ছবি: পিটিআই।
হটস্পট ও সংক্রমিত এলাকাগুলিতে করোনা রোগী খুঁজতে ভারতে কর্মরত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পোলিয়ো দলকে মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কাল দেশের ১৭০ জেলাকে হটস্পট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। হটস্পট ছাড়াও রোগী মিলেছে অতিরিক্ত আরও ২০৭ জেলা থেকে। আজ ওই সব জেলা থেকে নতুন করে ১৩২০ জন ব্যক্তির সংক্রমণের তথ্য সামনে এসেছে। যার ফলে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২,৭৫৯। তার সঙ্গে গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৪৩ জন মারা যাওয়ায় দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৪২০। ভারতের বাইরে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের মধ্যে ২৫ জন করোনায় মারা গিয়েছেন। ৫৩টি দেশে করোনা আক্রান্ত ভারতীয়ের সংখ্যা ৩৩৩৬, সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে।
গত কালই করোনা সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। বৈঠকে তিনি করোনা সংক্রমণ রোখার প্রশ্নে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পোলিয়ো দলের সাহায্য চান। রাজি হয়েছে হু। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, অতীতে পোলিয়ো অভিযানের মডেলে করোনা সংক্রমিত রোগীর খোঁজ করা হবে। যে ভাবে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করে পোলিয়ো অভিযান সফল করেছিল ভারত, এ ক্ষেত্রেও সে ভাবে একেবারে তৃণমূল স্তরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোই বেশি চিন্তায় রেখেছে প্রশাসনকে। গুজরাতের সুরতে ঘনবসতি এলাকাগুলিতে আজ মাঝরাত থেকে কার্ফু জারি করা হচ্ছে। মুম্বইয়ের ধারাভি এলাকা থেকে আরও ২৬টি নতুন সংক্রমণের খবর এসেছে।
তবে কিছুটা আশার আলো দেখিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক এ-ও জানিয়েছে, দেশের ৩২৫টি জেলা বর্তমানে করোনা সংক্রমণের বাইরে। গত দু’সপ্তাহে ১৭টি রাজ্যের ২৫টি সংক্রমিত জেলায় (যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলাও রয়েছে) নতুন কোনও আক্রান্তের খবর নেই। প্রায় এক মাস ব্যবধানের পর ওই জেলাগুলিতে টীকাকরণ, যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার মতো রুটিন বিষয়গুলি ফের শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রাজ্যগুলিকে একটি চিঠিও দিয়েছে কেন্দ্র। করোনার ধাক্কায় অন্য যে সব কঠিন রোগের চিকিৎসা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল, সে ব্যাপারে কিছু ছাড় ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ রোগীর চিকিৎসা, কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীদের ডায়ালিসিসে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, দেশের বড় সংখ্যক মানুষ কিডনি, হৃদ্যন্ত্র বা ক্যানসারের মতো রোগে ভুগছেন। নিয়মিত চিকিৎসায় ছেদ পড়লে রোগ আরও খারাপ পর্যায়ে চলে যেতে পারে। সেই কারণে এ ধরনের রোগের চিকিৎসায় ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষে সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ওই ছাড় যাদের একান্তই প্রয়োজন, তাদের জন্যই দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। গত ২৮ দিনে পুদুচেরির মাহে এলাকায় কোনও নতুন করোনা রোগীর খোঁজ না পাওয়ায় ওই এলাকাটিকে সংক্রমণমুক্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: করোনার হটস্পট কলকাতা, কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন-পুরসভা?
আরও পড়ুন: কোভিড পরীক্ষায় আরও আগ্রাসী রাজ্য, এল নতুন নির্দেশিকা
করোনার কারণে বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। তার মোকাবিলায় কিছু বিশেষ পদক্ষেপের কথাও ভাবছে মন্ত্রক। আগামী দিনে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে যে সব সংস্থার তরফে ওষুধ কারখানা তৈরির প্রস্তাব পরিবেশগত কারণে আটকে আছে, তাদের এককালীন ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কারখানায় পিপিই তৈরির কাজ হচ্ছে। করোনা চিকিৎসায় প্লাজমা এনরিচমেন্ট পদ্ধতির ক্লিনিকাল মহড়াও তিন-চার দিনের মধ্যে শুরু করা যাবে বলে জানান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy