শ্রীলঙ্কায় তাণ্ডব চালিয়ে ভারতের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দিটওয়া। উপকূলের দিকে যত এগিয়ে আসছে, ততই হাওয়ার গতিবেগ বাড়ছে। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণও। তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরী উপকূল হয়ে এই ঝড় এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। তবে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে তামিলনাড়ুতে ভারী বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃষ্টির জেরে তুতিকোরিন এবং তাঞ্জাভুরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, ময়িলাদুতুরাইয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। তার জেরে গ্রামীণ এলাকায় দুশোরও বেশে কাঁচাবাড়ি ভেঙে গিয়েছে। গবাদি পশু-সহ ১৫০ প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও ৫৭ হাজার হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে গত দু’দিনের বৃষ্টিতে। ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
দ্বীপরাষ্ট্রকে লন্ডভন্ড করে রবিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরী উপকূল দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাবে বলে মৌসম ভবন জানিয়েছে। কুড্ডালোর, নাগপট্টিনম, ময়িলাদুতুরাই, বিল্লুপুরম, চেঙ্গলপুট্টু-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)-সহ ২৮টিরও বেশি বিপর্যয় মোকাবিল দল মোতায়েন করা হয়েছে তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরিতে। ভারী বৃষ্টির কারণে বিমান পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনের গতিপথও পরিবর্তন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মৌসম ভবন এর আগে জানিয়ছিল, রবিবার সকালের মধ্যে তামিলনাড়ু-পুদুচেরী-দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে দিটওয়া। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আরও কাছে এগিয়ে আসার পর তার গতিবিধি নতুন করে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সকালে মৌসম ভবন নতুন বিবৃতিতে জানিয়েছে, দিটওয়া স্থলভাগে প্রবেশ করবে না। তা স্থলভাগের খুব কাছ দিয়ে সমুদ্র ধরেই এগিয়ে যাবে। তার পর সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে শ্রীলঙ্কায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দুশো ছুঁয়ে ফেলেছে। শ্রীলঙ্কার বিপর্যয় মোকাবিলা সেন্টারের তথ্য বলছে, রবিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১৯৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ২২৮ জন। সাড়ে ন’লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ঝড়ের তাণ্ডবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্ধুরাষ্ট্রের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ভারত। সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে ভারতের বায়ুসেনা।