কয়েকটি শরিক দলের বার্তার জেরে অস্তিত্ব নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল আগেই। দিল্লির বিধানসভা ভোটের পরে এ বার বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস!
তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মণিকম টেগোর সোমবার দিল্লির ভোটে কংগ্রেসের আলাদা লড়াই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের জন্যই ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হয়েছিল। বিধানসভা ভোটগুলির জন্য আলাদা ভাবে রাজ্যওয়া়ড়ি সমঝোতা হতে পারে।’’ চলতি বছরের শেষেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। আগামী বছরের গোড়ায় উত্তরপ্রদেশের। তার আগে ‘রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ’ মণিকমের এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, দিল্লির বিধানসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক, আম আদমি পার্টি (আপ) এবং কংগ্রেসের আলাদা লড়াইয়ের প্রসঙ্গে আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের পুত্র তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেছিলেন, ‘‘এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই। ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হয়েছিল ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিজেপিকে হারানোর জন্য।’’ কার্যত একই যুক্তি সোমবার শোনা গিয়েছে মণিকমের গলাতেও।
লোকসভা ভোটে দিল্লিতে জোট বেঁধে লড়লেও বিধানসভায় অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আপ এবং কংগ্রেস আলাদা ভাবে লড়েছে। প্রচারপর্বে প্রকাশ্যে দু’দলের তরজা চলেছে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, উদ্ধবসেনার মতো ‘ইন্ডিয়া’র সহযোগী দল আপ-কে সমর্থন জানানোয় জোটের অন্দরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল কংগ্রেস! যদিও লোকসভা ভোটের পরে কেজরীই প্রথমে হরিয়ানা এবং দিল্লির বিধানসভা ভোটে আলাদা ভাবে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করেছিলেন। গত অক্টোবরে হরিয়ানায় আলাদা লড়ে বিজেপির জয়ের পথ প্রশস্ত করেছিল আপ। দিল্লিতে তার প্রতিশোধ নিয়েছে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন:
পরিসংখ্যান বলছে, ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক আপ এবং কংগ্রেসের ভোট কাটাকাটির ফলে দিল্লিতে ১৪টি আসনে জয় নিশ্চিত করে নিয়েছে বিজেপি। এর মধ্যে ১৩টিতে বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আপ। একটিতে কংগ্রেস। দিল্লির এমন ফলের জন্য দু’দলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই দায়ী বলে মনে করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, দিল্লিতে যেমন কংগ্রেস ‘অনমনীয়’ মনোভাব দেখিয়েছে, তেমনই এর আগে হরিয়ানার বিধানসভা ভোটে আপ কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে চলেনি। বস্তুত, শুধু হরিয়ানা নয় লোকসভা ভোটের পরে জম্মু ও কাশ্মীরের ভোটের আলাদা ভাবে লড়েছিল আপ। এই আবহে দিল্লির ভোটের পরে কংগ্রেস কৌশলে তেজস্বী-অখিলেশদের উপর চাপ বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।