Advertisement
E-Paper

বাড়ল পরীক্ষা, কমল সংক্রমণ হার, ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ নতুন সংক্রমণ

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৩৬ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে এখনও অবধি সর্বোচ্চ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২০ ১০:২৭
এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের থেকে ভারতের এগিয়ে থাকার পরিসংখ্যান আজও অব্যাহত। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের থেকে ভারতের এগিয়ে থাকার পরিসংখ্যান আজও অব্যাহত। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সপ্তাহ খানেক ধরে দেশে দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৫৫-৬০ হাজারে আবদ্ধ থাকা আশা জাগাচ্ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকেই তা বেড়ে প্রায় ৭০ হাজারের কাছাকাছিতে পৌঁছে গিয়েছে। আজও সেই বৃদ্ধি এখনও অবধি সর্বোচ্চ। সঙ্গে দেশে করোনার জেরে মৃত্যুও সাড়ে ৫৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবুও এর মধ্যেই স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থ হওয়ার পরিসংখ্যান। দেশ জুড়ে পরীক্ষা বৃদ্ধিও যথেষ্ট ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। সঙ্গে সংক্রমণ হার কমে যাওয়া কোভিড পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৯ হাজার ৮৭৮ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। ওই সময়ের মধ্যে, আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৭ হাজার ৫৬০ ও ৬০ হাজার ৩৫৫ জন। অর্থাৎ এক দিনে আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের থেকে ভারতের এগিয়ে থাকার পরিসংখ্যান আজও অব্যাহত। প্রায় ৭০ হাজার নতুন সংক্রমণের জেরে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ২৯ লক্ষ ৭৫ হাজার ৭০১ জন। সেখানে বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫৬ লক্ষ ২১ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৫ লক্ষ ৩২ হাজার।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত এক সপ্তাহ ধরে এই হার রয়েছে নয় শতাংশের কম। যা বেশ স্বস্তিদায়ক। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার কমে হয়েছে ৬.৮৩ শতাংশ। অগস্টের শুরু থেকেই দেশে করোনা পরীক্ষাও অনেক বেশি সংখ্যায় হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে ১০ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৩৬ জনের। যা করোনাকালের মধ্যে এখনও অবধি সর্বোচ্চ।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থ হয়ে উঠছেন। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত মোট ২২ লক্ষ ২২ হাজার ৫৭৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৭৪.৬৯ শতাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৩ হাজার ৬৩১ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটেনের মতো দেশকে পিছনে ফেলে, মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও দেশে মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৯৪৫ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৫৫ হাজার ৭৯৪ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ২১ হাজার ৬৯৮ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত আজ ৬ হাজার ৩৪০ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ২৭০ জন। কর্নাটকেও মৃতের সংখ্যা দিল্লির থেকেও বেশি (৪,৫২২)। অন্ধ্রপ্রদেশ (৩,০৯২), গুজরাত (২,৮৬৭), উত্তরপ্রদেশ (২,৭৯৭), পশ্চিমবঙ্গ (২,৬৮৯) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও মোট মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে পঞ্জাব, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহারে, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ়, গোয়া-র মতো রাজ্যগুলি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকেই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৬ লক্ষ ৫৭ হাজার ৪৫০ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ ৬৭ হাজার। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ পার করে রোজ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে সংখ্যাটা আ়ড়াই লক্ষ পার করেছে। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১,৭৭,২৩৯) ও দিল্লি (১,৫৮,৬০৪)। যদিও জুলাই থেকেই বেশ লাগাম পড়েছে রাজধানীর সংক্রমণ বৃদ্ধিতে। পশ্চিমবঙ্গ (১,৩২,৩৬৪), বিহার (১,১৭,৪১৩) ও তেলঙ্গানাতে (১,০১,৮৬৫) মোট আক্রান্ত এক লক্ষ পার করে বাড়ছে।

অসম, গুজরাতে মোট আক্রান্ত ৮০ হাজার পেরিয়েছে। তার পর রয়েছে ওড়িশা, রাজস্থান। কেরল, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার পেরিয়েছে। পঞ্জাব ও জম্ম ও কাশ্মীরে মোট আক্রান্ত ৩০ হাজারের ঘরে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া। ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক গড়ে তিন হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ২৪৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৬৮৯ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

COVID-19 Coronavirus Coronavirus in India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy