ফাইজ়ারের বক্তব্য, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ প্রমাণিত। ছবি: সংগৃহীত।
আগে বরাত। পরে ছাড়পত্র। ভারতের কাছে এমনই আশা করছে করোনার টিকার অন্যতম উৎপাদক সংস্থা ফাইজ়ার। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ই-মেলে এই কথা জানিয়েছে তারা। সংস্থাটি চায়, ভারত সরকার ফাইজ়ারের তৈরি করোনার টিকাকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়ার আগে জানিয়ে দিক, এই টিকা তারা কিনবে। তার পরে বাকি পদ্ধতিগত কাজকর্ম এগোবে।
ফাইজ়ার ও বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি টিকা ইতিমধ্যেই দেওয়া শুরু হয়েছে ব্রিটেন, আমেরিকা-সহ কিছু দেশে। তারাই প্রথম সংস্থা, যারা ভারতে জরুরি ভিত্তিতে নিজেদের টিকা প্রয়োগের ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরে সেই আবেদন জানানোর পরে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও)-এর সঙ্গে বৈঠকে হাজির হননি ফাইজ়ার কর্তারা। অথচ সংস্থাটির আর্জি ছিল, এ দেশের জনসংখ্যার একটি ছোট গোষ্ঠীর মধ্যেই পরীক্ষা করে তাদের টিকার সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখে নেওয়া হোক। সেই প্রস্তাবে সায় দেননি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ফাইজ়ারের বক্তব্য, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ প্রমাণিত। সুরক্ষা নিয়েও তেমন গুরুতর কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তার ভিত্তিতেই ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছাড়পত্র পেয়েছে এই টিকা। ভারতে এই টিকার পরীক্ষা-সহ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল ফাইজ়ারকে। উত্তরে তারা বলেছে, ‘‘আমাদের তথ্যের ভিত্তিতেই বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ছাড়পত্র দিয়েছে। কোনও সরকারের চাহিদা অনুযায়ী জোগানে আমরা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। তাই আগে আমরা চাইছি, কত টিকা লাগবে সেটা সরকার জানাক। সেই মতো আমরা ছাড়পত্রের বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাব, যেমন বিশ্বের অন্যত্র করেছি।’’
এ দেশে যে দু’টি টিকা এখন দেওয়া হচ্ছে, তাদের মধ্যে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। তা সত্ত্বেও ওই টিকার ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে যথেষ্ট। অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শেষ হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ছাড়পত্র পেয়েছে। কাজেই ফাইজ়ারের এই দাবিতে ভারত কতটা সায় দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। তা ছাড়া ফাইজ়ারের টিকা সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন। গোড়াতেই ভারতের বিশেষজ্ঞেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এত কম তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণের কোল্ড চেন পরিকাঠামো সারা দেশে গড়ে তোলা দুঃসাধ্য। সেই তুলনায় কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন সহজেই সংরক্ষণ করা সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy