Advertisement
E-Paper

চিতাভস্ম বিসর্জন, অন্ত্যেষ্টি ঘিরে তরজা রবিবারও

গত কাল নিগমবোধে মনমোহনের শেষকৃত্যের পরে আজ তাঁর ভস্ম সংগ্রহ করে শিখ প্রথা অনুযায়ী ‘মজনু কি টিলা’ গুরুদ্বার সংলগ্ন অষ্ট ঘাট থেকে তা যমুনা নদীতে বিসর্জন দেন পরিবারের লোকেরা।

নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৩
Share
Save

প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের শেষকৃত্য নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রইল রবিবারেও। শনিবার দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে মনমোহন সিংহের শেষকৃত্য হয়। রবিবার যমুনা নদীতে পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে শিখ প্রথা অনুযায়ী তাঁর ভস্ম বিসর্জন করা হয়। সেখানে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা ছিল না বলে রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেসের কেউ হাজির ছিলেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিংহ সিরসা। যদিও পাল্টা জবাবে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর পরিবারই জানিয়েছিল, ভস্ম বিসর্জন অনুষ্ঠান একেবারে ব্যক্তিগত স্তরে করার পক্ষপাতী তাঁরা। সেখানে কোনও রাজনৈতিক নেতার উপস্থিতি চায়নি পরিবার। পাশাপাশি কংগ্রেস নেতৃত্ব মনমোহনের শেষকৃত্য কেন নিগমবোধ ঘাটে হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে ‘সস্তার রাজনীতি’ বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। আজ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মনমোহনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে
সমবেদনা জানান।

গত কাল নিগমবোধে মনমোহনের শেষকৃত্যের পরে আজ তাঁর ভস্ম সংগ্রহ করে শিখ প্রথা অনুযায়ী ‘মজনু কি টিলা’ গুরুদ্বার সংলগ্ন অষ্ট ঘাট থেকে তা যমুনা নদীতে বিসর্জন দেন পরিবারের লোকেরা। স্ত্রী গুরুশরণ কৌর ছাড়াও ভস্ম বিসর্জনে মনমোহনের তিন কন্যা, পরিবারের সদস্য ও শিখ সমাজের লোকেরাই উপস্থিত ছিলেন। আজকের ভস্ম বিসর্জনে কংগ্রেসের ছোট-বড় কোনও নেতার উপস্থিতি না থাকা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা মনজিন্দর সিরসা। জবাবে কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, মনমোহনের পরিবার থেকে আবেদন করে বলা হয়েছিল যে, ভস্ম বিসর্জন অনুষ্ঠান একেবারে ব্যক্তিগত স্তরে করার পক্ষপাতী পরিবার। তাতে কোনও রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপস্থিতি হোক, তা পরিবার চায় না। পরিবারের ইচ্ছাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে
আজকের অনুষ্ঠানে দলের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

এ দিকে শেষকৃত্যের সময়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ও মনমোহনের পরিবারকে অব্যাবস্থা ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে পড়তে হয়েছিল বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুললেও তা মানতে রাজি নন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বক্তব্য, উল্টে শেষকৃত্যের সময়ে সনিয়া গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার জন্য প্রটোকল শিথিল করা হয়েছিল। কারণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের সময়ে মৃতদেহে পুষ্পস্তবক দেওয়ার অনুমতি পান মৃতের পরিবার ও পরিবারের উল্লিখিত ব্যক্তিরা। বিজেপির দাবি, পুষ্পস্তবক দেওয়ার প্রশ্নে প্রাথমিক যে তালিকা প্রটোকল অফিসারের কাছে জমা পড়ে, তাতে সনিয়া-প্রিয়ঙ্কার নাম ছিল না। তা ছাড়া সনিয়া-প্রিয়ঙ্কার দূরে বসা, মনমোহনের নাতিদের শেষকৃত্যের সময়ে ঠেলাঠেলির যে অভিযোগ উঠেছে তার জন্য দিল্লিতে হওয়া ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের অকাল বর্ষণকেই দায়ী করেছেন হরদীপ পুরী। তিনি বলেন, ‘‘গত একশো বছরে এমন বৃষ্টি হয়নি দিল্লিতে। তার জন্য কিছু সমস্যা হতে পারে।’’

মনমোহনের জন্য স্মৃতিসৌধের জমিতে কেন শেষকৃত্য হল না, তা নিয়ে সরকারের তরফে সরাসরি কিছু জানানো না হলেও বিজেপি সূত্রের খবর, নিগমবোধ ঘাট শ্মশানেই যে শেষকৃত্য হবে, তা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল কেন্দ্র সরকার। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কংগ্রেস নেতৃত্বের ওই দাবি রাখা না গেলেও একতা স্থলে মনমোহন সিংহের স্মৃতি সৌধ গড়ে তোলার প্রশ্নে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে যে দাবি করেছিলেন, তা মেনে নিয়েছে সরকার। পুরী বলেন, ‘‘একতা স্থলের যা আয়তন, তাতে ন’জন ব্যক্তির স্মৃতি সৌধ থাকা সম্ভব। ইতিমধ্যেই সেখানে সাত জন প্রাক্তন রাষ্ট্রনেতার স্মৃতিসৌধ রয়েছে। দু’টি স্থান খালি ছিল। কংগ্রেসের দাবি মতো, তার মধ্যে একটি স্থান মননোহনের সিংহের জন্য আলাদা করে সংরক্ষিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দাবি মানা সত্ত্বেও এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা সস্তার রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dr. manmohan singh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}