চলতি মাসের শেষেই সরকারের জন্মদিন। তাঁরা কেমন ‘দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন’ গত চার বছর ধরে দিয়েছেন এবং আগামী দিনেও দেবেন, তা নিয়ে বিস্তর ঢাকঢোল পেটানোর প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীরা। কিন্তু খোদ সরকারের হিসেবই যে বলছে, মোদীর ‘ডাকবাক্সে’ দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়ছে নিরন্তর। বিরোধীদের দাবি, সব ধরনের অভিযোগ মেলালে মনমোহন সিংহের জমানার থেকে মোদী জমানায় দুর্নীতির বহর বেড়েছে অন্তত আট থেকে দশ গুণ!
সরকারিতন্ত্রে যে কোনও ধরনের অভিযোগই সরকারকে সরাসরি জানাতে পারে আমজনতা। ‘পাবলিক গ্রিভান্স’ নামে এই সংক্রান্ত একটি দফতর আছে এবং সেটি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে। অ্যাপের মাধ্যমে মোবাইল থেকেও যে কেউ সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মোদী দাবি করেছেন যে, তিনি দুর্নীতিমুক্ত সরকার দিতে পেরেছেন। কিন্তু তাঁর সরকারের হিসেব বলছে, মনমোহন জমানার তুলনায় মোদী-যুগে অভিযোগের বহর বহুগুণ বেড়েছে। আর তার বড় অংশই দুর্নীতি নিয়ে।
দফতরের সমীক্ষা বলছে, রান্নার গ্যাসে কালোবাজারি থেকে স্কুলে ভর্তি, পাসপোর্ট পাওয়া থেকে নগরোন্নয়ন দফতরের অফিসারদের ঘুষ খাওয়া— হাজারো দুর্নীতির অভিযোগ আসছেই। বাদ যাচ্ছে না প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র থেকে বিচারব্যবস্থাও। যদিও সরকারের দাবি, অভিযোগ আগেও আসত। যত অভিযোগ আসে, সেগুলির দ্রুত সমাধানের চেষ্টা হয়।
প্রশ্ন হল, অভিযোগের পরিমাণ বাড়ছে কেন? প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘এটি ঠিক, আগের সরকারের থেকে অভিযোগ আসার পরিমাণ আরও বেড়ে গিয়েছে। ২০১৪ সালে প্রতি বছরে গড়ে ২ লক্ষের মতো অভিযোগ আসত। এখন বছরে ১৬ লক্ষ আসে। এর মানে এই নয়, মোদী সরকারের উপর মানুষের অসন্তোষ বাড়ছে। বরং আমজনতা মনে করছে, এই প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করলে তার সমাধান হবে। প্রত্যাশা বেড়েছে বলেই অভিযোগের বহর বেড়েছে।’’
এই দাবি উড়িয়ে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসন্তোষ যে বাড়ছে, তা তো স্পষ্ট। গত লোকসভা ভোটে মোদী যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সবই মিথ্যা। তিনি মিথ্যা বলে মানুষকে বোকা বানিয়েছিলেন। আমজনতা সেটি এখন বুঝতে পারছে। চলতি মাসে সরকারের আর জন্মদিনের উৎসব পালন করার দরকার নেই। বরং মানুষকে বোকা বানানোর জন্য ‘প্রায়শ্চিত্ত দিবস’ পালন করুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy