E-Paper

ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজতে গান্ধীর বেলগাভিতে কংগ্রেস

কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, এখন দেশে একই রকম পরিস্থিতি। তাই প্রতিটি রাজ্যকে গান্ধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেস অধিবেশনের শতবর্ষ পালন করতে বলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা অবশ্য কী ভাবে এই কর্মসূচি হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:০৬

— প্রতীকী চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল দলের মধ্যে আশা জাগিয়েছিল। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার ভোটে হার ফের কংগ্রেসকে ধাক্কা দিয়েছে। নতুন বছরে এই পরাজয়ের ফাঁদ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজতে ২৬-২৭ ডিসেম্বর কর্নাটকের বেলগাভিতে কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক বসছে। যেখানে ২০২৫-এ দলের ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, এই বৈঠকে ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ হবে। যেমন দু’বছর আগে উদয়পুরের চিন্তন শিবিরে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

এই বেলগাভিতেই ঠিক ১০০ বছর আগে, ১৯২৪-এ মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসের অধিবেশন বসেছিল। মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসের একমাত্র অধিবেশন। ১৯২৪-এর ডিসেম্বর থেকে ১৯২৫-এর এপ্রিল পর্যন্ত কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন গান্ধী। বেলগাভি অধিবেশনে তিনি অহিংস আন্দোলন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, স্বরাজ নিয়ে নিজের ভাবনা তুলে ধরেছিলেন। সে সময় তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দু, মুসলমানের মধ্যে ঐক্যের অভাব নিয়ে বিরক্ত। বেলগাভি অধিবেশনের আগে এই হিন্দু-মুসলমান দূরত্ব মেটাতে ২১ দিন অনশন করেছিলেন গান্ধী।

কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, এখন দেশে একই রকম পরিস্থিতি। তাই প্রতিটি রাজ্যকে গান্ধীর সভাপতিত্বে কংগ্রেস অধিবেশনের শতবর্ষ পালন করতে বলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা অবশ্য কী ভাবে এই কর্মসূচি হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। কারণ বিস্তারিত কিছুই তাঁদের বলা হয়নি। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ব্রিটিশদের মতো বিজেপিও হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের রাজনীতি করছে। নতুন করে বিভিন্ন মসজিদের নীচে মন্দির রয়েছে বলে মন্দির-মসজিদ বিবাদ খুঁচিয়ে তুলছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার রাস্তা খুঁজতে বর্ধিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে প্রায় ২০০ জন নেতা যোগ দেবেন। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘নব সত্যাগ্রহ বৈঠক’। গান্ধীর মতাদর্শের সঙ্গে বি আর অম্বেডকর সম্পর্কে অমিত শাহের ‘অবমাননাকর মন্তব্য’ তুলে ধরতে বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে ‘জয় বাপু, জয় ভীম, জয় সংবিধান’ জনসভা হবে। বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে দু’টি প্রস্তাব পাশকরা হবে।

আরএসএসের প্রধান মোহন ভাগবত নতুন করে মন্দির-মসজিদ বিতর্ক খুঁচিয়ে তোলা নিয়ে সম্প্রতি আপত্তি তুলেছেন। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, বিজেপি-আরএসএসের দ্বিচারিতার কোনও সীমা নেই। মোদী সংসদের সিঁড়িতে, সংবিধানে মাথা ঠেকান। আসলে নতুন সংসদ, নতুন সংবিধান করতে চান। কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল বলেন, “ভাগবত মিষ্টি মিষ্টি কথা বলছেন। বিজেপি কাজের বেলায় ঠিক উল্টোটা করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্সে গিয়ে জার্মানিতে বড়দিনের হামলা নিয়ে চিন্তাপ্রকাশ করছেন। মণিপুরে খ্রিস্টানদের উপরে হামলা নিয়ে তিনি চুপ!” কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, “মোদী আগে লালকৃষ্ণ আডবাণীর সামনে নত হতেন। এখন আডবাণী অসুস্থ, অথচ বিজেপি নেতারা প্রতাপ ষড়ঙ্গীকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন! আগে অটলবিহারী বাজপেয়ী বিজেপির মুখোশ ছিলেন। লালকৃষ্ণ আডবাণী ছিলেন গুদামে। পরে আডবাণী সামনে এসে মিষ্টি কথা বলতেন, গুদামে লুকিয়ে রাখা হত নরেন্দ্র মোদীকে। এখন মিষ্টি কথা বলার জন্য বিজেপি মোদী, ভাগবতকে সামনে এগিয়ে দেয়। যোগী আদিত্যনাথকে পিছনে লুকিয়ে রাখে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy