‘‘বাবুজি টিকা লে লি। কোই দিক্কত নেইখে বা।”
এমসের নিউ ওপিডি কেন্দ্রের আটতলার টিকাকেন্দ্র থেকে নীচে নেমে এসে তিরিশ সেকেন্ডের কথোপকথন শেষ করে রীতিমতো বিজয়ীর হাসি বিহারের মুঙ্গের জেলার টিঙ্কু কুমারের। এমসের বেসরকারি ওই নিরাপত্তাকর্মীকে প্রশ্ন করলাম, কাকে ফোন করলেন বাবাকে? হেসে টিঙ্কু বলেন, ‘‘না শ্বশুরমশাইকে। আসলে আমার শ্বশুর গ্রামের ডাক্তার। গত কয়েক দিন ধরে প্রতিষেধক নেওয়া নিয়ে অনেকে ভয় দেখাচ্ছিল। তাই শ্বশুরমশাইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম প্রতিষেধক নেব কি না? তিনি আশ্বাস দিয়ে বললেন, ভয়ের কিছু নেই। নিয়ে নাও। তাই টিকা নিয়েই প্রথমে ওঁকেই ফোন করলাম।’’
টিঙ্কু একা নন। এমসের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী ছাড়াও অন্তত জনা দশেক নিরাপত্তাকর্মীকে আজ টিকা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে টিঙ্কুর নম্বর ছিল ৩০-এ। দু’দিন আগে তাঁকে জানানো হয়, প্রথম দিন টিকা পাবেন তিনি। সেই মতো মানসিক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। আজ ০.৫ মিলিলিটার কোভ্যাক্সিন প্রয়োগ করা হয়েছে তাঁর শরীরে। বলা হয়েছে, ঠিক এক মাস পরে আবার দ্বিতীয় ডোজ় নিতে হবে। কিন্তু গণটিকাকরণ অভিযানে কোভ্যাক্সিন প্রতিষেধকের ব্যবহার ঘিরে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তা ছুঁয়ে গিয়েছেন টিঙ্কু ও তাঁর স্ত্রী-কেও। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন-এই দুইয়ের গুণগত পার্থক্য রয়েছে কি-না সেই বিতর্কে না ঢুকলেও, প্রতিষেধক নিলে ক্ষতি হতে পারে, সেই আশঙ্কা ছুঁয়ে গিয়েছিল টিঙ্কুর স্ত্রী-কেও। বছর তিনেক এমসের নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্ব থাকা টিঙ্কুর কথায়, ‘‘আমি তো এমসে কাজ করি। তাই ভয় ছিল না। জানি কিছু হলে চিকিৎসকেরা ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু আমার স্ত্রী কিছুটা ঘাবড়ে যায়। তাই বাবার শরণাপন্ন হয় মেয়ে।”