Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
তাল রাখতে নাজেহাল

কংগ্রেস চায় ২ সমাজবাদীকেই

বাপ বড় না বেটা! এই গেরোতেই হিমশিম খাচ্ছে দশ জনপথ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে সব দলের শীর্ষ নেতাকে জনে জনে ফোন করছেন সনিয়া গাঁধী। হোঁচট খেতে হল সমাজবাদী পার্টির বেলায়।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০৩:৫১
Share: Save:

বাপ বড় না বেটা! এই গেরোতেই হিমশিম খাচ্ছে দশ জনপথ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী জোটের সলতে পাকাতে সব দলের শীর্ষ নেতাকে জনে জনে ফোন করছেন সনিয়া গাঁধী। হোঁচট খেতে হল সমাজবাদী পার্টির বেলায়। সে দলে এত দিন চলেছে বাপ-বেটার ঝগড়া। দলের ‘নেতাজি’কে নেতা মানেন না ছেলে অখিলেশ যাদব। তার উপর আজই মুলায়ম সিংহ যাদবকে সামনে রেখে নতুন দল গড়ার কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন কাকা শিবপাল। ফলে কোন সমাজবাদীকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী মঞ্চ তৈরি হবে— প্রশ্নটা রয়েই গেল।

কংগ্রেস অবশ্য তাল রেখে চলতে চাইছে দুই শিবিরের সঙ্গেই। অখিলেশের সঙ্গে রাহুল গাঁধীর সম্পর্ক সহজ। উত্তরপ্রদেশের ভোটের পরেও তাতে চিড় ধরেনি। আবার মুলায়ম সিংহ যাদবকেও হাতছাড়া করতে চাইছেন না সনিয়া।

অতীতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বারবার ডিগবাজি খেয়েছেন মুলায়ম। ফলে তাঁকেও সঙ্গে রাখতে চাইছে দশ জনপথ।

বিরোধী-মঞ্চ তৈরির গোড়াতেই তাই অখিলেশকে ফোন করেছিলেন রাহুল। আর মুলায়মের মানভঞ্জন করতে ফোন করেন সনিয়া। উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে প্রকাশ্যেই কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির জোটকে খারিজ করে দিয়েছিলেন মুলায়ম। বলেছিলেন, তাঁর অমতেই হয়েছে এই জোট। লালুপ্রসাদ অবশ্য বাপ-বেটার সন্ধি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সফল হননি। কংগ্রেস সূত্রের মতে, বিরোধী মঞ্চের ব্যাপারে লালুর সঙ্গে যখন সনিয়ার কথা হয়, তখনই মুলায়মকে আলাদা করে ফোন করার পরামর্শ দেন আরজেডি-প্রধান।

আরও পড়ুন:মুলায়মকে মুখ করে নতুন দল শিবপালের

কংগ্রেসের এক নেতা জানাচ্ছেন, বাপ-বেটার কোন্দল বাড়াতে গোড়া থেকেই কলকাঠি নাড়ছে বিজেপি। কখনও অমর সিংহকে কাজে লাগিয়েছেন। আর যে শিবপাল আজ নতুন দল গড়ার কথা ঘোষণা করলেন, তিনিও কিছু দিন আগে অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন। অনেকেই বলছেন, বৃদ্ধ মুলায়ম ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য খোয়াচ্ছেন।

তাঁকে কখন কে কী বুঝিয়ে কার্যসিদ্ধি করে নেন, বোঝা দায়। অন্য কোনও দলের ক্ষেত্রে এ ভাবে দু’জনকে ফোন করতে হয়নি কংগ্রেসকে। লালুর পাশাপাশি তাঁর ছেলে তেজস্বী কিংবা শরদ পওয়ারের পাশাপাশি সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে হয়নি। একমাত্র সমাজবাদী শিবিরের ক্ষেত্রে ফোন করতে হল দু’জনকেই।

কংগ্রেস বুঝছে, নেতৃত্বের সঙ্কট তো ছিলই, এখন ভাঙনের মুখে দাঁড়ানো সমাজবাদী শিবিরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের নিয়েও টানাটানি চলতে থাকবে কাকা-ভাইপোয়। এবং এ সব যত দিন চলবে, তত দিন জাতীয় রাজনীতিতেও তার খেসারত দিয়ে যেতে হবে। মোদী-বিরোধী মঞ্চের একটি মহড়া হিসেবে ক’দিন আগেই দিল্লিতে মধু লিময়ের ৯৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে কংগ্রেস-বামেদের প্রতিনিধিরা থাকলেও আসেননি সমাজবাদী পার্টির কেউ। উত্তরপ্রদেশে মাস খানেকের মধ্যেই পুরভোট। সেখানে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে বোঝাপড়াও এখন শিকেয় ঝুলছে। এর উপর মুলায়মকে নিয়ে শিবপালের নতুন দল পাকাপাকি হলে দুই শিবিরের সঙ্গেই বোঝাপড়া বাড়াতে হবে কংগ্রেসকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE