শুধু ‘লুক ইস্ট’ (পুবে তাকাও) নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার ক্ষেত্রে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির কথা বলেন। সেই আসিয়ান গোষ্ঠীর অনেক দেশই এখন ‘চিনের বি-টিম’-এ পরিণত হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল মন্তব্য করেছেন। কংগ্রেস একে ‘কূটনৈতিক বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়ে দাবি তুলেছে, বাণিজ্যমন্ত্রী আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য মাথা নত না করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা করুন। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে সব দেশকে বাণিজ্যমন্ত্রী চিনের বি-টিম বলছেন, তাদেরই অন্যতম ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি চলতি বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন।
পীযূষ ব্রিটেনে একটি সম্মেলনে যুক্তি দিয়েছেন, আগের সরকার ‘ভারতের প্রতিযোগী’ দেশগুলির সঙ্গেই বাণিজ্য চুক্তিতে জোর দিয়েছিল। ইউপিএ জমানায় ২০১০-এর আসিয়ান-ভারত বাণিজ্য চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে পীযূষের যুক্তি, ‘‘ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওসের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করাটা ভুল। কারণ আমি আমার প্রতিযোগীদের জন্য বাজার খুলে দিচ্ছি। এই দেশগুলি চিনের বি-টিম হয়ে গিয়েছে। চিন এই দেশগুলির মাধ্যমে ভারতে পণ্য পাঠাচ্ছে।’’ বাণিজ্য মন্ত্রকের যুক্তি, ভারত এখন বাণিজ্য চুক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করছে—উন্নত দেশ, খনিজ-সমৃদ্ধ দেশ, উন্নয়নশীল দেশ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র। সেই অনুযায়ী রণনীতি তৈরি হচ্ছে। ইউপিএ জমানার বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মার অভিযোগ, গয়াল দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে আসিয়ান গোষ্ঠীর দেশগুলিকে অপমান করেছেন। তিনি জানেন না, ভারতের ১১ শতাংশ বাণিজ্য আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গেই। ভারতের রফতানির ১১ শতাংশ এই দেশগুলিতে যায়। ভারতে বিদেশি লগ্নির ১৮ শতাংশ এই দেশগুলি থেকে আসে। তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের কটাক্ষ, মোদী সরকারের এই ভুল কূটনীতির জন্যই গোটা বিশ্বে ভারত একা হয়ে পড়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)