Advertisement
E-Paper

Congress: আঞ্চলিক দল পারবে না, বিজেপির সঙ্গে লড়বে কংগ্রেসই, চিন্তন শিবিরে বললেন রাহুল

বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসই নেতৃত্ব দেবে বুঝিয়ে রাহুল বলেছেন, “এটা বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শের সঙ্গে কংগ্রেসের মতাদর্শের লড়াই। আঞ্চলিক দলগুলির নিজস্ব পরিসর রয়েছে। কিন্তু তারা বিজেপিকে হারাতে পারবে না। কারণ তাদের কোনও মতাদর্শই নেই।”

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২২ ০৫:১০
উদয়পুরে নব সঙ্কল্প শিবিরে রাহুল গান্ধী।

উদয়পুরে নব সঙ্কল্প শিবিরে রাহুল গান্ধী। ছবি পিটিআই

গোয়া, ত্রিপুরায় তৃণমূলের লড়তে যাওয়ার পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান যুক্তি ছিল, বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস ঠিক মতো লড়াই করতে পারছে না।

কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির বক্তব্য ছিল, কংগ্রেসের এখন আর বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি নেই। কংগ্রেসের অন্দরেও দাবি উঠেছে, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, অন্ধপ্রদেশের মতো রাজ্যে কংগ্রেসকে আঞ্চলিক দলের নেতৃত্ব মেনে নিতে হবে। প্রশান্ত কিশোরও কংগ্রেসকে একই পরামর্শ দিয়েছিলেন।

রবিবার তৃণমূল, টিআরএস, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের মতো আঞ্চলিক দলকে পাল্টা নিশানা করে রাহুল গান্ধী বললেন, বিজেপির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলি লড়াই করতে পারবে না।
উদয়পুরে চিন্তন শিবিরের কংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোটের রাস্তা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেসই নেতৃত্ব দেবে বুঝিয়ে রাহুল বলেছেন, “এটা বিজেপি-আরএসএসের মতাদর্শের সঙ্গে কংগ্রেসের মতাদর্শের লড়াই। আঞ্চলিক দলগুলির নিজস্ব পরিসর রয়েছে। কিন্তু তারা বিজেপিকে হারাতে পারবে না। কারণ তাদের কোনও মতাদর্শই নেই।”

রাহুলের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘এগুলো রাহুল গান্ধী তাঁর দলের হতাশ কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য বলছেন। এর মধ্যে কোনও বাস্তবতা বা সত্য নেই। কংগ্রেস তার মতাদর্শ দেখাতে একের পর এক রাজ্যে হারছে। সব রাজ্য তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। পড়ে আছে শুধু রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়। সে জন্য আমরা চেষ্টা করছি, বিভিন্ন রাজ্যে এগোনোর। রাহুলের এই কথাকে আমরা কোনও গুরুত্বই দিচ্ছি না।’’

বিজেপির ‘বিভাজনের নীতি’-র বিরুদ্ধে কংগ্রেসের মতাদর্শকে সামনে রেখে দেশের আমজনতার সঙ্গে নতুন করে জনসংযোগ গড়ে তুলতেই আজ সনিয়া গান্ধী কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ‘ভারত ছোড়ো যাত্রা’-র ঘোষণা করেছেন। ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তী থেকে এই যাত্রা শুরু হবে। আঞ্চলিক দলকে নিশানা করলেও তাদের সমালোচনাগুলিকে মেনে নিয়ে রাহুল বলেছেন, মানুষের সঙ্গে কংগ্রেসের যে সংযোগ ছিল, তা ভেঙে গিয়েছে, এটা মেনে নিতে হবে। মাসের পর মাস ধরে, মানুষের মধ্যে থেকে আবার সেই জনসংযোগ তৈরি করতে হবে। তাঁর মন্তব্য, “এটাই রাস্তা। শর্ট-কাট করে হবে না। ঘাম ঝরিয়েই এই কাজ করা হবে।”

একই সঙ্গে রাহুল বলেছেন, আঞ্চলিক দলের পক্ষে এই লড়াই সম্ভব নয়। একেক দলের একেক রকম কৌশল। অনেক ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলি নির্দিষ্ট একটি জাতি বা গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। তারা কংগ্রেসের মতো সকলের প্রতিনিধিত্ব করে না। রাহুলের যুক্তি, “এই কারণেই বিজেপি শুধু কংগ্রেসকে নিশানা করে। আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে কথা বলে না। কারণ বিজেপিও জানে, ওরা বিজেপিকে হারাতে পারবে না। কারণ তাদের কোনও নির্দিষ্ট মতাদর্শ নেই।” চিন্তন শিবিরে কংগ্রেসের অন্দরে যে ভাবে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে, বিজেপি-আরএসএস তো বটেই, আঞ্চলিক দলগুলিতেও তা সহ্য করা হয় না বলে রাহুল তির ছুড়েছেন।

১৯৯৮-এর পাঁচমারি চিন্তন শিবিরে কংগ্রেস জোটনীতির বদলে ‘একলা চলো’ নীতি নিয়েছিল। তার পরে ২০০৩-এ শিমলায় ধর্মনিরপেক্ষ জোটের নীতি নেয়। যার ভিত্তিতে ২০০৪-এ লোকসভা ভোটের পরে ইউপিএ গঠন হয়। এ বার ‘উদয়পুর ঘোষণা’-য় বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসকে নিজের সংগঠনের শক্তির জোরে জমি দখল করতে হবে। তবে গণতন্ত্রের রক্ষায় কংগ্রেস সমমনোভাবাপন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা ও সম্পর্ক তৈরিতেও দায়বদ্ধ। রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জোট করার রাস্তাও খোলা থাকবে।’

কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, এই বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, বিজেপিকে রুখতে হবে বলেই যে কোনও দলের সঙ্গে হাত মেলানো হবে না। যেমন তেলঙ্গানায় টিআরএসের সঙ্গে কংগ্রেস জোট করবে না বলে রাহুল জানিয়ে দিয়েছেন।

জোটের থেকেও রাহুল আজ কংগ্রেসের নিজস্ব শক্তি বাড়ানোর উপরে বেশি জোর দিয়েছেন। দলের নেতাদের প্রতি ‘নালিশ’ জানিয়ে বলেছেন, “আমাদের পুরো আলোচনা দলের ভিতরের বিষয়ে হয়। কে কোন পদ পাচ্ছেন। বাইরে, মানুষের দিকে নজর দিতে হবে। বেশি ভাবনাচিন্তা না করে, জনতার মাঝে গিয়ে বসে পড়তে হবে, সমস্যা বুঝতে হবে। আগে যে সংযোগ ছিল, যা ভেঙে গিয়েছে, তা মেনে নিতে হবে। আবার সংযোগ তৈরি করতে হবে।”

১৯৪২-এ মহাত্মা গান্ধী ‘ভারত ছোড়ো’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তার ৮০ বছর পরে গান্ধী জয়ন্তী থেকেই কংগ্রেস ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা শুরু করেছে। যার মূল লক্ষ্য হবে, রুটিরুজি, চাকরি, কর্মসংস্থানের অভাবকে তুলে ধরা।

রাহুলের বক্তব্য, এক দিকে তরুণদের বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, অন্য দিকে বিজেপি-আরএসএসের ধর্মের নামে বিভাজনের নীতি। এর ফলে দেশে আগুন লাগবে। কংগ্রেসের কাজ হল, আগুন লাগতে না দেওয়া। মানুষকে বোঝানো, এই বিভাজনের ফলে তাদের লাভ হচ্ছে না, লোকসানই হচ্ছে।

Rahul Gandhi Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy