন্ত্রীর সামনেই কংগ্রেস কর্মীদের হেনস্থার মুখে পড়লেন বাহারউদ্দিন নামে ওই যুবক। আজ এমনই ঘটনা ঘটে করিমগঞ্জে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরের পর আজই প্রথম করিমগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে পৌঁছন অসমের স্বাস্থ্য ও খাদ্য সরবরাহ দফতরের মন্ত্রী নজরুল ইসলাম।

সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়া ও আবগারি বিভাগের মন্ত্রী অজিত সিংহ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিভাগের উত্তর পূর্বাঞ্চলের যুগ্ম সঞ্চালক পার্থ গগৈ। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ, ব্লাড ব্যাঙ্ক পরিদর্শন করেন তাঁরা।

মন্ত্রীকে সামনাসামনি পেয়ে সমস্যার কথা বলতে ভিড় জমান রোগী, তাঁদের পরিজনরা। চিৎকার করে অনেকে বলতে থাকেন— হাসপাতালে পানীয় জল, ওষুধপত্র কিছুই পাওয়া যায় না। লিফটও অচল। ২০১৩ সালের হাসপাতালের নতুন ভবন উদ্বোধনের দিনই লিফটই খারাপ হয়। এখনও তা মেরামত করা হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময়ই দক্ষিণ করিমগঞ্জের বাসিন্দা বাহারউদ্দিন ব্লাড ব্যাঙ্কে ঢোকেন। মন্ত্রী সামনেই পৌঁছে যান। তিনি বলতে থাকেন— ‘‘হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসকের খোঁজ মেলে না। কখনও কখনও দেখা মিললেও, তাঁরা মোবাইলে কথা বলতেই ব্যস্ত থাকেন।’’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সামনেই স্বাস্থ্য বিভাগের বিরুদ্ধে নালিশ শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। করিমগঞ্জ হাসপাতাল পরিচালন সমিতির সভাপতি কমলাক্ষবাবুই। বাহারউদ্দিনের কোনও আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে কি না, তা জানতে চান বিধায়ক। সদুত্তর দিতে পারেননি ওই যুবক। এর পরই বিধায়কের অনুগামীরা বাহারউদ্দিনকে ঘিরে ফেলেন। রীতিমতো জেরার মতো করে জানতে চান— কাঁরা তাঁকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে এ সব অভিযোগ করতে পাঠিয়েছে? পরিস্থিতি সামলাতে ওই যুবককে ভিড় থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যান আবগারি মন্ত্রী অজিত সিংহ।

পরিদর্শনের পর হাসপাতাল থেকে দুই মন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর ফের বাহারউদ্দিনকে ঘিরে ধরেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশকর্মীরা তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন।

পরে করিমগঞ্জের সরকারি চিকিত্সকদের নিয়ে জেলাশাসকের দফতরে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী নজরুল ইসলাম। সেখানে হাজির ছিলেন জেলার তিন বিধায়ক। তাঁরা গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি করিমগঞ্জ জেলাসদরে ২০০ শয্যার হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা দেওয়ার দাবি জানান। বিধায়করা বলেন, ‘‘বরাক উপত্যকা এমনিতেই অবহেলিত। এখানকার রোগীদের উন্নত চিকিত্সার জন্য গুয়াহাটিতে নিয়ে যেতে হয়। তাতে সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ।’’

সে দিকে তাকিয়েই বরাকের জেলাগুলিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও উন্নত করার দাবি জানান বিধায়ক সিদ্দেক আহমেদ, কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, কৃপানাথ মালাহ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, করিমগঞ্জ হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত রয়েছে।

তবে অসমে চিকিৎসকের অভাব থাকার কথা তিনি স্বীকার করেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘অসমে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মেডিক্যাল কলেজ না থাকায় চিকিত্সকের অভাব রয়েছে। তবে, ইতিমধ্যে যোরহাট, তেজপুর, বরপেটা মেডিক্যাল কলেজ থেকে নতুন চিকিত্সক পাস করে কাজে যোগ দেওয়ায় সঙ্কট কিছুটা হলেও কমেছে।’’ মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে নতুন কয়েকটি মেডিক্যাল কলেজ গড়তে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর, ধুবড়ি, নগাঁও জেলায় সেগুলি তৈরি করা হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘করিমগঞ্জ সাব-ডিভিশন থাকাকালীন যত জন চিকিত্সক ছিলেন, জেলায় উন্নীত হওয়ার পরও তা বদলায়নি। তাতেই সমস্যা বেড়েছে।’’ চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে আশ্বাস দিলেও, করিমগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানিয়ে দেন।

উল্লেখ্য, জেলায় মেডিক্যাল কলেজ তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন পূর্বতন স্বাস্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

congress karimganj hospital medicine ajit singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy