Advertisement
E-Paper

অনামিকা রায়ের মৃত্যুতে চিকিত্সকদের গাফিলতি মানল কাউন্সিল, শাস্তির সুপারিশ

শান্তিনিকেতনের মেয়ে, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ অনামিকা রায় ২০০৫ সালে গুয়াহাটি এসেছিলেন কার্বি আংলং ও কামরূপের কার্বিদের যোগাযোগের দেশীয় মাধ্যমের উপরে গবেষণার উদ্দেশে।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ১৬:৫১
পরিবারের সঙ্গে অনামিকা। নিজস্ব চিত্র।

পরিবারের সঙ্গে অনামিকা। নিজস্ব চিত্র।

প্রায় দেড় বছর লড়াইয়ের পরে নৈতিক জয়। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক অনামিকা রায়ের চিকিতসায় গাফিলতির অভিযোগ মেনে নিল দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিশেষজ্ঞ কমিটি। দুই চিকিতসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করল তারা।

আরও পড়ুন- ‘ভূত’-এর নির্দেশ, মেয়ের কান কাটলেন বাবা

শান্তিনিকেতনের মেয়ে, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ অনামিকা রায় ২০০৫ সালে গুয়াহাটি এসেছিলেন কার্বি আংলং ও কামরূপের কার্বিদের যোগাযোগের দেশীয় মাধ্যমের উপরে গবেষণার উদ্দেশে। ডক্টরেট শেষ হওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গে না ফিরে গুয়াহাটির কটন কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। পরে যোগ দেন গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একের পর এক বই, প্রবন্ধ লেখেন অনামিকাদেবী। অসমীয়া সাহিত্য বাংলায় অনুবাদও চলছিল সমানতালে। বিয়ে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম বিষয়ের অধ্যাপক অঙ্কুরণ দত্তর সঙ্গে।

২০১৫ সালের জুলাই মাসে গলব্লাডারে অস্ত্রোপচারের জন্য দিল্লির নবজীবন হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পরে ১৯ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়। সাধারণ অস্ত্রোপচারে স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনা মানতে না পেরে লড়াই শুরু হয় অঙ্কুরণবাবুর। হাসপাতালের দুই চিকিতসক চন্দন ডেকা, অভিজিত খাউন্ডের বিরুদ্ধে চিকিতসায় গাফিলতির মামলা করেন তিনি। চিঠি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের পরে দিল্লি মেডিক্যাল কাউন্সিল ছয় বিশেষজ্ঞের একটি কমিটি গড়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

আরও পড়ুন- দশ হাজারি স্বপ্ন দেখেন ৮১ বছরের স্টার্টার দাদা

দফায়-দফায় শুনানির পরে সম্প্রতি কমিটি তার রায় দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দুই চিকিতক রোগিনীর শ্বাসকষ্টের কথা জেনেও তাতে পাত্তা দেননি, গলব্লাডার অস্ত্রোপচারের আগে আলট্রাসাউন্ড করানো-সহ বিভিন্ন নিয়মিত পদক্ষেপ করেননি, অ্যানাস্থেটিক চেক আপের ব্যবস্থা ছিল না, সময়মতো রোগিনীকে কার্ডয়াক কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়নি এবং রোগিনীর অটপ্সিতেও ঢিলেমি করা হয়েছে। কাউন্সিলকে ওই দুই চিকিতসকের নাম মেডিক্যাল রেজিস্ট্রার থেকে ১৫ দিনের জন্য সরিয়ে দেওয়া ও স্বাস্থ্য দফতরকে ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি।

ইতিমধ্যে স্ত্রীর নামে ট্রাস্ট গড়ে অঙ্কুরণবাবু চিকিতসা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমেছেন। লড়াই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কলকাতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে। কমিটির রিপোর্ট হাতে পেয়ে তিনি বলেন, “আমার অভিযোগ যে এতদিনে প্রমাণিত হল- তাতে খুশি। কিন্তু শাস্তির পরিমাণ খুবই কম হল। সাধারণ মানুষ বড় ডাক্তার বা নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান। চিকিতকসদের আমরা ভগবানের মতোই বিশ্বাস করি। কিন্তু সেই সুযোগ নিয়ে কতরকম অন্যায় চলে- তা সামনে আসা দরকার।” অঙ্কুরণবাবুর মতে, দেশে প্রতি বছর ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ এমন বিভিন্ন ধরণের চিকিতসার গাফিলতি, নার্সিংহোমের দুর্নীতির শিকার হন। হাসপাতালের অবহেলা বা ডাক্তারদের গাফিলতিতে ৯৮ হাজার মানুষের প্রাণ যায়। হাজার টাকার স্টেন্ট নার্সিংহোমগুলি দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি করে। ভেন্টিলেশনের রাখার নামে মুমূর্ষু রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। সকলে রুখে না দাঁড়ালে এই জিনিস থামানো যাবে না।

Anamika Roy Medical Negligence Guwahati অনামিকা রায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy