Advertisement
E-Paper

বদলে যাওয়া শিশু ফিরে পেল দম্পতি

লেবার রুমে শীতল ঠাকুরকে বলা হয়েছিল, অভিনন্দন! আপনার ছেলে হয়েছে। দিনটা ছিল ২৬ মে। তবে শীতলের হাতে যে সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সে ছেলে নয়, মেয়ে। শিমলার একটি সরকারি হাসপাতালে মাস পাঁচেক আগে এ ভাবেই দুই নবজাতকের হাত বদল হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৫

লেবার রুমে শীতল ঠাকুরকে বলা হয়েছিল, অভিনন্দন! আপনার ছেলে হয়েছে। দিনটা ছিল ২৬ মে। তবে শীতলের হাতে যে সদ্যোজাতকে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সে ছেলে নয়, মেয়ে। শিমলার একটি সরকারি হাসপাতালে মাস পাঁচেক আগে এ ভাবেই দুই নবজাতকের হাত বদল হয়েছিল। অনিল-শীতলের ছেলেকে তুলে দেওয়া হয়েছিল অঞ্জনা ও জিতেন্দ্রর হাতে। আর তাঁদের মেয়েকে তুলে দেওয়া হয়েছিল শীতলের হাতে। অবশেষে আদালত ও পুলিশের হস্তক্ষেপে গত কাল দুই শিশু ফিরে পেয়েছে তাদের আসল বাবা-মাকে।

কী ভাবে ঘটল এই বিড়ম্বনা? কী ভাবেই বা সত্যিটা সামনে এল?

শীতল ও তাঁর স্বামী অনিল ঠাকুরের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। শীতল নিজেও নার্স। তাঁর সন্দেহ আরও জোরালো হয় যখন তিনি জানতে পারেন, তাঁর প্রসবের কয়েক মিনিট পরেই অঞ্জনা নামে এক মহিলার ছেলে হয়েছে। হাসপাতালে অভিযোগ জানানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন অবশ্য তাঁদের পাত্তাই দেননি।

অগত্যা পুলিশে অভিযোগ জানান শীতল-অনিল। ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা যায়, ওই কন্যা তাঁদের সন্তান নয়। এর পরে হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনিল-শীতল। ৩১ অগস্ট প্রধান বিচারপতি মনসুর আহমেদ মীর ও বিচারপতি সন্দীপ শর্মার বেঞ্চ রাজ্য পুলিশের প্রধান, শিমলা পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট ও স্বাস্থ্য সচিবকে একটি নোটিস পাঠায়। দু’সপ্তাহের মধ্যে পুলিশকে জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পর পুলিশের তত্ত্বাবধানে অনিল ও শীতলের আর এক বার ডিএনএ পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা হয় অঞ্জনা ও জিতেন্দ্র ঠাকুরেরও। আর তাতেই প্রমাণ হয়ে যায়, অনিল-শীতলের ছেলেকেই তুলে দেওয়া হয়েছিল অঞ্জনা-জিতেন্দ্রর হাতে। আর ওঁদের মেয়েকে এঁদের হাতে। এর পর আদালতের নির্দেশেই স্থির হয়, ২৬ অক্টোবর দুই দম্পতি পরস্পরকে শিশু হস্তান্তর করবেন।

শিশু অদল-বদলের এই পুরো ঘটনাকেই ‘আকস্মিক ও বিচ্ছিন্ন’ তকমা দিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার পুষ্পা দেবী নামে এক নার্স ও রূপা দেবী নামে এক ধাত্রীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রেও জানানো হয়েছে, এ রকম ঘটনা কী করে ঘটল, তারা তদন্ত করে দেখছে।

এখন দু’টি শিশু তাদের ‘আসল’ বাবা-মায়ের কাছে। তবে দুই দম্পতির কাছেই এই গোটা পর্ব একই সঙ্গে আনন্দ ও দুঃখের। মেয়ের মা অঞ্জনার কথায়, ‘‘আমার বারো বছরের ছেলে রয়েছে। আমার খুব ইচ্ছে ছিল, এ বার একটা মেয়ে হোক। তবে পাঁচ মাস ধরে যে ছেলেকে বড় করেছি, তাকে ফিরিয়ে দিতে খুব কষ্ট হয়েছে।’’ তিনি ছেলেটির নাম দিয়েছেন নিত্যাংশ। শুধু তাই নয়, নিত্যাংশের ‘আসল’ মা শীতলেরও চেখে জল। বললেন, ‘‘পাঁচ মাস

ধরে আমি কোলেপিঠে করে আনমোলকে (মেয়েকে এই নামই দিয়েছিলেন তিনি) মানুষ করেছি। ও কখন খায়, কখন, ঘুমোয়, কখন খেলা করে, সব কিছু মুখস্ত আমার!’’ তাঁর স্বামী অনিলও চোখের জল সামলে বললেন, ‘‘এর জন্যই আমি এই ক’মাস লড়েছি। তবে আজ আমি জিতলাম না হারলাম, তা বুঝতে পারছি না।’’

baby police parents
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy