অতীতে কে কে তার আশীর্বাদ নিয়েছেন, ঘনিষ্ঠ হয়েছেন— তা নিয়ে আজ টুইটার যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় জোধপুরের আদালত রায় জানাতেই। অনেকে স্বঘোষিত ধর্মগুরু আসারাম বাপুর সঙ্গে অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণীদের নাম বা ছবি তুলে আনলেও টুইট-তরজার কেন্দ্রে উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে ৪৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো। তাতে রয়েছে আসারামের সঙ্গে মোদীর অল্প বয়সের ছবি। এটি টুইট করে কংগ্রেস তার সঙ্গে জুড়ে দেয় ইশপের গল্পের এক নীতিবাক্য। যার বক্তব্য, মানুষ চেনা যায় তার সঙ্গীদের দিয়ে। অভিনেতা-নির্দেশক ফারহান আখতার এর প্রতিবাদ করেছেন। গুজরাতের বিতর্কিত প্রাক্তন পুলিশকর্তা আবার দাবি করেছেন, আদৌ ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়নি আসারাম!
সাধুসন্ত বা স্বঘোষিত ধর্মগুরুদের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। ধর্ষণের দায়ে আসারামের শাস্তি হতেই এমন আক্রমণ তাই প্রত্যাশিতই। এরই পাল্টা হিসেবে অনেকে আবার মনে করে দিয়েছেন, কংগ্রেসও একই দোষে দোষী। তাঁরা যে সব ছবি দিয়েছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, দিগ্বিজয় সিংহ মাথা নুইয়ে আশীর্বাদ নিচ্ছেন আসারামের। আসারাম গ্রেফতার হওয়ার পরে এই দিগ্বিজয়ই অবশ্য ২০১৩ সালে খেদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালে ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে জমি দেওয়ার জন্য।
রাজনীতির এই চাপানউতোরের মধ্যেও যুক্তিবাদী সুর উঠে এসেছে অরাজনৈতিক মহল থেকে। ফারহান আখতার যেমন এই ধরনের চাপানউতোরের প্রতিবাদ করে টুইটারে লিখেছেন, ‘‘দেখা গেল আসারাম শিশু ধর্ষক। দোষী সাব্যস্তও হয়েছে। ভাল। তবে তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি শেয়ার করাটা দয়া করে বন্ধ করুন। আসারাম বিকৃতকাম প্রমাণ হওয়ার আগে কেউ যদি তার পাশে থাকেন, সেটা কোনও অপরাধ নয়। আসুন আমরা সঙ্গত আচরণ করি। ধরে নিই আমাদের মতো তিনিও (মোদী) জানতেন না।’’
আরও পড়ুন: টাঙ্গা চালক থেকে ১০ হাজার কোটির মালিক! আসারামের সাম্রাজ্য বিস্তারের কাহিনি
কেউ কি নেই আসারামের পাশে? এটা ঘটনা, গুরমিত রাম রহিমের জেল হওয়ার পরে তার পোষা গুন্ডারা যেমন হাঙ্গামা করেছিল, আজ অন্তত তেমন কিছুই করেননি আসারামের ভক্তরা। চুপ থেকেছেন। তবে মুখ খুলে অবাক করা যুক্তি দিয়েছেন গুজরাত পুলিশের প্রাক্তন ডিআইজি ডি জি বানজারা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মামলটি আদৌ ধর্ষণের নয়।... বিচারের সময়ে নিগৃহীতা এক বারও বলেনি, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এফআইআরে শুধু লেখা আছে, তাকে অসংযত ভাবে ছোঁয়া হয়েছিল। শুধু সেই অভিযোগেই বাপুকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।’’
নিজেকে আসারামের একান্ত অনুগামী হিসেবে দাবি করে বানজারা বলেন, ‘‘এক জন মর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে আমি কখনও বাপু ও আশ্রমের সঙ্গে আমার সম্পর্ক গোপন করিনি।... বাপুকে কলঙ্কিত করার জন্য খুব খারাপ প্রচার চলছে। এটা দেশের, হিন্দুদের ও সনাতন ধর্মের পক্ষে ভাল নয়।’’ ভুয়ো সংঘর্ষের নামে অন্তত ৮ জনকে হত্যার অভিযোগে ৯ বছর জেলে কাটিয়েছেন বানজারা। ছাড়া পেয়েছেন গত বছর অগস্টে। এ বার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন তিনি।
এ দিনই অন্য একটি টুইটে কংগ্রেস আজ দেখাতে চেয়েছে, বিজেপি দলটাই নারীবিরোধী। তাদের নেতাদের নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের একটি তালিকা পোস্ট করেছে তারা। এর শীর্ষক, ‘‘দেওয়ালে দেওয়ালে আয়না, কে সবচেয়ে বেশি নারীবিদ্বেষী— মিলিয়ে নিন।’’ তালিকার শীর্ষে মোদী। রয়েছে যোগী আদিত্যনাথ, অরুণ জেটলি, রামবীর ভট্টি, মোহন ভাগবত, মনোহরলাল খট্টার, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, বাবুলাল গৌড়ের মন্তব্যও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy